পঞ্চগড়ে পুলিশ এখনো নিক্রিয় ট্রাফিক পরিচালনায় শিক্ষার্থী ও সেচ্ছাসেবীরা
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৪, ১৯:১৫ | আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:২৬
পঞ্চগড়ের থানাগুলোতে সীমিত পরিসরে কার্যক্রম চললেও ট্রাফিক ব্যবস্থায় এখনো নেই ট্রাফিক পুলিশ। ছয়দিন ধরে সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে নানা সংগঠনের সেচ্ছাসেবীরা। সব মিলিয়ে পুলিশ এখনো নিক্রিয়। পঞ্চগড় সদর থানা গেটে নিরাপত্তার সেনাবাহিনীকে দেখা যায়।
সরকারের পদত্যাগের পরে পুলিশ নিক্রিয় হয়ে পরে। দেশে শিক্ষার্থীদের কোটা বিরোধী আন্দোলনের পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। সাম্প্রতিকালে অহিংস আন্দোলন সহিংসতায় রুপ নেয়। সহিংস ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের কোটা বিরোধী আন্দোলন শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলন রুপ নেয়।
আন্দোলন চলাকালিন পঞ্চগড়ে ৩ আগষ্ট প্রথমে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী-জনতার সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারামারি সংঘটিত হয়। এরপর পঞ্চগড় সদর থানায় পৃথক তিন আলাদা মামলা হয়। এতে আটক হয় বিএনপি-জামাতের ৫০ নেতাকর্মী। এজাহারভূক্ত আসামি করা হয় শতাধিক বলে থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়। ওই পৃথক তিনটি মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি ছিল ১২শতাধিক।
এদিকে চলমান আন্দোলনে পর ৪ আগষ্ট বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী- জনতা ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি রেজিয়া ইসলাম এর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়া সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, পৌর মেয়র জাকিয়া খাতুন সহ অনেক নেতাকর্মীর বাড়িতে হামলা, ভাংচুর আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর সড়কে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী-জনতা একত্রিত হয়ে শহর নিয়ন্ত্রনে নেন।ওই দিন দেবীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি গিয়াস চৌধুরী ,সাধারন সম্পাদক হাসনাৎজ্জামান জজ জেলা আ’লীগের সহসভাপতি নুরুজ্জামান দেবীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম এমু, টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম রহমানের বাড়িতে অগিন্সংযোগ ও ভাংচুর করা হয়। গোলামরহমান জানা উপজেলার আট নেতাকর্মীর বাড়িতে এই হামলা ও আগুন দেওয়া হয়।
এরপর ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের দিন পঞ্চগড়- ১ আসনের সাবেক এমপি নাঈমুজ্জামান ভূইঁয়া মুক্তা পঞ্চগড় সদর উপজেলার আহমদ নগর আহমদীয়া মুসলিম জামাতের মসজিদ ও বাড়ি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।এছাড়া ওই দিন সদর উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের আ’লীগের সভাপতি ফজলুল হকের বাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।এছাড়া দেবীগঞ্জ উপজেলার চেংঠি হাজরা ডাঙ্গা ইউনিয়ন বোদা উপজেলার পৌর এলাকার আ’লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িতে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এসব অগ্নিকান্ডে মহিলা এমপির ছেলে ও জেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন স¤্রাটের বাড়িতে থাকা তিনটি মোটর সাইকেল ও দুটি প্রাউভেট গাড়ি ভস্মিভূত হয়। পুড়ে যায় সাতেমরা আ’লীগের সভাপতির মেয়ে জামাইয়ের একটি প্রাইভেট গাড়ি ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের একটি প্রাইভেট গাড়ি পুড়ে যায়।এছাড়া পঞ্চগড়- ২ আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলামের ময়দানদিঘী মহাজন পাড়ার বাড়িতে অগ্নিংযোগ করা হয়। অগ্নিসংযোগ করা হয় তার চাচাতো ভাই ময়দানদিঘী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বারের বাড়িতে। অগ্নিসংযোগ করা হয় বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নে পরিষদ চেয়ারম্যান আবু আনছার মো. শামীমের বাড়িতে। কোটা আন্দোলনের পর ৪ আগষ্ট থেকে পুলিশ নিক্রিয় হয়ে পড়ে। অনেকে নিরাপত্তার অভাবে থানা ত্যাগ করে। ঘটনার এক সপ্তাহ ধরে পুলিশরে নিক্রিয়তায় থানাগুলোতে স্বাভাবিক কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে সড়কে ট্রাফিক পুলিশ সড়কে কর্মরত না থাকায় সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। এর মধ্যে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের সেচ্ছাসেবিরা ট্রাফিক এবং আসনার ভিডিপি সদস্যরা ব্যবস্থাপনায় সড়কে নেমে আসে। শনিবার ও সড়কে যানবাহন সামলাতে দেখা যায়। তারা জানান তারা ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় ছয়দিন ধরে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কাজ পরিচালনা করছেন।বিএনসিসির সদস্য আল মেহেদী হাসান ও তৈমুর রহমান বলেন ‘ আমরা ছয়দিন ধরে পঞ্চগড় শহরে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছি। যতোদিন ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব নিবেনা ততোদিন আমরা এ কাজ চালিয়ে যাবো।
পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা মুঠো ফোনে জানান. থানাগুলোতে সীমিত ভাবে কার্যক্রম চলছে। পরিবেশ স্বাভাবিক হলে সব থানায় আগের মতোই কাজ চলবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত