ধর্ষণ-হত্যাচেষ্টা মামলার অভিযোগপত্রে পরীমনির নারাজি
প্রকাশ: ১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:৩২ | আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৪, ২৩:৪৬
ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলায় পুলিশের জমা দেওয়া অভিযোগপত্র প্রত্যাখ্যান করে আদালতে নারাজি আবেদন করেছেন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পরিমনি।
বুধবার দুপুরে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯-এর বিচারক মোহাম্মদ হেমায়েত উদ্দিনের আদালতে মামলাটির অভিযোগ গ্রহণ শুনানিতে প্রতিবেদনে নারাজির আবেদন করেন পরীমনি। আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে পরে আদেশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিচারক।
নারাজির জবানবন্দিতে পরীমনি বলেন, আমার জানা মতে মামলাটি ঠিকভাবে তদন্ত হয়নি। মামলার তদন্ত একতরফা হয়েছে। তদন্তে অনেক বিষয় মিসিং আছে। গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) মাধ্যমে ঘটনার পুনর্তদন্তের আবেদন জানান তিনি।
আবেদনপত্রে পরীমনি উল্লেখ করেন, ওই হোটেলের একজন ওয়েটার ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত ছিল। ঘটনার পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তাকে তুলে আনে এবং তিনি তার অপরাধ স্বীকার করেন। পুলিশের জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে তাকে আসামি করা হয়নি। এমনকি তার নামই অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়নি। বাদীপক্ষের সাক্ষী বহ্নির নাম অভিযোগপত্রে রাখা হয়নি এবং তাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদও করেনি। যে কারণে এই মামলার পুনর্তদন্ত হওয়ার প্রয়োজন।
আদালত পরীমনির জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন এবং মামলার নথি পর্যালোচনা করে পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন। একইসঙ্গে মামলার আসামি উত্তরা ক্লাব লিমিটেডের সাবেক সভাপতি নাসির ইউ মাহমুদ ও তার সহযোগী তুহিন সিদ্দিকী অমিকে পূর্ব শর্তে জামিন দেন।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে আদালতে উপস্থিত হন পরীমনি। আদালতে উপস্থিত হন নাসির উদ্দিন ও অমি।
শুনানির শুরুতে আসামিপক্ষের আইনজীবী কাওছার হোসেন বলেন, ‘মামলাটি অভিযোগ গ্রহণের জন্য আছে। আসামিরা আদালতে হাজির হয়েছেন। তারা জামিনে আছেন। যেহেতু মামলাটি ট্রাইব্যুনালে এসেছে, তাই আবার তাদের পূর্বশর্তে জামিন প্রার্থনা করছি।’
তিনি বলেন, ‘বাদীপক্ষ এ মামলায় নারাজি দাখিল করবেন বলে শুনতেছি। তবে আমরা নারাজির কপি পাইনি। আমাদের একটি কপি দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি। নারাজি দাখিল করলে আমরা এ বিষয়ে পরে আবার বলব।’পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী আসামিদের জামিন বাতিলের আবেদন করেন।
গত ১৪ জুন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসির, অমি এবং আরও চার জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন পরীমনি।
সেদিনই উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নাসির ও অমিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বিমানবন্দর থানায় দায়ের করা আরও একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গত ৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
এতে উত্তরা ক্লাব লিমিটেডের সাবেক সভাপতি নাসির ইউ মাহমুদ ও তার সহযোগী তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে (এফআইআর) শাহ শহিদুল আলমের নাম না থাকলেও তদন্তের সময় সম্পৃক্ততা পাওয়ায় পুলিশ অভিযোগপত্রে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করে।
আসামিদের মধ্যে নাসির ও অমি জামিনে আছেন এবং শহিদুলকে অভিযোগপত্রে ‘পলাতক’ দেখানো হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা শহিদুলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত