মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস
প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২২, ০৯:১১ | আপডেট : ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩০
আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস । ১৯৭১ সালের এই দিনে শুরু হয়েছিল আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ওই বছর ১৬ ডিসেম্বর আমরা দেখা পাই স্বাধীনতার । বহু কাক্সিক্ষত স্বাধীনতার সূর্য ধরা দেয় আমাদের হাতে। এজন্য আমাদের দিতে হয়েছে চরম মূল্য। ত্রিশ লাখ প্রাণ আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম ছিনিয়ে নিয়েছে হানাদার পাকিস্তানী বর্বর বাহিনী। লাখো মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগ মহিমান্বিত করেছে আমাদের মুক্তির যুদ্ধকে। সে কষ্টার্জিত স্বাধীনতার আজ একান্ন বছর পূর্ণ হলো। এ যে কত আনন্দের তা ভাষায় প্রকাশ অসমম্ভব। এই মহান দিনে আমরা সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শখ মুজিবুর রহমান এবং আমাদের দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামে বিভিন্ন সময়ে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালনকারী জাতীয় নেতৃবৃন্দক। আমরা শ্রদ্ধা জানাই সেই সব বীর শহীদদের প্রতি, যারা স্বাধীনতার জন্য অকাতরে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ বাণী দিয়েছেন। সংবাদপত্রগুলো বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে। বেতার ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলো প্রচার করছে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। দিনটি সরকারি ছুটির দিন।
একান্ন বছর অতিক্রান্ত হলেও এটা অস্বীকার করা যাবে না যে, স্বাধীনতার সুফল পুরোপুরিভাবে আজও দেশবাসীর দ্বারে পৌছে দেয়া সম্ভব হয়নি। নানা কারণে জনগণ স্বাধীনতার সুফল থেকে বি ত রয়েছে। এর দায় একক কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়। বিশেষত আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে যতটা সচেতন ও দেশাত্মবোধ সম্পন্ন হওয়া উচিত ছিল, দুঃখজনকভাবে আমরা তা হইনি। সংকীর্ণতা আমাদেরকে উদার হতে দেয়নি। তাই দলীয় বা গোষ্ঠি সংকীর্ণতার জালে আটকে আমাদের মানসিকতা দরিদ্র হয়ে আছে। যে কারণে আমরা দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেও জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার তাগিদ অনুভব করি না। জাতীয় স্বার্থকে যেদিন আমরা রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে স্থান দিতে পারব, সেদিন স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তোলার পথে আমরা একটি বড় পদক্ষেপ নিতে পারব।
তবে, দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, রাজনৈতিক বিভাজন আমাদের সে অগ্রগতির সামনে প্রধান বাঁধা হয়ে আছে। স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পরেও আমরা স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হই । একটি অংশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকার করে নিতে দ্বিধাগ্রস্ত। তারা এটা বোঝেনা যে, বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার না করার অর্থ স্বাধীন বাংলাদেশকে অস্বীকার করা। আমরা তাদের শুভবুদ্ধির উদয় কামনা করি।
একটি সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠন ছিল স্বাধীনতা যুৃদ্ধের লক্ষ্য। সে লক্ষ্য নানা কারণে আজো সর্বাংশে পূরণ হয়নি। রজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়নতা, বিভেদ, সহিংসতা, দুর্নীতি, আনিয়ম আমাদের এগিয়ে যাবার পথে বাঁধা হিসেবে কাজ করছে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব জাতীয় স্বার্থে সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত না করা পর্যন্ত আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে স্বাভাবিক ও সাবলীল গতিতে এগিয়ে যেতে পারব না।
আামরা আশা করবো, আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের বোধদয় হবে, তারা সংকীর্ণ তা পরিহার করে জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য পোষণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবেন।
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের এ শুভলগ্নে আমরা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাাই। কামনা করি সবার সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত