পঞ্চগড় সীমান্তের চোরাই পথে ভারতে পাচার হচ্ছে বাংলাদেশী ইট নিরাপত্তাহীনতায় স্থানীয়রা

  পঞ্চগড় প্রতিনিধি  

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৪, ১২:১৭ |  আপডেট  : ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩:৩৮

পঞ্চগড় সীমান্তের চোরাই পথে অবৈধ ভাবে ভারতে পাচার হচ্ছে বাংলাদেশের ইট। এক শ্রেনীর চোরাকারবারিরা এর সাথে জড়িত বলে জানান এলাকার বাসিন্দারা। তারা অতিলোভে এই অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত। পঞ্চগড় এলাকা ভারতীয় ভূখণ্ড কাছাকাছি হওয়ায় ও তাদের চেয়ে দামে সাশ্রয় হওয়ায় এই ইট তারা নিতে অতি আগ্রহী বলে অনেকে জানান।

জানা যায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্ত এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই জমে উঠেছে এই ইটের রমরমা  অবৈধ ব্যবসা। স্থানীয় চোরাকারবারিরা অবাধে ভারতীয়দের সঙ্গে এই ব্যবসা করছেন।

সম্প্রতি সীমান্তের মমিনপাড়া গ্রামে গেলে বেশ কয়েকখানে ইটের স্তুপ চোখে পড়ে। এগুলো বাংলাদেশী কারো বসত কিংবা স্থাপনা নির্মাণে ব্যবহার হবেনা, বরং সুযোগ বুঝে পাঠানো হবে পার্শ্ববর্তী ভারতীয় গ্রামে- জানান স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েকদিন ধরেই ট্রাকযোগে বিভিন্ন ভাটার ইট এই সীমান্তে আনছেন একটি চক্র। আবার সুযোগ বুঝে সেগুলো পার করছেন ভারতে। বিজিবির চোখের সামনে এই অবৈধ বাণিজ্য চললেও ব্যবস্থা নিচ্ছেননা তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঝুলিপাড়া, মমিনপাড়া, তিনঘড়িয়া পাড়া এবং বাঙ্গালপাড়া- এই চারটি গ্রামের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে ভারতের ৬টি গ্রামের। ওই গ্রামগুলোর অবস্থান ভারতে হলেও কাটাতারের বেড়া তাদের প্রতিবেশি গ্রামগুলো থেকে আলাদা করতে পারেনি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে উভয় পাশের স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি জায়গাটি বাণিজ্যিক রুট হিসেবে ব্যবহার করছেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবার কাটাতারের এই পারের গ্রামগুলোতে নির্মাণসামগ্রী সরবরাহ করছে বাংলাদেশী চোরাকারবারিরারা। যেই ইট বাংলাদেশে ৮টাকা পিস, সেই ইট ভারতীয়দের কাছে বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৬ টাকায়। 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই সীমান্তটি চোরাকারবারিদের নিরাপদ রুট। নিত্যপ্রয়োজনীয় সবধরণের পণ্য অবৈধপথে পারাপার হয় এই পথে।  একটি চক্রের প্রধান পেশাই এখন চোরাকারবারি সীমান্তের কাছাকাছি তাদের বাড়ি হওয়ায় অবাধে চালাচ্ছেন এ ব্যবসা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, এই সীমান্ত এলাকায় সবকিছু অবাধে চলে। মাদক, গরু, গোশত, চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছু আমদানি হয় এদিক দিয়ে। স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তির প্রধান পেশাই এটি। কৃষিপণ্যও কেনাবেচা হয় এই চোরাই পথ দিয়ে। এখন ইট সরবরাহ হচ্ছে। বিজিবির ক্যাম্পের সামনে দিয়েই আসছে ইটভর্তি ট্রাক। কিন্তু তারা সেদিকে নজর দিচ্ছেনা, এগুলো কোথায় যাচ্ছে। সূত্র জানায় বিজিবিকে খবর দেওয়ার পর অবাধে এই ব্যবসা চলছে।

রিপন নামের এক যুবক বলেন, মাত্র কয়েকজন চোরাকারবারির কারণে সীমান্তে বসবাস করা আমাদের কঠিন হয়ে যাচ্ছে। চোরাকারবারিরা অবাধে ইট সরবরাহ করতে পারে, কিন্তু আমরা আমাদের বাড়ির কাজের জন্য কোন সামগ্রী আনলে বিজিবিকে অনেক প্রমাণ  দেখাতে হয়।

সিদ্দিক নামে একজন আক্ষেপ করে বলেন, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে পাকা স্থাপনা করায় কয়েকদিন আগে প্রশাসন আমার স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছি। অথচ এখন প্রতিদিন অবাধে বাংলাদেশী ইট ভারতে যাচ্ছে  কিন্ত জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপও নেয়া হচ্ছেনা।

বিজিবি ঘাগড়া বর্ডার আউটপোস্টের (বিওপি) ক্যাম্প কমান্ডার লুৎফর রহমান বলেন, ইট পারাপারের বিষয়টি আমি অবগত না, বিষয়টি আমি  দেখছি।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত