বগুড়ায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী বৈশাখের জামাই মেলা

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩৫ | আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৩১

পহেলা বৈশাখ মানেই আবহমান গ্রাম বাংলার চিরচেনা ঐতিহ্য। শহরের পাশাপাশি প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতেও ঘটা করে পালিত হয় এই দিনটি। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে বগুড়া নন্দীগ্রাম উপজেলার কয়েকটি গ্রামে বৈশাখী বসে। এ উপলক্ষ্যে উৎসব চলছে ঘরে ঘরে। উপজেলা সদর থেকে আনুমানিক ১৫ কিলোমিটার দূরে থালতা মাঝগ্রাম ইউনিয়নের পাঠান গ্রামে আনুমানিক ২০০ বছর ধরে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রাচীন এ মেলায় লোকসমাগম বেড়ে যাওয়ায় এক দশক ধরে পাশের গ্রাম নিমাইদীঘিতেও আরেকটি মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত সোমবার পহেলা বৈশাখ বিকেলে ঐতিহ্যবাহী এ মেলার উদ্বোধন করেন বগুড়া-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোশারফ হোসেন। সেসময় তিনি বলেন, বৈশাখী মেলা আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির অংশ। এ ধরনের আয়োজন নতুন প্রজন্মকে আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করে। পাঠান বৈশাখী মেলা কমিটির সভাপতি মেহেরুল ইসলামের সভাপতিত্বে মেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যন্যদের মধ্য বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলাউদ্দিন সরকার, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন আদর, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. আলেকজান্ডার, সাধারণ সম্পাদক কেএম শফিউল আলম সুমন, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাকিম, ইয়াছিন আলী, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, উপজেলা যুব দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রউফ রুবেল, যুগ্ম আহবায়ক আরিফুল ইসলাম মজনু, পৌর যুব দলের আহবায়ক গোলাম রব্বানী, যুগ্ম আহবায়ক মেহেদী হাসান শাহীন, উপজেলা ছাত্র দলের সভাপতি জুয়েল রানা, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান তারেক, পৌর ছাত্র দলের সভাপতি রাকিবুল হাসান পলিন ও সাধারণ সম্পাদক নুরনবী প্রমুখ। গ্রামীণ জনপদজুড়ে এখন উৎসবের আমেজ। নাইওর এসেছেন ৪০-৫০ গ্রামের জামাই-বধু ও সন্তানসহ আত্মীয়-স্বজনরা। উপলক্ষ্য হচ্ছে দুই দিনের মেলা। মেলা উপলক্ষ্যে শ্বশুরবাড়িতে জামাইদের নিমন্ত্রণের রেওয়াজ চালু আছে বলে স্থানীয়ভাবে এই দুটি মেলা ‘জামাই মেলা’ নামে পরিচিত। প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে ওই গ্রামের লোকজন আয়োজন করে ব্যতিক্রমধর্মী এই জামাই মেলা। হাজার হাজার দর্শনার্থী এই মেলায় এসে আনন্দ উপভোগ করে। মেলাটির নাম যেহেতু জামাই মেলা, সেহেতু এই মেলার মূল আকর্ষণ বাহারি রকমের মিষ্টির। অন্যান্য দোকানগুলোর চেয়ে মিষ্টির দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেশি। এছাড়া ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য নাগরদোলা, চড়কি,ট্রেনসহ বড়দের আনন্দ উপভোগের জন্য রয়েছে মোটরসাইকেল খেলা। এই মেলাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের কাঠের আসবাবপত্র, তালপাখা, মেয়েদের কসমেটিকস বিভিন্ন ধরনের পণ্যের পসরা সাজিয়ে রেখেছে। পাঠান বৈশাখী মেলা কমিটির সভাপতি মেহেরুল ইসলাম জানান, মেয়ে জামাইদের সম্মান প্রদর্শন করতেই দুইশত বছর ধরে মেলাটির আয়োজন করা হয়। পহেলা বৈশাখের আনন্দ অনেক বাড়িয়ে দেয় এই মেলাটি। এই মেলা দুদিনের জন্য হলেও এর আমেজ চলতে থাকে সপ্তাহব্যাপী। এই মেলার শেষের দিন উপস্থিত হয় শুধু নারীরা। মেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সার্বক্ষণিক তদারকি করছে।
সান
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত