প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষিত, কাউনিয়ায় স্বাস্থ্য সেবার বেহাল দশা
প্রকাশ: ৩ মার্চ ২০২৪, ১৯:০৯ | আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:৫৫
বর্তমান সরকার স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর জন্য নিরলস ভাবে কাজ করছে। কিন্তু রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় তা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে কাউনিয়ায় জনগণ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সরেজমিনে রবিবার সকালে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত রোগীদের বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় এবং নতুন জেনারেটর মেশিন থাকারপরও তা চালু না করার ফলে অন্ধকারে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে মেডিকেলে জেনারেটর চালু না করায় বিদ্যুৎ চলে গেলে এটি ভুতুরে বাড়িতে পরিনত হয়। রোগিদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। রোগিরা লাইন ধরে সেবা নেয়ার জন্য দাড়িয়ে থাকলেও আলো না থাকায় চিকিৎসকরা চিকিৎসা পত্র লিখতে পাচ্ছিলেন না। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্তাব্যাক্তির সাথে সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য করা গেছে। হাসপাতালে বহির্বিভাগে গড়ে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ জন এবং জরুরি বিভাগে গড়ে ৩৫-৪০ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। এছাড়া গড়ে প্রতিদিন ১৫ জন নতুন রোগী ভর্তি হন। যে কয়জন চিকিৎসক আছেন তারা সেবা দিতে চাইলেও নানা প্রতিকুলতায় তা দিতে পারেন না। দীর্ঘদিন থেকে স্থায়ী আবাসিক মেডিকেল অফিসার, চক্ষু, চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। এ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার ১জন থাকলেও তিনিও ছুটিতে গেছেন। একজন সার্জন দিয়ে দন্ত বিভাগ চালু থাকলেও বছর খানিক আগে চিকিৎসক বদলি হওয়ায় এখন সেটিও পুরোপুরি বন্ধ ও যন্ত্রাপাতি নষ্ট হওয়ার পথে।
কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথাবলে জানাগেছে, বিদ্যুৎ চলেগেলে জেনারেটর না চালানোর কারনে অন্ধকারে ডাক্তার ভাল ভাবে রোগি দেখতে পাচ্ছেন না। গরমে ফ্যান না চলায় রোগিরা কাতরাচ্ছে। অনেকে মন্তব্য করে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের স্বাস্থ্য সেবার জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছুই করছেন। তারপরও কাউনিয়ায় চিকিৎসা সেবা ভেঙ্গে পড়েছে। সিভিল সার্জনরা সরকারি স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতি সঠিকভাবে মনিটরিং করেন না, অথচ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোর সার্বিক তদারকি করার দায়িত্ব তাদের। ৫০ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে মেশিন, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন, জেনারেটর থাকলেও টেকনিশিয়ান না থাকায় সেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। সংকট রয়েছে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, সেবক/সেবিকা, অফিস সহকারী ও পরিচ্ছন্ন কর্মীরও। অপারেশন থিয়েটার (ওটি) রয়েছে ঠিকই। কিন্তু অ্যানেসথেসিওলজিস্ট ও শল্য চিকিৎসক না থাকায় অপারেশন বন্ধ। এছরাও দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবার করুণ অবস্থা চললেও কোনো প্রতিকার নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাদিকাতুন তাহিরিন বলেন, শুধু এক্স-রে মেশিন নয়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেশ কিছু যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বেশ কিছু নতুন যন্ত্রপাতি পেয়েছি, জেনারেটরের অপারেটর ও তেলের বরাদ্দ নেই, তাই চলানো সম্ভব হয় না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিদুল হক জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নানা সমস্যার কথা জেনেছি। জেলা সমন্বয় মিটিংয়ে বিষয়গুলো তুলে ধরব। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নানা সমস্যাগুলো সমাধানের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সান
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত