ঘটেছে মারামারি থানায় অভিযোগ ঘটনাস্থলে পুলিশ

পঞ্চগড়ে বিরোধীয় জমিতে মামলা থাকলেও ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে খারিজ প্রদানের অভিযোগ

  পঞ্চগড় প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩১ |  আপডেট  : ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:৪৮

পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মুক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, খারিজ খতিয়ান প্রদানে দুর্নীতি ও সরকারি নিয়মের বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায় জমি পরিদর্শনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে এঘটনার সূত্র ধরে জমি দখলের চেষ্টা চালানোর অপ্রচেষ্টার অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে সদর থানায়। পুলিশ সম্প্রতি সদর উপজেলার বিষ্ণুনারায়নী মৌজায় ১৮ শতক পরিত্যক্ত বিরোধীয় জমির পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদন দাখিল করায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) সদর, পঞ্চগড় এর নিকট নামজারি খারিজ সরবরাহ করায় এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন বাদী পক্ষ বাহারুল ইসলাম।তিনি গত ২৮ অক্টোবর নামজারী ওই খারিজটি বাতিলের জন্য অভিযোগ বা আবেদনটি দাখিল করেছেন।ওই ভুক্তভোগী বাহারুল ইসলাম অভিযোগ করেন তার ভোগদখল হিসেবে বিষ্ণুনারায়নী মৌজার ১৮ শতক জমির উপড় বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালত এ বাটোয়ারা মামলা বিচারাধীন রয়েছে। মামলা নম্বর ২৯৯/২০২৩ ।

অভিযুক্ত অভিযোগকারী তার আনিত ওই নামজারী খারিজে উল্লেখ করেন যে, ওই নালিশী জমিতে ২৪/১৪/২০১৮ ইং থেকে ৭৮৪ দলিলমূলে বিষ্ণুনারায়নী মৌজার এস,এ ২৮৬ নং খতিয়ানের.৪১৫০ শতক জমি খরিদ করে ভোগদখলকার হিসেবে আছি। তিনি জানান সম্প্রতি খাজনা খারিজ করতে কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে জানতে পারি নালিশী এ এ ২৩৫৪ দাগে .১৮ শতক বিবাদী পক্ষ ধনেশ চন্দ্র পিতা- গেরু এবং নরেশ চন্দ্র রায় ও সুবাস চন্দ্র রায় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার সাথে যোগসাজসে মোটা অঙ্কের উৎকোচ প্রদান করে নামজারী খারিজ নিয়ে যায়।যার খারিজ খতিয়ান নং- ১৮৩৯। অভিযোগকারী ও তার পরিবার এবং স্থানীয়রা জানান কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার ও মোটা উৎকোচ নিয়ে নামজারী খারিজ করে নেন। অথচ বিজ্ঞ আদালতে ওই বিরোধীয় নালিশী জমিতে মামলা বিচারাধীন। তিনি বিচারাধীন জমির নামজারী খারিজ কি করে দেন। 

অভিযোগ মতে, মামলার পর থেকেই নালিশী জমিটি এখন সর্ম্পূনরুপে পরিত্যক্ত রয়েছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জমিটিতে কোন চাষাবাদ হয়না। ফলে জমিটি গোচারন ভূমিতে পরিনত হয়েছে। তবে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয় অস্বীকার করে  ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মোঃ মুক্তার হোসেন বলেন ওই জমিতে মামলা আছে আমার জানা ছিল না।

এমতাবস্থায় গত শুক্ররবার (৮ নভেম্বর) বিবাদী পক্ষ সকাল নটার দিকে তার পরিবারের লোকজনদের নিয়ে ওই বাটোয়ারা মামলার পরিত্যক্ত জমি দখলের উদ্দেশ্যে গাছ রোপন করতে যায়। এসময় খারিজ বাতিলের বাদী পক্ষ ঘটনাস্থলে যায় এতে এ সময় বিবাদী পক্ষের লোকজন বাহারুল ইসলামের ছেলে আবু তাহেরকে প্রাণে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে মারপিট করে পরনের কাপড়চোপড় ছিড়ে ফেলে। ঘটনাটিও কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ তোফায়েল প্রধান কে জানালে তিনি তাৎক্ষনিক ভাবে জানালে ঘটনাস্থলে গ্রাম পুলিশ বিরোধীয় জমিতে গাছ না লাগানোর পরামর্শ প্রদান করেন। এরপর পঞ্চগড় সদর থানায় আবু তাহের ৯ জনকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ দাখিল করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে গাছ লাগানো থেকে বিরত রেখে তাদের দুপক্ষকে শান্ত করেন। বাদী পক্ষের আবু তাহের জানান ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার যোগসাজসে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তিনি যেহেতু উৎকোচ নিয়ে ওই পরিত্যক্ত জমির খারিজ দেওয়ার পক্ষে প্রতিবেদন প্রদান করেছেন তাই তিনি নিজেকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেতে জমি দখলে উস্কে দেয়।

এ ব্যাপারে পঞ্চগড় সদর থানার এস আই মোতাহার হোসেন ওই জমির বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন ‘ আমি দুপক্ষকে তাদের কাগজপত্র নিয়ে থানায় আসতে বলেছি। আর জমি যে ভাবে থাকে সে ভাবে রাখার কথা বলে এসেছি। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ জাকির হোসেন এর সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি বলেন ‘ আমরা খারিজ বাতিল করতে পারি। তবে জমি উদ্ধার করা দায়িত্ব বাদীর।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত