নেতাকর্মীদের বুকে সাহস নিয়ে রাজপথে নামতে বললেন মির্জা ফখরুল

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:২৮ |  আপডেট  : ১৭ মে ২০২৪, ১৬:১১

নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। সরকার জোর করে ক্ষমতায় আসতে চাইবে। সবাইকে সতর্ক থাকবে হবে। নেতাকর্মীদের বুকে সাহস নিয়ে রাজপথে নামতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

শনিবার (০৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে সামনে সরকার পতনের একদফা দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আয়োজনে গণমিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

দুই মহানগরের নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে মিছিল নিয়ে আসার পর সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শুরু হয়। মির্জা ফখরুল বক্তব্য শুরু করার সময় হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও লাখো জনতার উপস্থিতিতে জনগণ সরকারকে না বলে দিয়েছে। দেশের মানুষ এ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এরা ক্ষমতায় টিকে থাকতে সকল অনৈতিক কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আজকে খালেদা জিয়াকে আটক রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে। সকল নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

এর আগে, ঢাকা কমলাপুর স্টেশন থেকে পীরজঙ্গী মাজার হয়ে আরামবাগ, ফকিরাপুল হয়ে মহানগর দক্ষিণের গণমিছিল নয়াপল্টনে জড়ো হয়। অপরদিকে রামপুরা ডেল্টা হাসপাতাল থেকে শুরু হয়ে গণমিছিলটি হাজীপাড়া, মালিবাগ চৌধুরীপাড়া, মৌচাক, শান্তিনগর হয়ে নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হয়। দুটি গণমিছিল একজায়গায় মিলিত হলে পুরো নয়াপল্টন লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।

পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে দুটি ট্রাক দিয়ে তৈরি করা অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য রাখেন নেতারা।বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকার জনগণের সবধরনের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। জনগণের আওয়াজ স্তব্ধ করে আবারও এরা ক্ষমতায় আসতে চায়। সংসদ বিলুপ্ত করে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে  দিতে হবে।

মির্জা ফখরুল বক্তব্য দেওয়ার প্রারম্ভে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলে বক্তব্য সংক্ষেপ করেন তিনি। বক্তব্য শেষে তিনি শ্লোগান ধরেন, ‘সকল রাজনৈতিক দল একহও, একহও’।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, জনগণ এই সরকারকে দেখতে চায় না। জনগণ চায় খালেদা জিয়া মুক্তি পাক, তারেক রহমান দেশে এসে ১৮ কোটি মানুষের নেতৃত্ব দেবেন।

তিনি বলেন, একজন মন্ত্রী বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ এক রাতেই শেষ হয়ে যাবে। আমরা বলতে চাই, আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসলে দেশের স্বাধীনতা থাকবে না, সার্বভৌমত্ব থাকবে না। এ সরকারের লজ্জা নেই, থাকলে এত মিথ্যাচার এই করতো না। আজকে আপনাদের টিকে থাকার আর কোনো রাস্তা নেই। আজকে বলেন, বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে। রাজপথে আজ সরকারের লাখো জনতা মাঠে নেমেছে। তাদের মতো আমাদের আন্দোলন কি লগি-বইঠা নিয়ে আন্দোলন!

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, খালেদা জিয়া এখনো মুক্তি পাননি। খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে। খালেদা জিয়া যদি বিদেশে না যেতে পারেন তাহলে সরকারের কাউকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে দেওয়া হবে না। আজকে এত নেতাকর্মী রাস্তায় থাকে পুলিশের এত গুলিও নেই। কর্মীরা আজ কোথায়? আজও কেন আন্দোলন সফল করতে পারছি না। আজ যদি সবাই শপথ নিয়ে মাঠে নামি পুলিশের সাধ্য নেই আমাদের ঘরে ফেরাবে। কর্মীরা যদি নির্ভয়ে রাজপথে নামে তাহলে শেখ হাসিনার গদি ছাড়া কোনো পথ থাকবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, বর্তমান সরকারের সময় আর নেই। আজ দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষ পেট ভরে খেতে পারছে না। আর প্রধানমন্ত্রী নিজের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে রাষ্ট্রের অর্থ খরচ করে বিদেশ ভ্রমণ করছেন। আজকে তরুণ সমাজ আন্দোলনের সাথে থাকুন, অবশ্যই এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় গণমিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আনম সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত