পেট্রোল-অকটেনে লাভ হলেও ডিজেলে লোকসান হচ্ছে: বিপিসি চেয়ারম্যান

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২২, ২১:২০ |  আপডেট  : ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:০৫

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পরে পেট্রোল-অকটেনে লাভ হলেও ডিজেলে লোকসান হচ্ছে জানিয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান এম বি এম আজাদ বলেছেন, জ্বালানি তেল বিক্রি করে ৫৩ হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। তার থেকে ৮-১০ হাজার কোটি টাকার মতো সরকারকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এখনও ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ রয়ে গেছে।

শনিবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের ‘বিশ্ব জ্বালানি সংকট ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। সংগঠনটির সভাপতি মোজাম্মেল বাবুর সঞ্চালনায় বৈঠকে অংশ নেন সরকারের সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা।

জ্বালানি তেলে এনবিআরের ট্যাক্স মওকুফ বা কমানোর সম্ভাব্যতার বিষয়ে বিপিসি চেয়ারম্যান এম বি এম আজাদ বলেন, ট্যাক্সের বিষয়টা আইন এবং সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী হয়। আমরা সেই সিস্টেমের একটা অংশ, সেটি অনুসরণ করা আমাদের প্রথম দায়িত্ব। সরকার তার রাজনৈতিক অবস্থান থেকে যে সিদ্ধান্ত দেবে, আমরা সেটা বাস্তবায়ন করব।

বিপিসির সক্ষমতা ও দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, গত ৩৬ বছরে দেশের জ্বালানি সরবরাহ ঠিক রাখতে যে দক্ষতা ও সক্ষমতা দরকার তা এখন পর্যন্ত আছে। এখানে দুর্নীতির কোনও সুযোগ নেই। আমদানি এবং মজুত ব্যবস্থাপনায় কোনও ঘাটতি নেই। অনেকে এখন লাভ করছি বললেও আমাদের এখনও ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ রয়ে গেছে।

ট্যাক্সবৃদ্ধির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও সাবেক বিদ্যুৎ সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, এনবিআরের ট্যাক্স জিডিপি রেশিও বাংলাদেশে খুব খারাপ। যিনি যত বেশি ধনী, তার ওপর ট্যাক্স তত বেশি হচ্ছে। ট্যাক্স কমিয়ে দিলে উন্নয়নের টাকা কম হবে। উন্নয়ন হলে সবাই সুবিধা ভোগ করবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় তেল-গ্যাসের দাম বার বার বাড়ানো-কমানো সম্ভব নয়। বহির্বিশ্বের চেয়ে দেশে দাম কম, সেজন্য এটি করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি আরেকটু সময় নিয়ে ভাবতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানে ব্যাপকভাবে সৌর বিদ্যুৎ (সোলার) উৎপাদনে যেতে হবে। রাস্তা, রেল, কারখানা, অফিস-আদালতে ব্যাপকভাবে সোলারে যেতে পারলে সুবিধা হবে। সোলার আমদানি করতে গেলেও কম দামে পাওয়া যাবে।

পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর বলেন, বিবিয়ানা থেকে যে গ্যাস আমরা কিনি, সেখানে ৪-৫ গুণ সাবসিডি দিতে হয়। বেশি দামে কিনে ভর্তুকি দিয়ে কম দামে স্টেক হোল্ডারদের কাছে বিক্রি করতে হয়। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, চাহিদাও বাড়ছে, সেটিও মাথায় রাখতে হবে। তেল-গ্যাসের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয় করতে পারলে দেশে দাম আরও বাড়বে। উন্নত দেশে পরিণত হতে হলে অবশ্যই এটি করতে হবে। তবে হায় হায় করে লাভ নেই।

গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ ও পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জির সম্পাদক মোল্লা এম আমজাদ হোসেন ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ খন্দকার আব্দুস সালেক।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত