দৃষ্টি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে দুই কোটি মানুষকে চক্ষু সেবা দেওয়ার উদ্যোগ  

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২২, ১৯:২২ |  আপডেট  : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১৭

[ঢাকা, ১৭ মে, ২০২২] মেটলাইফ ফাউন্ডেশন ও এসিলরলুক্সটিকার যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে ২০২৩ সালের মধ্যে ৮০০ এর ও বেশি দৃষ্টি উদ্যোক্তা তৈরী করার মাধ্যমে সামগ্রিকভাবে ২ কোটি মানুষের জন্য চহ্মু স্বাস্থ সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে ।
 
যৌথ ভাবে এ উদ্যোগে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং স্থানীয়ভাবে এ উদ্যোগটির বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম উন্নয়ন সংস্থা টিএমএসএস (ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ)। যে দৃষ্টি উদ্যোক্তারারা জনগোষ্ঠীকে প্রাথমিক চহ্মু সেবা দেবেন তাদের নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করবে টিএমএসএস। টিএমএসএস যশোর, কুমিল্লা, খুলনা এবং চট্টগ্রাম জুড়ে চারটি নতুন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করবে এবং ৮০০ এর বেশি নতুন দৃষ্টি উদ্যোক্তাকে  প্রশিক্ষণ দিবে যার ফলে সামগ্রিক ভাবে ২ কোটি বাংলাদেশি টেকসই চহ্মু চিকিৎসা সেবা পাবেন।
 
২০২১ সালে শুরু হওয়া এ প্রোগ্রামটি ইতোমধ্যে ১২৫ জনেরও বেশি দৃষ্টি উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে, যারা তাদের কমিউনিটির মানুষকে সেবা প্রদান করছন ।  


 
কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারি মানুষকে আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন করেছে; বিশেষ করে যারা বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলে বসবাস করে তাদের ওপর এর প্রভাব পড়েছে। দৃষ্টি সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে এমন মানুষের সংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। এ উদ্যোগের মাধ্যমে  গ্রামীণ এলাকায় বেকার এবং কর্মসংস্থানহীন যুবকদেরকে দৃষ্টি উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা হবে এবং তারা দৃষ্টি পরীক্ষা এবং চশমা তৈরি সহ অনেককে চোখের যত্নে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করতে পারবেন।
 
এ নিয়ে মেটলাইফ বাংলাদেশের মুখ্য  নির্বাহী কর্মকর্তা, আলা আহমদ বলেন, “মেটলাইফ বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সামগ্রিক উন্নয়নে কাজ করে চলছে । মেটলাইফ ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এ প্রোগ্রামটি দেশের অত্যন্ত গুরুত্তপূর্ণ  স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রয়োজন মেটাতে পারবে বলে আমরা  বিশ্বাস করি।”
 
এসিলরলুক্সটিকার হেড অফ মিশন ও সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট ফান্ড এর চেয়ারম্যান, অনুরাগ হান্স  বলেন, “বাংলাদেশে ভিশন কেয়ার দক্ষতা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি প্রান্তিক সম্প্রদায়ের জন্য অসাধারণ ভ্যালু যোগ করেছে; এটি শুধুমাত্র প্রাথমিক চক্ষু সেবা প্রদান করে না বরং টেকসই জীবিকা নির্মাণেও সহায়তা করে। আমরা মেটলাইফ ফাউন্ডেশন এবং টিএমএসএস-এর সাথে যৌথ অংশীদারিত্বে বাংলাদেশে এই কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে পেরে আনন্দিত।”
 
এ নিয়ে টিএমএসএসের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. হোসনে-আরা বেগম বলেন, “টিএমএসএস সক্রিয়ভাবে সামগ্রিক কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে কাজ করছে এবং মানুষের জীবন ও জীবিকাকে সমৃদ্ধ করার এই উদ্যোগের অংশীদার হতে পেরে আমরা আনন্দিত।”

সম্পাদকের জ্ঞাতার্থে
বাংলাদেশে ভিশন কেয়ার স্কিলস ট্রেনিং প্রোগ্রামটি অস্ট্রেলিয়ার ডিপার্টমেন্ট অফ ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেডের সাথে অংশীদারিত্বে এসিলরলাক্সোটিকা দ্বারা ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে প্রথম চালু হয়েছিল। কর্মসূচীটির লক্ষ্য হল বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে স্বল্প আয়ের মানুষদের দৃষ্টিশক্তির যত্নের জন্য সুলভ সমাধান তৈরি করা, যার আওতায় তরুণদেরকে প্রাথমিক দৃষ্টি পরিচর্যা প্রদানকারী হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যাতে তারা দৃষ্টিসংক্রান্ত সমস্যা শনাক্ত করতে এবং চশমার পরামর্শ প্রদান করতে পারে। চালু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে ৭০০ জনেরও বেশি প্রাথমিক দৃষ্টি পরিচর্যা প্রদানকারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যার ফলে প্রায় ১ কোটি মানুষ দৃষ্টিশক্তির যত্নে পরামর্শ লাভ করেছেন, যেমন উদাহরণ এর আগে কখনো তৈরি হয়নি।

টেকসই জীবিকা তৈরি করা এবং দৃষ্টি পরিচর্যা সুবিধার পাশাপাশি, প্রোগ্রামটি লিঙ্গ সমতা এবং নারীর ক্ষমতায়নের প্রসঙ্গেও সাফল্য লাভ করেছে। যখন প্রোগ্রামটি প্রথম চালু হয়েছিল, তখন মাত্র কয়েকজন মহিলা এর সাথে যুক্ত ছিলেন এবং তারাও প্রায়শই প্রোগ্রামের মাঝামাঝি অবস্থাতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তেন। একটি ফিল্ড স্টাডিতে বাড়ির বাইরে কাজ করা নারীদের জীবনে পরিবার এবং সমাজ কর্তৃক সৃষ্ট বাধাগুলোকে মূল সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নারীদেরকে দৃষ্টি পরিচর্যা প্রদানকারী হিসেবে সফলভাবে আকৃষ্ট করতে এবং আগ্রহী করে রাখতে বর্তমানে তাদের পরিবার এবং সমাজকেও এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ করা হচ্ছে। সম্ভাব্য পরিচর্যা প্রদানকারী এবং তাদের পরিবার এবং সমাজের মানুষদেরকেও সফল নারী প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে দেখা করতে এবং তাদের কথা শুনতে উৎসাহিত করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে মোট প্রাথমিক দৃষ্টি পরিচর্যা প্রদানকারীদের ১২ শতাংশ নারী।

মেটলাইফ ফাউন্ডশন

মেটলাইফ ফাউন্ডেশনে আমরা বিশ^জুড়ে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য সুযোগ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা মেটলাইফের কর্মীদেরকে সেচ্ছাসেবামূলক কাজে নিয়োজিত করার পাশাপাশি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক উদ্যোগসমূহের সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সমাধান এবং শক্তিশালী কমিউনিটি সৃষ্টির জন্য কাজ করি। মেটলাইফের কর্পোরেট অবদান এবং কামিউনিটিতে অংশগ্রহণ করার সুদীর্ঘ ঐতিহ্য অব্যাহত রাখার উদ্দ্যেশ্যে ১৯৭৬ সালে যাত্রা শুরু করে মেটলাইফ ফাউন্ডেশন। ২০২০ সালে যে সকল দেশে মেটলাইফ রয়েছে সে সকল দেশে, কমিউনিটিতে ইতিবাচক অবদান রাখার লক্ষ্যে মেটলাইফ ফাউন্ডেশন ৯০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অনুদান প্রদান এবং নানা উন্নয়নমূলক প্রোগ্রামে ৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে। আমাদের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা বিশে^র ৪২ টি দেশের ১৩.৪ মিলিয়নের বেশি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষকে উপকৃত করেছে। বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভিজিট করুন: MetLife Foundation
 
এসিলরলাক্সোটিকা প্রসঙ্গে
অপথালমিক লেন্স, ফ্রেম এবং সানগ্লাসের নকশা, উৎপাদন এবং বিতরণে এসিলরলাক্সোটিকা বিশ্বব্যাপী অন্যতম শীর্ষস্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠান। ২০১৮ সালে গঠিত এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য হল বিশ্বব্যাপী মানুষকে আরও ভালো দেখতে, আরও উপভোগ করতে এবং তাদের বর্ধনশীল দৃষ্টিশক্তির চাহিদা এবং ব্যক্তিগত শৈলীর আকাঙ্ক্ষাগুলিকে স্বীকৃতি দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনযাপন করতে সহায়তা করা। প্রতিষ্ঠানটি দুটি শীর্ষস্থানীয় প্রস্তুতকারকের পরিপূরক দক্ষতাকে সমন্বিত করে, যার একটি উন্নত লেন্স প্রযুক্তিতে এবং অন্যটি আইকনিক চশমার কারুকার্যে দক্ষ, যার মাধ্যমে দৃষ্টি পরিচর্যার জন্য নতুন শিল্পের মান নির্ধারণ করা এবং সেই সাথে ভোক্তাদের অভিজ্ঞতা উন্নত করা সম্ভব হয়। রে-ব্যান এবং ওকলি’র মত খ্যাতনামা চশমার ব্র্যান্ড, ভ্যারিলাক্স এবং ট্রান্সিশন্স’এর মত লেন্স প্রযুক্তি ব্র্যান্ড এবং সানগ্লাস হাট, লেন্সক্রাফটারস, সালমইরাঘি অ্যান্ড ভিগানো এবং গ্র্যান্ডভিশন সহ বিশ্ব-মানের রিটেইল ব্র্যান্ডগুলি এসিলরলাক্সোটিকা’র অংশ। প্রায় ১৮০,০০০ জন কর্মী এসিলরলাক্সোটিকায় কর্মরত রয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভিজিট করুন – www.essilorluxottica.com
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত