জমি নিয়ে হুমকি ধুমকি মারামারি গুরুত্বর জঘম

পঞ্চগড়ে  কৃষকের সংবাদ সম্মেলন

  পঞ্চগড় প্রতিনিধি  

প্রকাশ: ৭ আগস্ট ২০২৪, ১৮:৩০ |  আপডেট  : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:৪০

পঞ্চগড়ের অমরখানা ইউনিয়নের পূর্ব অমরখানা এলাকায় জমির খুঁটি তোলার অভিযোগ এনে এক কৃষক পরিবারের উপর নির্মম হামলার অভিযোগ উঠেছে। ওই পরিবারটি বৃদ্ধ মা চোখে ও মাথায় প্রচন্ড আঘাত পেয়ে এখন মৃত্যুশয্যায়।এখনো থেমে নেই হুমকি-ধুমকি। 

 বুধবার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান ভুক্তভোগী পরিবারটি। এ সময় অমরখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান নুরুসহ ওই এলাকায় শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, এলাকার জমিরুল ইসলামের পরিবারের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ পঞ্চগড় সদরের শিংপাড়া এলাকার নবী হোসেনের সাথে। অমরখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিরোধীয় ৪ বিঘা জমি মাপজোখ করে সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি পুতেন। কাগজপত্র দেখে বিষয়টি মিমাংসা করার কথা রয়েছে। তবে এর মধ্যেই ওই জমির সীমানা খুঁটি তুলে ফেলার অপবাধ দিয়ে ওই এলাকার কামাল হোসেনের বাড়িতে গত ২৭ জুলাই সন্ধ্যায় পঞ্চগড় থেকে লোকজন ভাড়া করে হামলা করে নবী হোসেন। নির্বিচারে মারধর করা হয় কামালের পরিবারকে। এতে কামালের মা মালেকা বেগমের মাথা ও চোখে এবং কামালের ছোট ভাই আলী আজম মাথায় প্রচন্ড আঘাত পান। মুহুর্তেই তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল ও পরে রংপুরে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসায় আজম কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলেও তার মায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। চিকিৎসক জানিয়েছেন তার বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম। বর্তমানে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।

কামাল হোসেন বলেন, আমাদের সাথে তাদের কোন বিরোধ নেই। জমি নিয়ে বিরোধ জমিরুলের সাথে নবীর। জমিটিও তাদের বাড়ি থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে। কে বা কারা খুটি তুলেছে তা আগে যাচাই করা উচিত ছিলো। তা না করে তারা আমাদের উপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা করেছে। আমার এখন মৃত্যুশয্যায়। আমার ভাইটি এখনো সুস্থ হয়ে উঠতে পারেনি। তারা আমাদেরকে মারধর করে উল্টো আমাদের নামেই মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। 

আহত আলী আজম বলেন, ওই দিন শুনতে পাই আমার ভাইকে তারা মারধর করছে। আমি ও মা তাকে উদ্ধার করতে গেলে আমাদেরকে গাছের ডাল দিয়ে মারধর করে তারা। পুরো শরীর আমার রক্তে ভিজে যায়। আমরা মামলা করেছি। এখনো হুমকি ধামকি দিচ্ছে।  

স্থানীয় জমিরুল ইসলাম বলেন, নবী আমাকে একদিন ফোন করে বলেন আমি যদি কামালকে ফাঁসাতে পারি তাহলে আমাকে মোটা অঙ্কের টাকা দিবে। একথা অডিও রেকর্ড আমার কাছে আছে। কিন্তু আমি কেন কামালকে ফাঁসাবো। আমার সাথে নবীর জমি নিয়ে বিরোধ। কামাল তো তৃতীয় পক্ষ। তার সাথে কিসের বিরোধ আমি জানিনা। নবীর অত্যাচারে অনেকেই অতিষ্ঠ। আমরা তার বিচার চাই।

স্থানীয়রা বাসিন্দা জাহানারা বেগম বলেন, আমি উভয়পক্ষকে থামাতে গেলে তারা আমাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে আমি সরে যাই সেই আঘাত নবীর বোন ফাতেমার মাথায় লাগে। তাদের আঘাতে তাদের লোক আহত হয়েছে। দোষ চাপানো হচ্ছে আমাদের উপড়। 

স্থানীয় বাসিন্দা খোরশেদ আলম বলেন, কিছুদিন পর পরই দেখি লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে এসে নবী হোসেন এক একজনের উপর হামলা করছে। গ্রামের সহজ সরল মানুষকে এভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। আমরা এর বিচার চাই।

এবিষয়ে নুর নবীর মুঠোফোনে কল করা হলে তার জামাই আনিসুর রহমান রিসিভ করেন। তিনি জানান তার শ্বশুর নুর নবী বাসায় ফোন রেখে কোথায় গেছেন তিনি জানেন না। কবে আসবেন কখন আসবেন তাও তিনি জানেন না বলে জানান।অমরখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান নুরু বলেন, বিনা দোষে অমানবিকভাবে লোকজন নিয়ে এই পরিবারটির উপর হামলা করেছে নবী হোসেন। এটি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য না।  

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত