পটুয়াখালীতে ভূমিহীন পরিবারের প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি পেশ
প্রকাশ: ৫ মে ২০২৪, ১৭:৫১ | আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:২২
আজ ৫ মে ২০২৪ বেলা ১১ টায় পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলায় চরশাহজালাল, চরহাদী, বাঁশবাড়িয়া, চরবোরহানসহ বিভিন্ন চরাঞ্চল ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভূমিহীন পরিবারের আয়োজনে, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন ও বাংলাদেশ কিষাণী সভার সহযোগিতায় দশমিনা উপজেলায় শত শত ভূমিহীন পরিবারভূক্ত নারী-পুরুষ ট্রলার, গাড়ী ও পায়ে হেঁটে মিছিল করে দশমিনা উপজেলার বাজারে এসে সমবেত হয়। বাজার থেকে মিছিলসহকারে নলখোলা বন্দর, এসিল্যান্ড অফিস, সাব-রেজিস্টার সামনে দিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ভূমিহীনরা দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে এসে সমাবেশ করেন। সমাবেশে ভূমিহীন নেতা মোঃ নয়া মিয়া সিকদারের সভাপতিত্বে ভূমিহীন নেতা আবদুস সাত্তার হাওলাদারের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কমরেড বদরুল আলম ও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান, সহ-সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তার হাওলাদার, পটুয়াখালী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কায়েস মাহমুদ। আরো বক্তব্য রাখেন ভূমিহীন নেতা প্রাণ কৃঞ্চ দাস, চর বোরহানের নেতা মোঃ ইদ্রিস খা, মোঃ সহিদুল ইসলাম, দক্ষিণ চর শাহজালালের ভূমিহীন নেতা মোঃ আশ্রাফ সিকদার, ইউপি সদস্য নাসিমা বেগম, উত্তর চরশাহজালাল ভূমিহীন নেতা আবদুর রাজ্জাক হাওলাদার, আঃ খালেক সর্দার, মোখলেস উদ্দিন, খোকন মুন্সী, ছোহরাব হোসেন হাওলাদার, মোঃ শাহ আলম খা, সাগর আলী পালোয়ান, মোঃ ছোহরাব বয়াতি, ভূমিহীন নেত্রী মনুজা বেগম, বিউটি বেগম, কুলসুম বেগম, চরহাদীর ভূমিহীন নেতা জাকির হাওলাদার, রহিম মুসলমান, তারা বেগম, চর ঘূর্ণির নেতা মোঃ হিরোন, আরজবেগীর মোকলেসুর রহমান, মকবুল হোসেন,খুরশিদা বেগম প্রমূখ। সমাবেশ শেষে ১০ সদস্য বিশিষ্ট ভূমিহীন প্রতিনিধি টিম উপজেলা নির্বাহী অফিসার, দশমিনা, পটুয়াখালীর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট......... ভূমিহীন পরিবার স্বাক্ষরিত ও ৬ দফা দাবী সম্মিলিত স্মারকলিপি পেশ করেন।
সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে চরশাহজালাল, চরহাদী, চরবোরহান প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহায়তায় সৃজিত ভুয়া বন্দোবস্ত বাতিল ও চরে অবস্থানরত- বসবাসরত উপজেলার প্রকৃত ভূমিহীনদের মাঝে খাসজমি বন্দোবস্ত প্রদান,খাস জমি ভূয়া বন্দোবস্ত বাতিল, খাসজমি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া বন্দোবস্তকারীদের বিচার, উপজেলার চরাঞ্চল ও মূল ভূমির সকলা খাস জমি চিহ্নিতকরন, আন্তঃউপজেলা ও আন্তঃজেলা সীমানা নির্ধারনের দাবী জানান। বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ ভুয়া বন্দোবস্তের কারনে যে সংকট তৈরী হয়েছে তা সমাধান কল্পে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ এবং আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করে চরশাহজালালসহ বিভিন্ন এলাকায় শান্তি ও শৃংখলা বজায় রাখায় সদয় ভূমিকা কামনা করেন।
বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি কমরেড বদরুল আলম তাঁর বক্তব্যে বলেন, দেশে ৫০ লক্ষ একরের অধিক খাসজমি রয়েছে। এ খাসজমিতে ভূমিহীনদের অধিকার সুরক্ষায় সমগ্র দেশে কৃষি খাসজমি বন্দোবস্ত ও ব্যবস্থাপনা কমিটি সক্রিয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। তিনি আরো বলেন, ভূমি মানুষের জীবন-জীবিকার উৎস। মানুষের খাদ্য সার্বভৌমত্বের নিশ্চয়তা দেয়। সুতরাং ভূমি নিয়ে কোন ধরনের দুর্নীতি ও কারসাজি বরদাস্ত করা হবে না। উত্তর শাহজালালে যে দুর্নীতি ও অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে তার সমাধান সরকারকেই করতে হবে। কেননা সরকারের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী এর সাথে জড়িত। সারা দেশে শক্তিশালী আন্দোলনের মাধ্যমে সকল ধরনের ভূমি সংক্রান্ত অনিয়ম রুখে দাঁড়ানোরও আহ্বান জানান তিনি। তিনি দেশীব্যাপী খাদ্য সার্বভৌমত্বের দাবীতে শক্তিশালি ভূমি আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।
সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, উত্তর চরশাহজালালের খাসজমি সংক্রান্ত জটিলতা দীর্ঘদিনের। সরকার চাইলেই এর সমাধান করতে পারে। কিন্তু কায়েমী স্বার্থের কারনে সমস্যাকে দশকের পর দশক জিইয়ে রেখেছে। সাংগঠনিকভাবে সমাধানের চেষ্টা আমাদের দিক হতে জারী রাখলেও স্থানীয় প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে আজও কোন সুরাহা হচ্ছে না। তিনি এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখিত দাবীঃ
১)দশমিনা উপজেলার ভূমিহীন পরিবারের মাঝে খাসজমি বন্দোবস্ত দিতে হবে।
২)চর শাহজালালে ৩১ বছর যাবৎ চরে বসবাসরত ভূমিহীন পরিবারের মাঝে খাসজমি বন্দোবস্ত দিতে হবে।
৩)খাস জমি ভূয়া বন্দোবস্ত বাতিল করতে হবে।
৪) চরশাহজালালসহ বিভিন্ন এলাকায় খাসজমি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া বন্দোবস্তকারীদের বিচার করতে হবে।
৫)উপজেলা চরাঞ্চল ও মূল ভূমির সকল খাস জমি চিহ্নিত করতে হবে।
৬)আন্তঃউপজেলা ও আন্তঃজেলা সীমানা নির্ধারন করতে হবে।
সান
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত