বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন দিয়ে লোক যাতায়াত প্রায় শূণ্যে
প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:০৪ | আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:২৩
দু’দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের ফলে বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশনটি (লোক যাতায়াত) প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। জুলাই-আগষ্টের অভূথানের পরেই এই অচলাবস্থা বিদ্যামান। উত্তরাঞ্চলের অধিক সম্ভবনাময় বাংলাবান্ধাস্থল বন্দরটি হঠাৎ আলোর ঝলকানি থেকে দুরে চলে যাওয়ার মত অবস্থায় রয়েছে।একদিকে স্থলবন্দরটিতে পণ্য আমদানী ও রপ্তানিতে অনেকটাই ঘাটতি থাকার পাশাপাশি ইমিগ্রেশনটিতে লোক যাতায়াত কমে প্রায় শূন্যে নেমেছে।সরজমিনে গিয়ে এমনটাই দেখা গেছে।
এদিকে খবর নিয়ে জানা যায় ভিসা না পাওয়ায় বাংলাদেশের পর্যটক সহ চিকিৎসা নিতে যাওয়া অনেক রোগি বা তার লোকজন যেতে পারছেনা।বিগত ১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাবান্ধাস্থল বন্দরটি চালু হলেও শুধুমাত্র নেপালের সাথে বানিজ্য কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ২০১১ সালের ২২ জানুয়ারী ভারতের সাথে বানিজ্য ঘাটতি পূরণে পণ্য আমদানী রপ্তানী শু রু হয়। এরপরে চলতে থাকে ভারত- বাংলাদেশ ও নেপালের সাথে আমদানী রপ্তানী। এর মধ্যে পণ্য আমদানী রপ্তানীর মধ্যে দীর্ঘ অতিবাহিত হতে থাকে ।এরপর দীর্ঘ সূত্রিতায় পণ্য আনা নেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে বাংলাবান্ধাবন্দরটি। দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর পর এ অঞ্চলের মানুষের যৌক্তিক দাবির পর দু’দেশের আন্তরিক ও কূটনৈতিক মেল বন্ধনে ২০১৬ সালের ১৮ স্থলবন্দরটির সাথে যোগ হয় ইমিগ্রেশন ( লোক যাতায়াত) সুবিধা ।তারপর ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারী বানিজ্য শুরু হয় ভ’ট্রানের সাথে। এরপর বৃহত্তর রংপুর ও ঢাকা সহ বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ বাংলাবান্ধা দিয়ে ভারত যেতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। ফলে সরগরম হয়ে ওঠে বাংলাবান্ধাস্থলবন্দরটি।জানা যায় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটিতে ব্যবসায়ি পণ্য আমদানী রপ্তানীর সাথে জড়িত। এছাড়া বাংলাবান্ধাস্থল বন্দর দিয়ে ভ্রমন সহজতর হওয়ায় পর্যটকের পাশাপাশি রোগি ও তার লোকজন ভারতের শিলিগুড়ি হয়ে দিল্লী ,কলকাতা ,ভেলোর ,চেন্নাই হায়দারাবাদ বেঙ্গলোর সহ ভারতের নানা জায়গায় চিকিৎসা নিতে যায়। কিন্তু ভিসা প্রায় শূন্যে নেমে আসায় রোগিরা আগের মত যেতে পারছেনা।
এদিকে নানান সূত্র রোগিদের আতœীয় স্বজন যাতায়াতে অভ্যস্ত পর্যটকদের কাছ থেকে জানা যায়, ভারত যাওয়া এখন সহজ নয়। কারণ খুব ‘চাপ থাকলে হয়তো’ মেডিকেল ভিসা পাওয়া যায়। তবু ও পাওয়ার ক্ষেত্রে নিশ্চয়তা কম । একজন পর্যটক ও একজন বলেন ব্যবসায়ির কাছ থেকে জানা যায় খুব বেশি জটিল রোগির লোকরা ভারতীয় হাইকমিশনে গিয়ে ভিসার জন্য তাগিদ সৃষ্টি করলে অথবা বাংলাদেশী চিকিৎসক যদি রোগিকে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তাহলে অনেক সময় ভিসা পাওয়ার সুযোগ থাকে। ফলে ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতে যাতায়াত করা লোকজন নাই বললে চলে।
বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি ফিরোজ কবীর এ প্রতিবেদককে বলেন ‘ আগে তো ৭ শত থেকে ৮ শত মানুষ যাতায়াত করতো। আর এখন মাত্র ৫০ জনের মতো যাতায়াত করে।
এছাড়া স্থলবন্দরটিতে বাংলাদেশী পণ্য ভারত-নেপালে রপ্তানী হলেও আমদানীতে ভাটা পড়েছে। দীর্ঘ দুই মাস অতিবাহিত হলেও ভূট্রান পাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। কারন হিসেবে জানা গেছে ভারতের সড়ক ব্যবহার করে ভ’ট্রান বাংলাদেশের এই স্থলবন্দরটিতে পাথর রপ্তানী করে থাকে। সূত্র মতে,পশ্চিমবঙ্গের সরকার তাদের ভারতীয় সড়ক(ভূখন্ড) ব্যবহারে ভ্যাট আরোপ করায় ভূটানের পাথর রপ্তানী কারক ব্যবসায়ি সিন্ডিকেট তা দিতে অপরাগতা জানায়। কারন হিসেবে জানা যায়, এতে ভূট্রানের পাথর ব্যবসায়িরা এতে লোকসানের মুখে পড়বে।
এ বিষয়ে বাংলাবান্ধাস্থল বন্দরের আমদানী রপ্তানী কারক গ্রুপের আহবায়ক রেজাউল করিম শাহীন জানান, চলতি ফেব্রয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে পশ্চিমবঙ্গ ও ভূট্রান এর মধ্যে এ বিষয়ে একটি যৌথ মিটিং হওয়ার কথা ছিল। তবে দুদেশের টাইমিং টা মিল না থাকায় তা আর হয়নি। আশা করা যায় আগামী দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে সেই মিটিংটা হবে। এতে বিষয়টির সমাধান হতে পারে।
এব্যাপারে বাংলাবান্ধাস্থলবন্দরের সহকারী কমিশনার (এসি) (রাজস্ব) ইসাহাক আলীর সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি বলেন রপ্তানীর ক্ষেত্রে তো একটু-আধটু কম বেশি হয়ে থাকে। তবে পাথর আমদানীর বিষয়ে তিনি কথা বলতে অপারগতা জানান।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত