ভারতীয় বিচার বিভাগে নতুন ইতিহাস, বাবার পরে ছেলেও হলেন প্রধান বিচারপতি!

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৯ নভেম্বর ২০২২, ১৩:৫২ |  আপডেট  : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৮

ভারতের সাবেক প্রধান বিচারপতি যশবন্ত বিষ্ণু চন্দ্রচূড়ের ছেলে ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড় দেশটির প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন।বাবার ৪৪ বছর পর বুধবার সকালে ৫০তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে তিনি শপথ নেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এনডিটিভি।

রাষ্ট্রপতি ভবনে ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড়কে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। আগের দিন প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেন বিচারপতি উমেশ উদয় ললিত। মাত্র ৭৪ দিন পদে ছিলেন তিনি।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী দু বছর প্রধান বিচারপতির পদে দায়িত্ব পালন করবেন ধনঞ্জয় চন্দ্রচূড়। ২০২৪ সালের ১০ নভেম্বর মেয়াদ শেষ হবে তার।

প্রধান বিচারপতি হওয়া এই বিচারক ২০১৬ সালের ১৩ মে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে উন্নীত হন। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলায় সাংবিধানিক বেঞ্চের অংশ হয়েছেন তিনি। অযোধ্যার জমি বিবাদ মামলা, গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারের মতো মামলায় তার অংশগ্রহণ ছিল।

সমকামী সম্পর্ককে অপরাধমুক্ত করার নেপথ্যেও ছিলেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। অবিবাহিত নারীদের গর্ভপাতের অধিকার নিয়েও সম্প্রতি রায় হয় তার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে।

বিচারপতি ধনঞ্জয় চন্দ্রচূড় ১৯৫৯ সালের ১১ নভেম্বর মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা যশবন্ত বিষ্ণু চন্দ্রচূড় ভারতের প্রধান বিচারপতি ছিলেন ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত। এখনও পর্যন্ত তিনিই ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধান বিচারপতি।ধনঞ্জয় চন্দ্রচূড়ের মা প্রভাদেবীর অবশ্য আইন নিয়ে বিশেষ আগ্রহ ছিল না। তবে ছেলে ছোট থেকেই বাবার মতো আইন নিয়ে উৎসাহী ছিলেন।

মুম্বাইয়ের ক্যাথিড্রাল অ্যান্ড জন কোনন স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করার পর ধনঞ্জয় চন্দ্রচূড় দিল্লির সেন্ট কলম্বাস স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৭৯ সালে দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে অঙ্ক এবং অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৮২ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক ডিগ্রি নেন বিচারপতি ধনঞ্জয় চন্দ্রচূড়। পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।হার্ভার্ড থেকেই আইন নিয়ে গবেষণাও করেন। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই তিনি শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন।

১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থার সময়ে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন সরকার সব মৌলিক অধিকার খর্ব করেছিল। সেই সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের এক বেঞ্চ। বিচারপতি ধনঞ্জয় চন্দ্রচূড়ের বাবা সাবেক বিচারপতি চন্দ্রচূড়ও সেই বেঞ্চেরই সদস্য ছিলেন।

ওই বেঞ্চের যুক্তি খারিজ করে ২০১৭ সালে বিচারপতি ধনজ্ঞয় চন্দ্রচূড় জানান, পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা ঠিক নয়। ২০১৮ সালেও বাবার দেয়া অন্য একটি রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়।

১৯৮৫ সালে বিচারপতি ধনঞ্জয় চন্দ্রচূড়ের বাবা বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ককে ‘অসাংবিধানিক’ বলেছিলেন। ৩৩ বছর পর বিচারপতি ধনঞ্জয় চন্দ্রচূড় বলেন, এই আইন চলতে পারে না।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত