মাদারীপুরে আদম দালালের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব শতাধিক যুবক

প্রকাশ: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:২৩ | আপডেট : ১১ জুন ২০২৫, ০৬:১২

মাদারীপুরের এক আদম দালালের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। মাদারীপুরের ৩০-৩৫টি গ্রামের শতাধিক যুবকের কাছ থেকে কয়েক কোটি নিয়ে উধাও হয়েছে খোকন চোকদার নামে এক আদম দালাল। এই ঘটনায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করার পাশাপাশি বার বার প্রশাসনের কাছে ধন্না দিয়ে টাকা পাচ্ছেন না ভুক্তভোগিরা।
অভিযোগ উঠেছে, একাধিক মামলা হলেও অদৃশ্য কারনেই ধরাছোঁয়ার বাইরে অভিযুক্ত খোকন। যদিও পুলিশ বলছে, প্রতারককে ধরতে চলছে অভিযান।
সরেজমিন জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার মাদ্রা গ্রামের মোতালেব খানের ছেলে আল আমিন খানের কাছ থেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য দালাল খোকন চোকদার ৭ লাখ টাকা নেন। একই গ্রামের রুবেল হাওলাদার ও ইমরান খানের কাছ থেকেও ৭ লাখ টাকা করে দেন। দুই মাসের মধ্যে বিদেশে নেয়ার কথা থাকলেও আড়াই বছরেও কেউই যেতে পারেননি বিদেশে। এতে তাদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা। শুধু আল আমিন,ইমরান, রুবেল নয়। এমন শতাধিক মানুষের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা নিয়ে উধাও খোকন চোকদার। স্থানীয়ভাবে একবার বিষয়টি নিয়ে শালিস মিমাংসায় বসা হয়েছিল। সেখানেই প্রতারণার শিকার শতাধিক যুবকের অভিযোগ করেছিল।
ভুক্তভোগী অভিযোগ, গবাদিপশু বিক্রি, জমি বন্ধকসহ সুদে এনে লাখ লাখ টাকা তুলে দেন খোকনের হাতে। বিশ্বাস অর্জন করাতে অসহায় মানুষদের বিভিন্ন ব্যাংকের দেখাত। অথচ খোকনের কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্টেই নেই টাকা। পাওনা টাকা ফেরত চাইলে টালবাহানা করে খোকন। একপর্যায়ে কোটি কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা এই প্রতারক। পরে আদালত ও প্রশাসনের দারস্থ হয় ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগীদের দাবী দেড় বছর আগে বিদেশে নেয়ার জন্য খোকন চোকদার ৭ লাখ টাকা নেয়। দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে পর্তুগাল নিয়ে দিবে, কিন্তু দেড় বছরেও সে বিদেশে নিতে পারিনি। এখন টাকা চাইলে সে বাড়ি থেকে পালিয়েছে।
আল-আমিন নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, বিদেশে নেয়নি, আর আমার পাওনা ৭ লাখ টাকাও ফেরত দেয়নি, ধারদেনা করে টাকা দিছি, এখন খুব সমস্যার মধ্যে আছি।
ভুক্তভোগী মাইনুল হোসাইন সুজন বলেন, আমি বিদেশে যাবার জন্য আমি খোকনচোকদারকে টাকা দেই। কিন্তু সে বিদেশ নিচ্ছে না। আমি দুই বছর যাবার ভুক্তভোগী। আমার অনেক স্বপ্ন ছিল, বিদেশে গিয়ে পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনবো, কিন্তু সেটা আর হচ্ছে না। খোকন দালালের মুখে ছিল মধু, আর অন্তরে বিষ। এই প্রতারকের কথায় আমরা একশোর বেশি মানুষ ফাঁদে পড়েছি। আমরা পাওনা টাকা ফেরত চাই, পাশাপাশি প্রতারক খোকনের বিচার চাই।
মাদারীপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম জানান, বিদেশে নেয়ার কথা বলে অসহায় মানুষের সাথে প্রতারনা করেছেন খোকন চোকদার। ভুক্তভোগীদের ভাষ্য মতে, কয়েক কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা খোকন। অভিযুক্তকে ধরতে চলছে অভিযান। শিগগিরই সে আইনের হাতে ধরা পড়বে।
এদিকে ঘটনা জানতে অভিযুক্ত খোকন চোকদারের বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুরে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। আর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ থাকায় তার কোন বক্তব্যই পাওয়া যায়নি।
সান
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত