পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ; ২ প্রতারক গ্রেফতার

  হিমাদ্রি শেখর কেশব, বরগুনা

প্রকাশ: ৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:২৩ |  আপডেট  : ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ২২:৩১

গত ১ নভেম্বর ২০২৪ খ্রি: বেতাগী থানাধীন বুড়া মজুমদার ইউনিয়নের গ্রামৰ্দ্দন গ্রামের জলিল গোলদার (৫৮)- এর নাতী বামনা সরকারি কলেজের এইচএসসির ২য় বর্ষের ছাত্র মোঃ ইব্রাহিম গোলদার (২০), কে পুলিশ বাহিনীতে চাকুরী দেবার কথা বলে দুই প্রতারক শতভাগ চাকুরী দেয়ার কথা বলে ভিকটিমের পরিবারের কাছে ৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে ইব্রাহিম গোলদারকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি মৌখিকভাবে চূড়ান্ত করে।

প্রতারক দুজন হলেন, পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের গাবুয়া গ্রামের মোঃ সামসুল হক হাওলাদার পুত্র সৈয়দ আহমেদ প্রিন্স (৪০), ও বেতাগী উপজেলার বুড়ামজুমদার ইউনিয়নের গ্রামৰ্দ্দন গ্রামের মোঃ আমজেদ হোসেন খান এর পুত্র মোঃ মনির হোসেন খান (৪০) ।

প্রতারক মনির ও প্রিন্স ভিকটিমের পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে বিকাশ ও ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে সর্বমোট ৩ লক্ষ টাকা সুকৌশলে হাতিয়ে নেয়। মনির ও প্রিন্স চাকুরী দিতে ব্যর্থ হলে মোঃ ইব্রাহিমের পরিবার টাকা ফেরৎ চায়। কিন্তু প্রতারকরা টাকা নিয়ে সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

এরই ধারাবাহিকতায় ভিকটিম মোঃ ইব্রাহিম (২০) নিয়োগ পরীক্ষায় অকৃতকার্য ও তারা প্রতারণার শিকার হয়েছে বুঝতে পেরে ভিকটিম মোঃ ইব্রাহিম এর দাদা মোঃ জলিল গোলদার (৫৮) বাদী হয়ে ০৪ জনকে আসামী করে বেতাগী থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার জনাব মোঃ ইব্রাহিম খলিল, বরগুনা মহোদয়র এর দিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব আবদুল হালিম বরগুনা সদর সার্কেল মহোদয় ০১টি চৌকস অভিযানিক টিম গঠন করে এবং উক্ত ঘটনার আলোকে গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মোঃ আবদুল হালিম মহোদয়ের নেতৃত্বে ছায়া তদন্ত শুরু করেন। আসামিদের সকল তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত এজাহারভুক্ত আসামী দুই প্রতারককে গ্রেফতারে সক্ষম হন।

বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আব্দুল হালিম সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিংএ বলেন, ইতোমধ্যে প্রতারকচক্রের দুজনকে আমরা গ্রেফতার করকে সক্ষম হয়েছি। তিনি আরও বলেন, পুলিশে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে কেউ যদি কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেনের কথা বলে তাহেলে ধরে। নিতে হবে এটা সম্পূর্ণ প্রতারণা। চাকুরীর ক্ষেত্রে টাকা-পয়সা লেনদেনের কোনো সুযোগ নেই।

এজাহারভুক্ত পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের মোঃ হক মেম্বার-এর পুত্র আসমী সৈয়দ আহমেদ প্রিন্স (৪০) কে এবং বেতাগীর বুড়ামজুমদার ইউনিয়নের মো: আমজাদ হোসেনের পুত্র মোঃ মনির হোসেন খানকে ৬ এপ্রিল ২০২৫খ্রি: ডিএমপি ঢাকার উত্তরা এলাকা থেকে এবং ০৪নং আসামী মোঃ মনির হোসেন খান (৪০) কে গত ৭এপ্রিল বেতাগী থানার গাবুয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।  গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বর্ণিত ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে নেন।

প্রতারণার ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। এছাড়াও উপরোক্ত ঘটনার মতো যাতে আর কোন ঘটনা না ঘটে এবং পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধে সকল প্রকার অবৈধ লেনদেন থেকে বিরত থাকার জন্য পুলিশ সুপার সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছেন। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে বরগুনা জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

সা/ই

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত