মাদ্রাসায় ছেলেদের মধ্যে প্রথম আলফাজ, পড়াশোনার খরচের দায়িত্ব নিল ‌মুর্শিদাবাদ পুলিশ 

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১ জুন ২০২২, ১১:৩১ |  আপডেট  : ২১ এপ্রিল ২০২৪, ২২:৫৩

দারিদ্রতা ও একাধিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এ বছরের মাদ্রাসা বোর্ডের মাধ্যমিক পরীক্ষাতে ছেলেদের মধ্যে রাজ্যে প্রথম হয়েছে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার আছড়া গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ আলফাজ শেখ।তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৮৪০। 

আলফাজের স্বপ্ন বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে ভবিষ্যতে একজন ভাল ডাক্তার হওয়া এবং গ্রামাঞ্চলে গরিব মানুষদেরকে সেবা করা। তবে আর্থিক প্রতিবন্ধকতার কারণে আলফাজের পড়াশোনা যাতে বন্ধ না হয় তা সুনিশ্চিত করতে এবার এগিয়ে এল নবগ্রাম থানা পুলিশ প্রশাসন। 

মঙ্গলবার সন্ধেয় নবগ্রাম থানার ওসি অমিত ভকত, বিশিষ্ট সমাজসেবী আসিফ ইকবাল হাজির হন আলফাজের বাড়িতে। তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আলফাজ যতদূর পড়াশোনা করতে চায় তাতে সহযোগিতা করবেন। আলফাজের বাবা মহম্মদ আনিকুল ইসলাম পেশায় একজন মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষক। ছয় ভাই এবং এক বোনের মধ্যে আলফাজ চতুর্থ। আলফাজ যখন তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র ছিল, তখনই তাঁর বাবা তাঁকে সামশেরগঞ্জের সুলতানপুর আলিয়া সিনিয়র মাদ্রাসাতে ভর্তি করে দেন। যদিও প্রথম থেকেই আলফাজ রঘুনাথগঞ্জ থানার সরলপথ অ্যাকাডেমিতে আবাসিক ছাত্র হিসেবে পড়াশোনা করে এসেছে। কেবলমাত্র সুলতানপুরের ছাত্র হিসেবে সে বোর্ডের পরীক্ষা দিয়েছে। 

এবারের মাদ্রাসা পরীক্ষাতে আলফাজ বাংলাতে পেয়েছে ৯২, ইংরেজিতে ৮১, আরবিতে ৯৮ ,হাদিসে ৯৬, অঙ্কে ৯৯, ইতিহাসে ৮৮। এছাড়া  শিক্ষা, ভৌতবিজ্ঞান, জীবনবিজ্ঞান এবং ভূগোলে ৫০–এর মধ্যে তার প্রাপ্ত নম্বর যথাক্রমে ৪৫, ৫০, ৫০ এবং ৪৯।  

আলফাজ জানিয়েছে, ‘‌সরলপথ অ্যাকাডেমিতে নির্দিষ্ট রুটিন মেনে পড়াশোনা করতাম। আমার এই সাফল্যের পেছনে আমি তিন শিক্ষক–তহিদুল ইসলাম, মাজাহারুল ইসলাম এবং রেজাউল করিমের নাম বিশেষ করে উল্লেখ করতে চাই।'’‌ আলফাজ জানিয়েছে, ‘‌অবসর সময়ে সিনেমা বা টিভি দেখার সুযোগ আমার খুব একটা হয়নি। তবে সময়–সুযোগ পেলে আমি অ্যাকাডেমির আবাসিক বন্ধুদের সঙ্গে বিকেলে ফুটবল খেলতাম।’‌ 

নবগ্রাম থানার ওসি অমিত ভকত বলেন, ‘‌ছেলেটির সাফল্যে নবগ্রাম থানার ওসি হিসাবে আমি খুব গর্বিত। তাই আলফাজকে এবং তাঁর পরিবারকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তাঁর পড়াশোনাতে যে কোনওরকম অসুবিধা হলে আমি যতটা সম্ভব তাদের পাশে দাঁড়াবো।’‌

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত