প্রথম প্রহরে চাপ কম উড়ালসড়কে, নির্বিঘ্নে ছুটে চলায় স্বস্তি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:২০ |  আপডেট  : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২০

আনুষ্ঠানিকভাবে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে ঢাকায় দ্রুতগতির উড়ালসড়ক। রোববার (০৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ছয়টা থেকে টোল দিয়ে সাধারণ যানবাহন উড়ালসড়ক দিয়ে চলাচল করছে। তবে প্রথমদিনের প্রথম প্রহরে খুব একটা চাপ নেই নির্বিঘ্নে ছুটে চলার এই কাওলা থেকে ফার্মগেট অংশের উড়ালসড়কে।

সকাল থেকে উড়ালসড়ক দিয়ে ব্যক্তিগত যানবাহনই বেশি চলতে দেখা গেছে। তবে মাঝেমধ্যে অফিসের স্টাফ বাস, পিকআপ, মাঝারি আকারে ট্রাকও সকালে চলতে দেখা গেছে।

অবশ্য বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের সংখ্যাও বেড়েছে। যানবাহন চলাচল দুই ঘণ্টায় প্রায় হাজারটির মতো নানা ধরনের যানবাহন উড়ালসড়ক ব্যবহার করেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

তবে টোলের পরিমাণ নিয়ে কারও কারও কণ্ঠে মৃদু ক্ষোভ দেখা গেছে। পিকআপের চেয়ে বড় অর্থাৎ মাঝারি ট্রাকের ৩২০ টাকা টোল দেওয়ার পর চালক বলেন, এই টোলটা তাদের জন্য বেশি হয়ে গেছে। আরও কম হলে ভালো হত।

অবশ্য যানজট ছাড়া নির্বিঘ্নে লম্বা পথ পাড়ি দিতে পেরে সবার মধ্যে স্বস্তি কাজ করছে। সৈকত সাদিক নামে একজন ফেসবুক লাইভে বলেন, বিমানবন্দরে থেকে ফার্মগেট মাত্র ১২ মিনিটে আসলাম। অথচ সকালের সময়ে অফিসগামী অনেক মানুষ নিচের সড়কে লম্বা সময় ধরে যানজটে বসে আছেন। 

সাইদুল ইসলাম নামে একজন বলেন, কারওয়ান বাজারের অফিস থেকে বের হয়ে উড়ালসড়কে ওঠার পর মাত্র ৫ মিনিটে বনানী চলে এসেছি। এর চেয়ে শান্তির কিছু নেই। 

তিনি বলেন, যেহেতু বিমানবন্দর পর্যন্ত এটি নির্মাণ হয়েছে এখন অনেকে এদিকে বাসা ভাড়া নিয়েও দূর থেকে অফিস করতে পারবেন সহজে। 

নিয়ম অনুযায়ী উড়ালসড়কে তিন চাকার অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও সাইকেল চলাচল করতে পারবে না। পথচারীরাও উড়ালসড়কে উঠতে ও চলাচল করতে পারবেন না। এমন সিদ্ধান্তে অবশ্য মোটরসাইকেল চালকদের ক্ষোভ আছে। তারা পদ্মা সেতুর মতো আলাদা লেন করে হলেও মোটরসাইকেল চলার সুযোগ চেয়েছেন।

এরআগে গতকাল শনিবার বিকেলে কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার উড়ালসড়ক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী টোল দিয়ে প্রথম যাত্রী হিসেবে গাড়িতে করে উড়ালসড়ক পার হন।উড়ালসড়কে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। 

কাওলা থেকে বনানী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর ও মানিকনগর হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত উড়ালসড়ক হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগে (পিপিপি)।

পুরো উড়ালসড়কের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। যে অংশ খুলে দেয়া হয়েছে তার দূরত্ব  সাড়ে ১১ কিলোমিটার। যা পাড়ি দিতে ১২ মিনিট লাগবে বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।

কোন রুট থেকে কোথায় নামলে মিলবে সুবিধা

বিভিন্ন জায়গা থেকে এই উড়ালসড়কে ওঠা যাবে এবং নামা যাবে। যানজট পেরিয়ে একবার উঠতে পারলে খুব কম সময়ে পৌঁছে যাওয়া যাবে উড়ালসড়কের আরেক প্রান্তে।

যারা ফার্মগেট, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, কাঁঠালবাগান, গ্রিনরোড অথবা শাহবাগ, সেগুনবাগিচা ও পুরান ঢাকা থেকে এসে উড়ালসড়কে উঠতে চান, তাদের যেতে হবে বিজয় সরণি ওভারপাস অথবা তেজগাঁও এলাকায়।

বিজয় সরণি হয়ে র‍্যাংগস ভবন ভেঙে যে ওভারপাসটি তৈরি হয়েছে, সেটিতে উঠে তেজগাঁওয়ে যাওয়ার আগেই উড়ালসড়কের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে। তেজগাঁও থেকে বিজয় সরণির দিকে আসতে ওভারপাসে আরেকটি সংযোগ রয়েছে ওঠার জন্য।

রাজধানীর দক্ষিণ, পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্বাংশের মানুষের জন্য উড়ালসড়কে ওঠার এ পথই সহজ। তবে যারা বনানী যেতে পারবেন, তারা বনানী রেলস্টেশনের সামনে দিয়ে উড়ালসড়কে উঠতে পারবেন।

মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, নিউমার্কেটগামী যানবাহনের ইন্দিরা রোডে নামাই সুবিধাজনক।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত