মাদারীপুর খাদ্য বিভাগের ভবন ৩ বছরেও নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি  

  শফিক স্বপন, মাদারীপুর

প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২২, ১৯:১০ |  আপডেট  : ৯ মে ২০২৪, ০৩:৩৮

মাদারীপুর খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময় শেষ না হওয়াতে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদারের গাফলতি ও উদাসিনতায় কাজে ধীরগতি কারনে বছরের পর বছর গেলেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ। খাদ্য বিভাগের দাবী,বার বার তাগিদ দেয়ার পরও নির্ধারিত সময় কাজ শেষ করেনি। উল্টো তারা অতিরিক্ত নির্মাণ ব্যয় বাড়ানোর পায়তারা করছে। এতে করে ক্ষুব্ধ খাদ্য বিভাগ ও স্থানীয়রা।

সংশ্লিষ্ঠ একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়টি জড়াজির্ণ হওয়ার কারনে পুরান ভবন ভেঙ্গে ফেলে ‘সারাদেশে পুরাতন খাদ্য গুদাম ও আনুসাঙ্গিক সুবিধাদি মেরামত এবং নতুন অবকাঠামো নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নতুন ভবন নির্মান কাজ শুরু করে। এরপর থেকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়েটি শহরের একটি ভাড়া বাসায় তাদের কর্মকান্ড শুরু করে। প্রতি মাসে ভাড়া বাবদ প্রদান করতে হয় ৪০ হাজার টাকা।
সংশিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০১৯ সালে ১৪ নভেম্বর ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড, নারায়ণগঞ্জ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে খাদ্য বিভাগের প্রকল্প পরিচালকের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কাজ সমাপ্ত করনের তারিখ নির্ধারিত ২০২০ সালের ১৭ জুন। কাজটি চুক্তি মুল্য ছিলো দুই কোটি পঞ্চান্ন লক্ষ চৌত্রিশ হাজার একশ দুই টাকা। নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও কাজ শেষ হয়নি। উল্টো আরও নির্মাণ ব্যয় বাড়ানো পায়তারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়াতে বিপাকে পড়েছে মাদারীপুর খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারিরা। মাদারীপুর খাদ্য বিভাগের অফিসটি বর্তমানে ভাড়া বাসায় থাকায় খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারিরা স্বাচ্ছন্দে কাজ কর্ম করতে পারছেনা বলেও অভিযোগ। ভাড়া বাসায় অফিস পরিচালনা করায় সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা ভুর্তকি যাচ্ছে। এদিকে ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে খাদ্য বিভাগের নির্মাণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও এই কাজটি তমা কনষ্টাকশন এন্ড কোম্পানী লিমিটেড, ঢাকা নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান করছে বলে মাদারীপুর জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। জেলা খাদ্য বিভাগ গত ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে হচ্ছে মর্মে একটি একটি তাগিদপত্র প্রদান করা হয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। এতে উল্লেখ করা হয়, কাজের ধীরগতির কারনে প্রতি মাসে সরকারের ৪০হাজার টাকা অতিরিক্ত আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। প্রকল্প পরিচালক কার্যক্রম পরিদর্শনে এসে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন বলেও তাগিদ পত্রে উল্লেখ করা হয়।

এব্যাপারে উভয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি। এছাড়াও ঠিকাদারের স্থানীয় কোন প্রতিনিধিও নেই মাদারীপুরে।

মাদারীপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন জানান, বার বার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা নির্ধারিত সময় কাজ শেষ করেনি। একারনে আমরা তাগিদপত্রও দিয়েছি। নির্ধারিত সময় কাজ শেষ না হওয়াতে অফিস ভাড়া বাবদ সরকারের প্রতি মাসে ৪০ হাজার টাকা অতিরিক্ত প্রদান করতে হয়। ঠিকাদারের গাফলতির কারনে সরকারের এই অতিরিক্ত ক্ষতি বহন করতে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ভবন নির্মাণের ব্যয় বাড়ানো প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তবে জেলা খাদ্য বিভাগ সেই প্রস্তাবে সায় দেয়নি। তবে অহেতুক ব্যয় বাড়ানোর পায়তারা চালাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত