ভোটোত সগায় খোঁজ নেয়, শীতত কায়েও আইসেনা
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪৭ | আপডেট : ১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:৩৯
শীতের দাপটে কাহিল উত্তরের উপজেলা রংপুরের কাউনিয়া। তিস্তা ও মানাস এবং বুড়াইল নদী বেষ্টিত উপজেলাটিতে শীতে জনজীবন অস্বাভাবিক হয়ে পড়েছে। কনকনে শীতে কাঁপছে মানুষ। দিনে দেখা মিলছে না সূর্যের। ফলে খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছে বিপাকে। তীব্র ঠান্ডায় শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট সহ ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দরিদ্র অসহায় মানুষেরা শীত বস্ত্রের অভাবে চরম দূর্ভোগে পড়েছে।
সরেজমিনে তিস্তার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে গত ৫দিন ধরে সকাল থেকে কনকনে ঠান্ডার সাথে হিমেল হাওয়া মিশে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। ঠান্ডা উপেক্ষা করে কৃষি শ্রমিকরা মাঠে কাজ করছেন। কিন্তু শীতের দাপটে তারা বেশিক্ষণ মাঠে থাকতে পারছেন না। কনকনে শীতে স্কুল কলেজ মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর উপস্থিতি উল্লেখ যোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। তিস্তার নদীর ধারে চর গদাই গ্রামের শীতার্ত আব্বাছ আলী (৬৫) জানান, হামরা জারত মরি যাবার নাগছ, কায়েও হামার খোজ নেয় না, ভোটোত সগায় খোঁজ নেয়, শীতত কায়েও আইসেনা। গত বছরত একনা কম্বল দিছিল, সেকনা নষ্ট হয় গেইছে, জারত হামার গুলার খুব কষ্ট বাহে। ঠান্ডার কারনে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ কাজের সন্ধানে বাড়ির বাইরে যেতে না পারায় কমেছে তাদের আয়- রোজগার। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র না থাকায় খড়কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে ঠান্ডা থেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। ঠান্ডার কারনে চরের মানুষ গবাদি পশু নিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে। ঘন কুয়াশায় দিনের বেলা রাস্তায় হেড লাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলাতে দেখা গেছে। ঘন কুয়াশায় বাড়ছে সড়ক দূর্ঘটনা।
হরিশ্বর গ্রামের রিকশা চালক আনারুল বলেন ৫ দিন থেকে সূর্যের মুখ দেখিনা, পেটের দায়ে ঠান্ডাতে রিক্সা নিয়া বাহির হয়েছি, কিন্ত যাত্রী নাই, ফলে আয়ও নাই। পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।
এ দিকে শীতের গরম কাপড়ের দোকান গুলোতে ভীড় বেড়েছে। বিশেষ করে রাস্তার ধারের দোকান গুলোতে দরিদ্র মানুষ গুলোর ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতে স্বাস্থ্য সচেতন না থাকলে সাধারণ সর্দি-কাশি থেকে বিশেষভাবে বয়স্ক ও শিশুদের ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও হার্টের জটিলতা তৈরি হওয়ার প্রবল শঙ্কা রয়েছে। ফলে অপ্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়া এবং মোটা পোশাক পরিধান, গরম খাবার খাওয়া ও পানি ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহসান হাবীব সরকার জানান ৩ হাজার ১২০টি কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে যা ইতিমধ্যে ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। আরো বরাদ্দ চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিদুল হক জানান, সরকারি ভাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাওয়া শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে এবং অব্যাহত আছে। আরো শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আমরা সমন্বয় করে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করছি।
সান
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত