বিভিন্ন জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:৫৩ |  আপডেট  : ৫ মে ২০২৪, ১১:২২

হাড় কাঁপানো শীতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রার পারদ নেমে এসেছে ১০ ডিগ্রির নিচে। এমন অবস্থায় যেসব জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামবে, সেসব জেলার স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।সেই নির্দেশনা অনুযায়ী সোমবার (২২ জানুয়ারি) দেশের বিভিন্ন জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

রাজশাহীতে প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ 

রাজশাহীতে শীতের তীব্রতা বাড়ায় দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো। বাদ যায়নি কিন্ডারগার্টেনগুলোও। রাজশাহীতে গেল সাত দিনের আবহাওয়ার গতি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৯ থেকে ২১ ডিগ্রির ঘরে। সর্বশেষ সোমবার (২২ জানুয়ারি) রাজশাহীতে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।  আরও জানতে

রাজশাহীতে শীতের তীব্রতা বাড়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী জেলায় ১ হাজার ৫৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। একই সঙ্গে প্রায় ৮০০ কিন্ডারগার্টেন স্কুলও বন্ধ রয়েছে। তীব্র শীতের কারণে বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান বন্ধ থাকবে। তবে বিদ্যালয়গুলোতে যথারীতি অন্য কার্যক্রম চালু থাকবে।

পাবনায় সব প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা

পাবনা জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোমবার (২২ জানুয়ারি) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে । রোববার (২১ জানুয়ারি) রাতে পাবনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিক মোহাম্মদ ইউসুফ রাজা ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রোস্তম আলী হেলালী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।বিস্তারিত জানতে

পাবনার ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, সোমবার (২২ জানুয়ারি) ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে রোববার পাবনার ঈশ্বরদীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন শনিবার রেকর্ড করা হয়েছিল ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

নাটোরে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ 

নাটোরে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসার সম্ভাবনা থাকায় সোমবার (২২ জানুয়ারি) নাটোরের সব মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান স্থগিত করা হয়েছে। রোববার (২১ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে জেলা শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষরিত দুটি নোটিশে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম নবী বলেন, নাটোর জেলায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নীচে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস একযোগে সোমবারের সব ক্লাস স্থগিত করেছে। তবে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কার্যক্রম চলমান থাকবে।

নওগাঁর সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ

তীব্র শীতে নওগাঁয় স্থানীয়দের জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। তাপমাত্রার পারদ নেমে এসেছে ১০ ডিগ্রির নিচে। চলমান মৃদু শৈত্য প্রবাহে ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডার পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী সোমবার (২২ জানুয়ারি) জেলার প্রাথমিক পর্যায়ের ১ হাজার ৩৭৪টি এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান।

নওগাঁ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলগুলো সকাল ১০টার আগে শুরু হয় না। তাই সকাল ৯টার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা সম্ভব নয়। এরপরেও আজ সোমবার স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। আজকে ১০টার পর তাপমাত্রা কোন উপজেলায় কত ছিল, সেবিষয়ে আমরা খোঁজ নিচ্ছি। ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে কোথাও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির কম থাকলে শুধুমাত্র সেখানে ছুটি ঘোষণা করা হবে। চলমান মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি বিবেচনায় সোমবার জেলার প্রাথমিক পর্যায়ের ১ হাজার ৩৭৪টি এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। 

লালমনিরহাটে বন্ধ প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয়

সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকালে লালমনিরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর, যা এই মৌসুমের জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। শীতের তীব্রতা বেড়ে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামায় জেলার সব মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

রংপুরের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ

মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আর বিরূপ আবহাওয়ার কারণে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যাওয়ায় রংপুরের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকালে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেরিতে জানতে পারায় শিক্ষা কার্যক্রম চালু ছিল। পরে সাংবাদিক ও অন্যান্য সহকর্মীদের মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষণিক ছুটি দিতে দেখা গেছে।

এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এক নির্দেশনায় জানায়, তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হলে স্কুল-কলেজের মতো প্রাথমিক বিদ্যালয়ও বন্ধ থাকবে। কোনো জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যদি ১০ ডিগ্রির নিচে নামে, সেক্ষেত্রে সেই জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হবে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শীত কিছুটা বাড়তে পারে। রংপুর বিভাগের কয়েকটি জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে।এদিকে আবহাওয়া, রাডার ও ভূ-কম্পন পর্যবেক্ষাণাগার রংপুরের কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানান, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও নীলফামারীর ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত রংপুরে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলেও বন্ধ করা হয়নি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এদিকে তীব্র শীতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমেছে বলে জানা গেছে।  ঠাকুরগাঁও কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে সংশ্লিষ্ট উপজেলার কর্মকর্তারা বিদ্যালয় বন্ধের কোনো নির্দেশনা পাননি বলে জানান। অভিভাবকরা বলছেন, সকালে প্রচণ্ড শীত থাকে। এ অবস্থায় স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়। এছাড়া ঠাণ্ডা লেগে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও উপজেলা শিক্ষা অফিসার বলেন, স্কুল বন্ধের কোনো নির্দেশনা আমরা এখনো পাইনি। আমাদের জেলা থেকে যদি স্কুল বন্ধের নির্দেশনা দিলে আমরা স্কুল বন্ধ দিয়ে দিতাম। আর এটা তো অনেকটা সমন্বয় করে দিতে হয়। হঠাৎ করে তো এই স্কুল বন্ধ দেওয়া যায় না। ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা অফিসার শাহীন আকতার বলেন, আমরা আজকে তাপমাত্রা গুগলে দেখতে পেয়েছি ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাছাড়া সকালে তাপমাত্রা জেনে প্রত্যেকটা স্কুলের তথ্য পাঠানো, আবার সেই স্কুল প্রত্যেকটা বাচ্চাকে তথ্য পাঠিয়ে বন্ধ দেওয়া অনেকটা অসম্ভব।

এদিকে  চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। হাড়কাঁপানো শীতে মানুষ নাজেহাল হয়ে পড়ছে। সব থেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন  খেটে খাওয়া মানুষেরা এবং শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা। শীতে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছে না দিনমজুররা। এই তীব্র শীতের সকালে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে দেখা যায়।

আবার তীব্র শীত আর হিমেল হাওয়ায় দিনাজপুরে  তাপমাত্রা নেমে গেছে ৮ দশমিক ১ ডিগ্রিতে। জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করলেও খোলা রয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়! জেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে বিভাগীয় কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। এখনো স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

সা/ই

 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত