পঞ্চগড়ে ড্রেজার দিয়ে পাথর উত্তোলন অভিযানে পুলিশের উপর হামলা

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১৯:৫৫ | আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৫, ০০:৪৩

পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়া উপজেলায় ভ্রাম্যমান আদালতে পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের সংগঠন বাজার এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে এ ঘটনাটি ঘটে। ঘটনায় এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনার পরপর ভ্রাম্যমান আদালত বন্ধ করে চলে যান তেতুঁলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ শাহিন খসরু, তেতুঁলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনায়েত কবির সহ পুলিশ-প্রশাসনের লোকজন। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, আবারো পাথর উত্তোলনকে কেন্দ্র করে অশান্ত হয়ে উঠছে তেঁতুলিয়া। অভিযোগ রয়েছে রাতের আঁধারে ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রেজার মেশিনও। গত ১৫ জানুয়ারি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে পাথর কোয়ারিগুলোর ইজারার উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার নোটিশ প্রকাশিত হলে পাথর উত্তোলন শুরু হয় তেঁতুলিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর, গনাগছ, ভদ্রেশ্বর, খুনিয়াগছ, শুকানি, নিজবাড়ি, কালিতলা, কীর্তনপাড়া, ময়নাগুড়ি, বড় বিল্লাহ সহ বিভিন্ন এলাকায় রাতে পানি সেচার নাম করে ড্রেজার মেশিনের ব্যবহার করে পাথর উত্তোলন শুরু হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ শাহীন খসরু ও তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি এনায়েত কবির উপজেলার কীর্ত্তনপাড়া এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের সাইটে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। অভিযানে অবৈধভাবে ব্যবহার করা ড্রেজার মেশিন ও পাইপ ভেঙে ফেলা হচ্ছিল। ইউনুস আলী নামে এক ব্যক্তির সাইটে অভিযান চালাতে গেলে তারা ওই ব্যক্তির লোকজন ও শ্রমিক সহ স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন। এ সময় ক্ষুব্ধ স্থানীয়দের আঘাতে আহত হন তেঁতুলিয়া থানার পুলিশ সদস্য মুক্তাদির। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ফিরে যেতে বাধ্য হয় প্রশাসন ও পুলিশ। ঘটনার পরে পাথর বালি যৌথ ফেডারেশনের পক্ষ থেকে তেঁতুলিয়া উপজেলার সকল স্থানে পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে মাইকিং করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী দাবি করেন, ঘুষ নেয়ার পরেও তেঁতুলিয়া থানার এক পুলিশ মেশিন ভাঙতে আসায় তারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
তেঁতুলিয়া উপজেলা পাথরবালি সরবরাহকারী সমিতির সভাপতি হামিদুল হাসান লাবু বলেন, আওয়ামী লীগের কিছু লোকজন অবৈধ ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে পাথর উত্তোলন করছিল। প্রশাসন অভিযানে আসলে তাদের সাথে পাথর উত্তোলনকারীদের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আমরা ইজারা না হওয়া পর্যন্ত সব ধরণের পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছি। ইজারার পর পরিবেশের শর্ত মেনে পাথর উত্তোলন করতে দেয়া হবে।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি এনায়েত কবির বলেন, আহত পুলিশ সদস্য চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ঘটনায় তদন্ত করে জড়িতদের শনাক্ত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে থানায় মামলার প্রক্রিয়াধীন।
তেতুঁলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, অবৈধ উপায়ে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনের অভিযোগে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় কিছু পাথর শ্রমিক পুলিশের উপর হামলা করে। ভ্রাম্যমান আদালত বন্ধ করে চলে আসা হয়। এঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত