মাদারীপুরের শিবচরে একই দিন ৩ জনকে সাপের দংশন

  শফিক স্বপন, মাদারীপুর

প্রকাশ: ৭ জুলাই ২০২৪, ১৭:২৬ |  আপডেট  : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৯

মাদারীপুরের শিবচরে একই দিন ৩ জনকে সাপে দংশন করেছে। এর মধ্যে ২জন শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে আর অপর একজনকে ঢাকায় প্রেরন করা হয়েছে। হাসপাতাল ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে জেলার শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের চর বাচামারা গ্রামের লোকমান খান (৫২) বাড়ির পার্শ্ববর্তী বাদাম ক্ষেতে রাখা একটির ঝাকার নিচ থেকে হাতে কাঁচি তুলছিল। 
এসময় একটি সাপ তার হাতে দংশন করে। সাথে সাথে পরিবারের লোকজন তাকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন যে তাকে বিষধর সাপে দংশন করেছে। চিকিৎসকরা তাকে এন্টিভেনম দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রোগীর স্বজনদের কাছে অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর চাইলে তারা স্বাক্ষর দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে। এ কারনে রোগীর স্বজনদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। অপরদিকে একই দিন দুপুরে একই উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের আলেপখার খাঁড়াকান্দি গ্রামের শাহাবুদ্দিন হাওলাদার (৪০) বাড়িতে নিজ খেড়ের পালা থেকে গরুর জন্য খেড় বের করছিল। এসময় তাকে একটি সাপে দংশন করে।

এসময় পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে দ্রুত শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। একই দিন সকালে উপজেলার সন্নাসীরচর ইউনিয়নের খাসচর বাচামারা গ্রামের মোসলেম কাজী (৭৫) বাড়ি সংলগ্ন খালের পানিতে পাট জাগ দিচ্ছিল। এসময় তাকে একটি সাপে দংশন করে। তার চিৎকারে তার ছেলেসহ পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সাপের দংশনে আহত লোকমান খানের ভাতিজা রাকিব বলেন, আমার চাচা বাদাম ক্ষেতে রাখা ঝাকার নিচ থেকে কাচি হাতে নেয়ার সময় তার বাম হাতে সাপে দংশন করে। আমরা তাকে শিবচর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা এন্টিভেনম দেয়ার আগে আমাদের বলে এন্টিভেনম দেয়ার পর বিষধর সাপের দংশন হলে রোগী সুস্থ্য হবে আর যদি বিষধর সাপ না হয় তাহলে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যেতে পারে। তখন আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে এনে তাকে ভর্তি করেছি। তার রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট এলে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আমার চাচা এখনো সুস্থ্য আছে। সাপের দংশনে আহত শাহাবুদ্দিন হাওলাদার বলেন, আমি খেড়ের পালা থেকে গরুর জন্য খেড় বের করছিলাম। এসময় কালো ও সাদা ছিটছিট রংয়ের একটি সাপ আমার পায়ে কামড় দেয়। আমি সাথে সাথে পরিবারের লোকদের নিয়ে হাসপাতালে এসে ভর্তি হই। এখন অনেকটা ভালো লাগছে। সাপের দংশনে আহত মোসলেম কাজীর এক স্বজন বলেন, তিনি পাট জাগ দিচ্ছিলেন। এসময় পানি থেকে তাকে একটি সাপে কামড় দেয়। পাশেই তার ছেলে কাজ করছিল। সাথে সাথে তার ছেলেসহ অন্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এখন সে অনেকটা ভালো আছে। শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা: ফারজানা সুলতানা বলেন, আজ সাপের দংশনে আহত তিনজন রোগী হাসপাতালে এসেছে। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি দুইজনকে বিষধর সাপে কাটেনি। তাই তাদের দুইজনকে এখনো এন্টিভেনম দেয়ার প্রয়োজন হয়নি। তবে তাদেরকে আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষনে রেখেছি। আর একজন রোগী আসার পর তাকে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর বিষধর সাপে কেটেছে বলে আমরা বুঝতে পেরেছি। পরে তাকে এন্টিভেনম দেয়ার আগে নিয়মানুযায়ী তার স্বজনদের কাছে অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর চাইলে তারা স্বাক্ষর দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে। পরে তাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা রোগীটিকে ঢাকায় রেফার্ড করি।

 

সান

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত