মাদারীপুরে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই এতিমখানা সংস্কার, অনিয়মের অভিযোগ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে

  এসআর শফিক স্বপন,মাদারীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:১১ |  আপডেট  : ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১১

মাদারীপুরে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই সরকারী এতিম খানা সংস্কার করেছে। এতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এতিমখানার সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই মাদারীপুর (এতিমখানা) শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক মো.সাইফুজ্জামান ও মাদারীপুর সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাইনুদ্দিন সরকারের যোগসাজশে নিজেরাই কাজ করছেন। নাম মাত্র কাজ দেখিয়ে বিল তুলে নেয়ার পায়তারা করছে বলে দাবী স্থানীয়দের। চাঁদপুরের লক্ষ্মি নারায়ন ভান্ডার নামে এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে কার্যাদেশ প্রদান করা হলেও কোন পত্রপত্রিকায় দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হয়নি। 

জানাগেছে,২০০৪ সালে মাদারীপুর শহরের খাগদি এলাকায় এতিম ও অনাথ শিশুদের জন্য একটি সরকারি শিশু পরিবার ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনের বয়স মাত্র ২০ বছর হলেও গত ৫ বছর ধরে প্রতি বছরই কয়েক লাখ টাকা সংস্কারের নামে অর্থ ব্যয় করা হয়। চলতি অর্থ বছরে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকায় সংস্কার ব্যয় ধরা হয়েছে। ইতিপূর্বে কাজ সম্পাদন দেখিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর বিল দাখিল করা হয়েছে। কাজ সম্পাদন দেখানো হলেও কি কি কাজ করা হয়েছে তার বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক মো.সাইফুজ্জামান ও মাদারীপুর সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাইনুদ্দিন। 

সংস্কার কাজ কতটুকু সম্পন্ন হয়েছে সেই বিষয় জানতে চাঁদপুরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লক্ষ্মি নারায়ন ভান্ডারের মালিক ভরত চন্দ্র ঘোষের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি চাঁদপুরে আছি। পরে জানাতে পারবো। তবে কাজ সম্পর্কে ঠিকাদার না জানালেও শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক মো.সাইফুজ্জামান ও মাদারীপুর সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.মাইনুদ্দিন সরকার দুইজনে বিল তোলার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর বিল জমা দিয়েছে। 

স্থানীয়দের দাবী ঠিকাদার নাম মাত্র। মুলত তদারকি না করে ঠিকাদারের হয়ে কাজ করেন শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক মো.সাইফুজ্জামান। আর অনিয়মের ভাগ পায় মাদারীপুর সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.মাইনুদ্দিন সরকার।

স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ মোল্লা বলেন, নাম মাত্র সংস্কার করে পুরোটাই লুটপাট করে।কোন কাজ হয় না। ঠিকাদারের বাড়ি চাঁদপুর। তিনি কখনও আসেন না। আমরা চাই বিষয়টি দুদক তদন্ত করুক।

মাদারীপুর সরকারি শিশু পরিবার সংস্কার ও মেরামত কমিটির সদস্য এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বাদল কৃত্তনীয়া জানান, কি কাজ হয়েছে আমি জানি না। বিষয়টি খোজ খবর নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

মাদারীপুর জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.মাইনুদ্দিনের দাবী,সঠিক নিয়মেই কাজ করা হয়েছে। কি কি কাজ করা হয়েছে সরেজমিন দেখানোর অনুরোধ করা হলে তিনি দেখাতে রাজি হননি। অভিযোগ অস্বীকার করে মাদারীপুর শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক মো.সাইফুজ্জামান বলেন, ঠিকাদার নিজেই কাজ করছে। কোন অনিয়মের সুযোগ নেই। পত্রিকায় কেন দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়নি এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রদানের দরকার নেই তাই দেয়া হয়নি। তবে ইলিয়াস মুন্সি ইরাদ নামে প্রথম শ্রেণির এক ঠিকাদার বলেন,সরকারি কাজ দরপত্র বিজ্ঞপ্তি ছাড়া প্রদানের সুযোগ নেই। যদি কেউ করে থাকে তাহলে ঘাপলা আছে।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত