দেশে স্যালাইনের সংকট নেই: দাবি স্বাস্থ্য অধিদফতরের
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭:১৭ | আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৮
সারাদেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ার সাথে সাথে স্যালাইন সংকট দেখা দিয়েছে। বাজারে স্যালাইন না পাওয়া এবং অতিরিক্ত দামে বিক্রির অভিযোগ করছেন রোগীরা। তবে দেশে স্যালাইনের কোনো সংকট নেই বলে দাবি করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) ডেঙ্গু সংক্রমণ ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়।স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, অসাধু ব্যবসায়ীরা মজুদের মাধ্যমে স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। কৃত্রিম এ সংকট মোকাবিলায় স্যালাইন আমাদানি করা হচ্ছে। প্রথমিক অবস্থায় মোট ৩ লাখ স্যালাইন আমাদানি করার কথা হবে। যার প্রথম চালান আজ রাতে দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, স্যালাইনের বিষয়ে আমরা সব সময় সতর্ক ছিলাম। ডেঙ্গু ক্রাইসিসের আগে থেকেই ঔষুধ প্রশাসনসহ যে সকল প্রতিষ্ঠান স্যালাইন উৎপান করেন তাদের সাথে আমরা বসেছি। আমরা হিসেব করে দেখেছি, হাসপাতাল ও এর বাইরে আমাদের যে পরিমাণ রোগী রয়েছে সে পরিমাণ স্যালাইন আমাদের রয়েছে। এখানে সংকট হওয়ার কথা না। তারপরেও অতিরিক্ত রিজার্ভ হিসেবে আমরা স্যালাইন আমদানি করছি। যা আজকেই বাংলাদেশে ঢুকবে। আমরা সতর্ক আছি যেন স্যালাইন সংকট না ঘটে।
অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সকল ক্রাইসিস মূহুর্তে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী প্রয়োজনীয় উপাদান মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করার চেষ্টা করে। স্যালাইনের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। এটি শক্তহাতে প্রতিরোধ কারার জন্য আমরা সিভিল সার্জনদের নির্দেশনা দিয়েছি। তারা মোবাইল কোর্ট, ভোক্তা অধিকারের সহায়তা নিয়ে স্থানীয় ফার্মেসিসহ সকল স্থানে অভিযান চালাবেন। কেউ যদি অবৈধভাবে স্যালাইন মজুদ করে তাহলে সেসব বাজেয়াপ্ত করাসহ জেল-জরিমানা করা হবে।
ডেঙ্গু রোগীদের ঢাকামুখী না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে অহমেদুল কবীর বলেন, ডেঙ্গু চিকিৎসায় মূল বিষয় রোগীর ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট। অর্থাৎ যখন রোগীর রক্তচাপ কমে যাচ্ছে তখন যথাযথ সময়ে আইভি ফ্লুইড দেওয়া। এর জন্য বড় ধরনের হাসপাতাল বা ইকুইপমেন্টের প্রয়োজন নেই। বরং প্রান্তিক পর্যায়ের রোগীদের মধ্যে যারা শকে আছেন, তাদের যদি ঢাকায় পাঠানো হয়, তাহলে আসার এ লম্বা সময়ে রোগীকে হারানোর সম্ভাবনা থাকে। তাই রোগী যেখানে আছে সেখানে যদি চিকিৎসা নেওয়া হয় তাহলে রোগী বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
ডেঙ্গু চিকিৎসায় কোনো সংকট নেই জানিয়ে স্বাস্থ্যের এই কর্তা ব্যক্তি আরও বলেন, সকল পর্যায়ের চিকিৎসকদের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। উপজেলা, জেলা পর্যায় থেকে শুরু করে মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত যেখানে আছেন সেখানেই চিকিৎসা গ্রহণ করুন। আমাদের সকল প্রস্তুতি আছে। সকল হেলথকেয়ার প্রোভাইডারের সাথে এ বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে হাসপাতালে স্যালাইন সরবরাহের তথ্য তুলে ধরে হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, ডেঙ্গু রোগী সারাদেশেই পাওয়া যাওয়ায় কিছু স্যালাইন সংকট দেখা দিয়েছে। কিন্তু আমাদের কাছে থাকা তথ্য বিবেচনা করে এটিকে কৃত্রিম সংকট বলেই মনে হয়। এরপরেও মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের সিদ্ধান্তে জরুরি ভিত্তিতে কিছু স্যালাইন আমদানি করা হয়েছে। আজকে রাতে এ স্যালাইন দেশে ঢুকবে। আগামীকালের মধ্যে যেসব জায়গায় ঘাটতি আছে সেখানে তা পৌঁছে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে আমরা একটি তালিকা তৈরি করেছি।
আগামী ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে মোট তিন লাখ স্যালাইন আসবে। প্রয়োজন অনুযায়ী তা সরবরাহ করা হবে। এছাড়া আট বিভাগের স্বাস্থ্য বিভাগীয় অফিসে বাফার স্টক হিসেবে স্যালাইন রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত