বার্সেলোনাকে জেতালেন ডিফেন্ডার পিকে

  স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২১, ১০:১২ |  আপডেট  : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ২৩:০০

ম্যাচটি রীতিমতো নকআউট পর্বের ম্যাচ  হয়ে উঠেছিল। ঘরের মাঠে কাল চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচটি জিততেই হতো বার্সেলোনাকে। প্রথম দুই ম্যাচেই বায়ার্ন মিউনিখ ও বেনফিকার কাছে ৩-০ গোলে হারায় চ্যাম্পিয়নস লিগে টিকে থাকতে কাল জয় ছাড়া উপায় ছিল না কাতালানদের। গত এক যুগে এমন ম্যাচে একজনের দিকেই চেয়ে থাকত দলটি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই লিওনেল মেসি চ্যাম্পিয়নস লিগে দলকে বাঁচানোর কাজটা আগের রাতেই সেরে ফেলেছেন। মেসির জোড়া গোলেই লাইপজিগকে হারিয়েছে মেসির দল পিএসজি।

গতকাল তাই বার্সেলোনাকে বাঁচানোর দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন আরেকজন, জেরার্দ পিকে। বার্সেলোনার ঘরের ছেলে, এখানেই বেড়ে উঠেছেন, অবসরের পর ক্লাবের দায়িত্বটা তিনিই নেবেন বলে ভাবা হয়। আপাতত অবসরের আগে দলকে টানার দায়িত্বটাও বুঝে নিয়েছেন। মেসি চলে যাওয়ার পর লিগে বার্সেলোনার প্রথম গোল ছিল পিকের। সেই পিকেই মেসি-উত্তর যুগে চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনার প্রথম গোল করলেন। কাল পিকের গোলেই দিনামো কিয়েভকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা।

মেসি চলে যাওয়ায় মাঠের খেলায় প্রভাব পড়বে, জানা ছিল। কিন্তু সেটা চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম দুই ম্যাচে গোল করতে না পারার পর্যায়ের, এটা হয়তো কেউ ভাবতে পারেননি। গতকাল তাই রোনাল্ড কোমানের জন্য অগ্নিপরীক্ষা ছিল। এ কারণেই হয়তো লুক ডি ইয়ং, মেম্ফিস ডিপাই, আনসু ফাতি, ফিলিপ কুতিনিওরা যখনই কোনো সুযোগ নষ্ট করেছেন, তা যত কঠিনই হোক না কেন, তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।

ক্যাম্প ন্যুও সাহায্যের হাত বাড়ায়নি। জিততেই হবে, এমন এক ম্যাচে কোথায় গ্যালারি উপচানো দর্শক ভরসা দেবেন, উল্টো কাল ৮৫ হাজার দর্শক-সামর্থ্যের ক্যাম্প ন্যুতে হাজির হয়েছিলেন ৪৫ হাজার দর্শক। দল নিয়ে বার্সেলোনা-সমর্থকদের আশা-ভরসা কতটা কমে গেছে, তারই এক উদাহরণ হয়তো। এমন এক ম্যাচেই কাল যে দল নামিয়েছেন কোমান, তাতে দর্শক-আগ্রহ আরও কমেছে।

আক্রমণে আবারও স্বদেশি লুক ডি ইয়ংকে একাদশে রেখেছেন কোমান। দুর্দান্তভাবে প্রত্যাবর্তন করা আনসু ফাতি ছিলেন বেঞ্চে। প্রথমার্ধে সে সিদ্ধান্তকে বারবার ভুল প্রমাণ করেছেন সেভিয়া থেকে ধারে আসা এই স্ট্রাইকার। যে কয়বার সঠিক জায়গায় যেতে পেরেছিলেন, সে কয়বারই ভুল করে সুযোগগুলো নষ্ট করেছেন।

বার্সেলোনার আক্রমণও দর্শকদের মন ভরাতে পারেনি। তবু প্রথমার্ধেই এগিয়ে গেছে বার্সেলোনা। জর্দি আলবার দারুণ এক ক্রস দূরের পোস্টে অরক্ষিত পিকেকে খুঁজে পায়। পিকের হাফ-ভলি কিয়েভ গোলরক্ষক বুশচানকে পরাস্ত করলে আনন্দে ভাসে ক্যাম্প ন্যু। এই গোলেই চ্যাম্পিয়নস লিগে কোনো ডিফেন্ডারের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড ছুঁয়েছেন পিকে। এটি ছিল পিকের চ্যাম্পিয়নস লিগে ১৬তম গোল (১৪টি বার্সেলোনার হয়ে)। এত দিন এ রেকর্ড শুধু ছিল রিয়াল মাদ্রিদের রবার্তো কার্লোসের।

পিকে কাল আরও দুটি রেকর্ড গড়েছেন। সিলিভিনিওকে টপকে বার্সেলোনার ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগে গোল করেছেন ৩৪ বছর ২৬০ দিন বয়সী পিকে। আর কালকের এ গোলেই জিতেছে বার্সেলোনা। পিকে গোল করেছেন, এমন ১৪ ম্যাচেই জিতেছে বার্সেলোনা। কোনো খেলোয়াড় গোল করলেই দল জেতে, এমন রেকর্ডেও পিকে এখন সবচেয়ে এগিয়ে।

বার্সেলোনা–সমর্থকদের হতাশার ব্যাপার হলো, পুরো ম্যাচ থেকে তারা আর কোনো উল্লাসের উপলক্ষ পায়নি। কোমানের মধ্যে দলের আক্রমণ বাড়িয়ে গোল আদায়ের ইচ্ছা খুব একটা দেখা যায়নি। বার্সেলোনা দ্বিতীয়ার্ধে বল দখলেই মন দিয়েছে, কিন্তু সেটা গোলে পরিণত করার মতো ভালো আক্রমণ বা খেলার তীব্রতা, কোনোটাই ছিল না। ওদিকে কিয়েভেও গুছিয়ে কোনো আক্রমণ না করায় এক গোল নিয়ে হাসিমুখে মাঠে ছেড়েছে বার্সেলোনা।

ওদিকে গ্রুপের শীর্ষে থাকা বায়ার্ন মিউনিখ কাল বেনফিকার মাঠে গিয়ে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষকে। কাল ৪-০ গোলে জয় পেয়েছে চেলসিও। তবে চেলসির জয়ে কাঁটা হয়ে এসেছে স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকুর চোট।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত