নরেন্দ্র মোদীর নতুন মন্ত্রিসভায় মুসলিম সদস্য নেই কেন?

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৪, ০৮:৪৬ |  আপডেট  : ১৮ জুন ২০২৪, ০৯:৪১

নরেন্দ্র মোদি গত ৯ জুন টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেন। তিনি ছাড়া ভারতীয় জনতা পার্টি এবং এনডিএ জোটের অন্যান্য সহযোগী দলের সদস্য মিলিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ৭১ জন শপথ গ্রহণ করেছেন।বিবিসি বাংলা

গত দুই মেয়াদের তুলনায় এখনও পর্যন্ত এটাই এনডিএ সরকারের সবচেয়ে বড় মন্ত্রী পরিষদ। তবে এই বিরাট আয়তনের নবনির্বাচিত মন্ত্রিসভায় কোনো মুসলিম মন্ত্রী নেই।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো মুসলিম সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় শপথ নেননি।রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও বিরোধী দলের নেতারা মনে করেন, দেশের রাজনীতিতে মুসলমানদের অংশগ্রহণ কমে যাওয়ার এই প্রবণতা উদ্বেগজনক।

যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ বিজেপি। তাদের দাবি, বিজেপি ধর্ম বা বর্ণের ভিত্তিতে ভোটের টিকিট দেয় না এবং তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা পটভূমি নির্বিশেষে আপামর জনসাধারণের স্বার্থে কাজ করে থাকেন।

মন্ত্রিপরিষদ কাঠামো

অষ্টাদশ লোকসভায় বিজেপির ঝুলিতে এসেছে ২৪০টি আসন। আর তাদের এনডিএ জোটের শরিকদের কাছে রয়েছে ২৯৩টি আসন। গত রোববার প্রধানমন্ত্রীসহ মোট ৭২জন মন্ত্রিসভার সদস্য শপথ নিয়েছেন। এর মধ্যে ৬১ জন সদস্য বিজেপির এবং ১১জন সদস্য এনডিএ-র শরিক দলের।

২০১৪ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সেই বছর মন্ত্রিসভায় ২৪ জন ক্যাবিনেট পদমর্যাদাসহ মোট ৪৬ জন সদস্য ছিলেন।

মোদি দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ২০১৯ সালে। সেই দফায় মন্ত্রীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭তে।

এবার সেই সংখ্যা আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে মোট ৭২ জনে। তবে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান পায়নি কোনো মুসলিম সদস্য। ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

নরেন্দ্র মোদি তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর কিরেন রিজিজুকে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। কিরেন রিজিজুর পাশাপাশি জর্জ কুরিয়েনকেও তার দফতরে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কেরালার বিজেপি নেতা জর্জ কুরিয়ান খ্রিস্টান।

 ২০১৪ সালে ড. নাজমা হেপতুল্লা কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। রাজ্যসভার এই সাবেক সাংসদ বর্তমানে মণিপুরের রাজ্যপাল।

২০১৯ সালে, প্রধানমন্ত্রী মোদি দলের রাজ্যসভার সাংসদ মুখতার আব্বাস নকভিকে সংখ্যালঘু বিষয়ক বিভাগের দায়িত্ব দিয়েছিলেন, যদিও তিনি ২০২২ সালে পদত্যাগ করেন। এরপর বিজেপির স্মৃতি ইরানিকে সংখ্যালঘু বিষয়ক দফতরের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়।

কাজেই সেদিক থেকে দেখতে গেলে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই (২০২২ সাল থেকে) বিজেপি সরকারের মন্ত্রীপরিষদে কোনও মুসলিম মন্ত্রী ছিলেন না, সংসদের কোনো কক্ষেই কোনো মুসলিম সাংসদও নেই।

তা ছাড়া তথ্য বলছে, গোটা দেশে বিভিন্ন বিধানসভায় বিজেপির এক হাজারের বেশি বিধায়ক থাকলেও মুসলিম বিধায়ক রয়েছেন মাত্র একজনই।

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যার ১৭.২২ কোটি মানুষ মুসলমান সম্প্রদায়ের এবং এই অঙ্কটা মোট জনসংখ্যার ১৪.২ শতাংশ।

অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে ২৪ জন মুসলিম সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন, যার মধ্যে ২১ জন বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার শরিক দলের।

রাজনৈতিক দলের বক্তব্য

ভারতীয় জনতা পার্টিতে মুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব হ্রাস নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছে বিরোধী দল এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

গত ৩ মে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর বলেন, “সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মুসলিমদের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। দেশে এই প্রথম লোকসভা ও রাজ্যসভায় একজনও মুসলিম সাংসদ নেই। মন্ত্রিসভাতেও কোনো মুসলিম মন্ত্রী নেই। বিজেপি যা করেছে সেটা ভুল।”

তিনি আরও বলেন, পূর্ববর্তী কংগ্রেস সরকারের আমলে দেশের জনসংখ্যার ভিন্ন ভিন্ন স্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।

যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে বিষয়টিকে নজরে রাখা হয়েছে তা হল প্রার্থীর ‘জেতার ক্ষমতা’ আছে কি না। একইসঙ্গে বিজেপি এই অভিযোগও অস্বীকার করেছে যে তারা মুসলিমদের ভোটের টিকিট দিতে চায় না।

অমিত শাহ ২০২২ সালে এক ভাষণে এই অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে বলেছিলেন, তার দলে নির্বাচনি টিকিট দেওয়ার ভিত্তি হলো প্রার্থীর ভোটে জেতার ক্ষমতা। সেই সময় দেশের বিভিন্ন বিধানসভায়, বিশেষত উত্তরপ্রদেশে একজনও মুসলিম প্রার্থীকে টিকিট না দেওয়ার যে প্রশ্ন উঠেছিল, তার প্রেক্ষিতে তিনি তার দলের হয়ে কথা বলতে গিয়ে এই ব্যাখ্যা করেছিলেন।

উত্তরপ্রদেশে চার কোটি মুসলিম রয়েছে এবং তারা রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ১৯ শতাংশ।

বিষয়টা এমন নয় যে বিজেপি এর অতীতে কখনও মুসলিম প্রার্থীদের ভোটের টিকিট দেয়নি। কিন্তু গেরুয়া শিবিরে নির্বাচনি টিকিট পাওয়া মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা ক্রমশ কমতে কমতে শূন্যতে গিয়ে ঠেকেছে।

২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি সাতজন মুসলিম প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল। ২০১৯ সালে ছয়জন মুসলিম প্রার্থীকে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি।

তবে ২০১৪ ও ২০১৯ সালে বিজেপির একজন মুসলিম প্রার্থীও নির্বাচনে জয়ী হতে পারেননি। এবারের লোকসভা ভোটে বিজেপি একজন মুসলিম প্রার্থীকেই টিকিট দিয়েছিল।

বিজেপির টিকিটে ভোটে লড়ে লোকসভায় পৌঁছানো শেষ মুসলিম সাংসদ ছিলেন শাহনওয়াজ হুসেন। ২০০৯ সালে ভোটে জিতেছিলেন তিনি।

শাহনওয়াজ হুসেন মনে করেন হাতে গোনা কয়েকজন মুসলিম প্রার্থীকে ভোটে টিকিট দেওয়া হলেও যারা নির্বাচনে জিতেছেন তাদের নিশ্চিত করা উচিৎ যে সমস্ত সম্প্রদায়ের উন্নয়নের ক্ষেত্রে যেন কোনোভাবেই বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ না নেওয়া হয়।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিজেপি মুখপাত্র ও রাজ্যসভার সাবেক সাংসদ জাফর ইসলাম বলেন, “কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো বিজেপিকে হারাতে এবং তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য মুসলিমদের ব্যবহার করছে।”

এই প্রসঙ্গে তার পালটা যুক্তি, “কোনো দল যদি মুসলিম প্রার্থীকে টিকিট দেয় এবং মুসলিমরাই যদি তাকে ভোট না দেন, তাহলে কোন দল তাদের টিকিট দেবে?”

ভারতের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে মুসলিম জনসংখ্যার নিরিখে কিন্তু সংসদে কিন্তু মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব ছিল না। নির্বাচনে মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পেলেও সংসদে মুসলিম প্রতিনিধিত্ব পাঁচ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে।

পরিসংখ্যান বলছে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মুসলিম প্রার্থী ছিলেন ১১৫ জন, ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৭৮।

অন্যান্য সংখ্যালঘু

শুধু মুসলমানরাই নয়, এনডিএ জোটের ২৯৩ জন সাংসদের মধ্যে একজনও শিখ বা খ্রিস্টান সাংসদ নেই, যারা এবার লোকসভা ভোটে জিতেছেন।

তবে মোদি সরকার তাদের মন্ত্রিসভায় একজন খ্রিস্টান মন্ত্রী এবং দুজন শিখ মন্ত্রীকে জায়গা দিয়েছে। সাংসদ জর্জ কুরিয়েন নবনির্বাচিত মন্ত্রিপরিষদের খ্রিস্টান মন্ত্রী। হরদীপ সিং পুরী এবং রভনীত সিং বিট্টু শিখ সম্প্রদায়ের।

প্রসঙ্গত, রভনীত সিং বিট্টু কিন্তু বর্তমানে লোকসভা বা রাজ্যসভার সদস্য নন। এবার লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিট্টুকে টিকিট দিলেও তিনি ভোটে হেরে যান।

এবারের মন্ত্রিসভায় সমাজের অন্যান্য বঞ্চিত গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সামিল করা হয়েছে। ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোদি সরকারের তৃতীয় দফায় মন্ত্রিসভায় ১০ জন দলিত, ২৭ জন অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি এবং পাঁচজন ধর্মীয় সংখ্যালঘু সাংসদ রয়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পলিটিক্যাল স্টাডিজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক জোয়া হাসান বলেন, “মন্ত্রিসভায় মুসলিম না থাকাটা আশ্চর্যের কিছু নয়।”

তিনি বলেন, “মন্ত্রিসভা যখন জাতি ও সম্প্রদায়ের ব্যাপক প্রতিনিধিত্ব দাবি করে, তখন বিজেপির পক্ষ থেকে একজন মুসলিম মন্ত্রীকেও অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে অনীহা তাদের (বিজেপির) কোনো একটি সম্প্রদায়কে ক্ষমতার বাইরে রাখার রাজনীতিকে প্রতিফলিত করে।”

তার মতে, “মুসলমানদের নামমাত্র প্রতিনিধিত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা মুসলমানদের প্রান্তিককরণের বৃহত্তর প্যাটার্নকে ইঙ্গিত করে।”

জোয়া হাসান আরও বলেন, “এটা কিন্তু গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্বের নীতিকে দুর্বল করে তোলে যে নীতির আওতায় যার অধীনে সমস্ত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়ে থাকে তা তারা যাকেই ভোট দিয়ে থাকুন না কেন।”

“সংসদ ও আইনসভায় প্রত্যেকটা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য। সর্বোচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া থেকে কোনও সম্প্রদায়কে বাদ দেওয়াটা অগণতান্ত্রিক। এটা আগামী দিনে গণতন্ত্রকে দুর্বল করবে।”

বিজেপির ইস্তাহারে বেশ কিছু বিষয়ে নীতি পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যেমন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বা ইউনিফ়র্ম সিভিল কোড যা মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের আমহার্স্ট কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভিজিটিং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর এবং দিল্লির সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের সিনিয়র ফেলো গিলেস ভার্নিয়ার্স বলছেন, “মুসলিমদের বাদ দেওয়ার ব্যাপারে বিজেপির মনোভাব বদলায়নি। এনডিএ শরিকদের মধ্যে মুসলিমদের অনুপস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে মুসলিমদের বাদ দেওয়াটা এখন দলের সর্বত্র একটা গ্রহণযোগ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অন্য একটি বিষয়েরও উল্লেখ করেছেন তিনি।

গিলেস ভার্নিয়ার্স বলেন, “এমনকি কংগ্রেসও খুব বেশি মুসলিম প্রার্থী টিকিট দেয়নি। ২০১৪ সালে দলে মুসলমানদের প্রতিনিধিত্বও হ্রাস পেয়েছে। এর ফলে জনজীবনে মুসলমানদের ভূমিকা হ্রাস করার প্রক্রিয়া আরও দ্রুততা পেয়েছে। ইন্ডিয়া জোটের তুলনামূলক সাফল্যও অন্তর্ভুক্তিমূলক রণকৌশলের একটা ঝুঁকির সৃষ্টি করে যেখানে হিন্দুদের অগ্রাধিকার দেওয়া এবং মুসলমানদের প্রান্তিক করা হয়।"

ইংরেজি সংবাদপত্র হিন্দুস্তান টাইমসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, এনডিএ-র প্রায় ৩৩ শতাংশ সাংসদ অগ্রসর জাতির, ১৬ শতাংশ সাংসদ জাঠ ও মারাঠার মতো মধ্যম বর্ণের এবং প্রায় ২৬ শতাংশ সাংসদ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। এনডিএ সাংসদদের প্রায় ১৩ শতাংশ তফসিলি জাতি থেকে এবং প্রায় ১১ শতাংশ তফসিলি উপজাতির অন্তর্গত।

তুলনামূলকভাবে, বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার প্রায় ১২-১২ শতাংশ সাংসদ অগ্রসর ও মধ্যম বর্ণের, প্রায় ৩০ শতাংশ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি, প্রায় ১৭ শতাংশ তফসিলি জাতি থেকে এবং প্রায় ১০ শতাংশ তফসিলি উপজাতির অন্তর্ভুক্ত।

মুসলমানদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা

বিজেপি লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনে মুসলিমদের টিকিট না দিলেও পসমন্দা মুসলিমদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করেছে।

পসমন্দা বলতে মুসলিম সম্প্রদায়ের সেই গোষ্ঠীকে বোঝানো হয় যারা ওই সমাজে ‘অনগ্রসর জাতির’ বলে বিবেচিত হয়ে থাকেন। পসমন্দা মুসলমানরা ভারতে মোট জনসংখ্যার নিরিখে সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে মনে করা হয়।

২০২৩ সালের উত্তরপ্রদেশের পৌর নির্বাচনে ১৫ হাজার আসনে ভোট হয়েছিল, সেখানে বিজেপি ৩৯৫ জন মুসলিম প্রার্থীকে টিকিট দিয়েছিল। বিজেপির টিকিট পাওয়া ৯০ শতাংশ মুসলিমই পসমন্দা। বিজেপির দিক থেকে এই সংখ্যাকে উল্লেখযোগ্য ঘটনা বলেই বিবেচনা করা যায়।

দু'বছর আগে দিল্লির পৌর নির্বাচনে বিজেপি চারজন পসমন্দা মুসলিমকে টিকিট দিয়েছিল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অসীম আলি বলছেন, “বিজেপি পসমন্দা মুসলিমদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। স্থানীয় নির্বাচনে তাদের টিকিটও দিয়েছে তারা। বিজেপি মনে করে জনগণ তাদের নির্বাচিত পসমন্দা মুসলিম প্রার্থীদের ভোট দিতে পারে কারণ এই নির্বাচনগুলি স্থানীয় ইস্যুতে লড়া হয় এবং এই ভোটে বিজেপি নিয়ন্ত্রিত স্থানীয় প্রশাসনের সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত