নড়াইলে ৯৮ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সুলতান মেলা’ শুরু হয়েছে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:০৫ |  আপডেট  : ২১ এপ্রিল ২০২৪, ২০:১৫

বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সুলতান মেলা’ শুরু হয়েছে। নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ মাঠের সুলতান মঞ্চ চত্বরে ১৪ দিনব্যাপী এই মেলা বসেছে।

শনিবার (০৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ৩টায়  মেলার উদ্বোধন করেন খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুর রশিদ। মেলা উদ্বোধনের পর সুলতান মঞ্চ চত্বর এলাকা নারী-পুরুষ ও শিশুদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। শীতকে উপেক্ষা করে সুলতানপ্রেমীরা মেলায় ঘুরতে আসেন।

লোকজ সংস্কৃতির এই মেলায় বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক চিত্র প্রদর্শনী, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন গ্রামীণ খেলাধুলা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সুলতান স্বর্ণপদক প্রদান ও সুলতানের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা সভা। আগামী ২০ জানুয়ারি মেলা শেষ হবে।

জেলা প্রশাসক ও সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান জানান, জাঁকজমকপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হওয়া এই মেলায় প্রতিদিন সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও দূর-দূরান্ত থেকে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীর আগমন ঘটবে। মেলায় গ্রামীণ কুঠির শিল্পসহ বিভিন্ন পণ্যের শতাধিক স্টল বসেছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, নড়াইল জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা ড.লুৎফর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ফকরুল হাসান, নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক রবিউল ইসলাম, নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএ বাকি, নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল কবীর টুকু,সম্মিলিত সাংষ্কৃতিক জোটের জেলা সভাপতি মলয় কুমার কুন্ডু, অধ্যক্ষ রওশন আলী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নড়াইল পৌরসভার কাউন্সিলর শরফুল আলম লিটু। জেলা প্রশাসন ও সুলতান ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এস এম সুলতান ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইল শহরের মাছিমদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম শেখ মোহাম্মদ সুলতান। তিনি ১৯৮২ সালে একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক পান। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের ‘রেসিডেন্ট অব আর্টিস্ট’ হিসেবে স্বীকৃতি পান এবং ১৯৮৬ সালে চারুশিল্পী সংসদ সম্মননা পান।

১৯৪৬ সালে ভারতের সিমলায় তার একক চিত্র প্রদর্শনী, লাহোরে ১৯৪৮ সালে, করাচিতে ১৯৪৯ সালে, লন্ডনে ১৯৫০ সালে, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ১৯৭৬ সালে এবং ঢাকাস্থ জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ১৯৮৭ সালে তার চিত্র প্রদর্শিত হয়।

চিত্রাঙ্কনের পাশাপাশি বাঁশি বাজাতেন সুলতান। তার হাতে প্রায়ই বাঁশি দেখা যেত। পুষতেন সাপ, ভল্লুক, বানর, খরগোশ, মদনটাক, ময়না, গিনিপিক, মুনিয়া, ষাঁড়সহ বিভিন্ন পশু-পাখি। তিনি বাড়িতে একটি মিনি চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। হিংস্র প্রাণীকেও তিনি বশে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন।

এছাড়া দেশ-বিদেশে বহুবার সুলতানের ছবি প্রদর্শিত হয়, যা সবার নজর কাড়ে। ১৯৯৪ সালে ১০ অক্টোবর চিরকুমার এই শিল্পী দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্টে ভোগার পর যশোর সম্মিলিত হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। সুলতানের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য নিজ বাড়িতে নির্মিত হয়েছে ‘এস এম সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালা’।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত