ডেঙ্গুর তথ্য দিলে ১৫ মিনিটে সেবা দেয়া হবে- মেয়র তাপস

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৪, ১৭:২৭ |  আপডেট  : ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৬

ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে ঢাকাবাসীকে এডিস মশার প্রজননস্থল সম্পর্কিত এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদেরকে রোগীর সঠিক ও যথাযথ তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। প্রয়োজনীয় তথ্য দিলে ১৫ মিনিটে সংশ্লিষ্ট সেবা দিতে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সোমবার (১০ জুন) সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার ‘সব সরকারি হাসপাতালে বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন’ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাদসিক মেয়র তাপস এসব কথা বলেন।

মেয়র তাপস বলেন, ‘এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস ও ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে মশককর্মী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নিয়ে আমরা যৌথ অভিযান চালাচ্ছি। আমরা যেমন পরিষ্কার করে দেবো, তেমনই মশার লার্ভাও ধ্বংস করবো। লার্ভা ধ্বংস করার মাধ্যমেই এডিস মশার বিস্তার সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। সেজন্য আমি সবাইকে আহ্বান করবো, আপনারা আমাদেরকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন। তথ্য পাওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যে সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত আছি।’

মশক নিধনে সবাইকে সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, ‘মশক নিধনে আমাদের নিয়মিত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে পর্যাপ্ত মানসম্পন্ন কীটনাশক, সরঞ্জামাদি ও জনবল রয়েছে। কিন্তু বাড়ির আঙ্গিনা, ছাদ ও চারপাশে যদি মশার প্রজননস্থল সৃষ্টি হয়, সে তথ্য আমাদের সরবরাহ করার নিবেদন রইলো। যত বেশি তথ্য পাবো, মাঠ পর্যায়ে আমাদের কার্যক্রম আরও বেশি কার্যকর হবে। আমরা মশক নিধন কার্যক্রম আরও বেশি ফলপ্রসূ করতে পারবো।’

তাপস বলেন, ‘‘উপস্থিত সাংবাদিক ভাই-বোনেরা দেখেছেন— এখানে অভ্যন্তরীণ যে নর্দমা রয়েছে, তাতে পানি প্রবাহ না থাকার কারণে পানি জমে আছে। এতে এডিস মশার উৎস তৈরি হয়। আবার সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো পরিত্যক্ত মালামালও রেখে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকেও কিন্তু উৎস সৃষ্টি হয়। তাই সবাইকে ‘নিয়মিত প্রতিদিন, জমা পানি ফেলে দিন’ এই প্রতিপাদ্য মানার অনুরোধ করছি।’’

এ সময় ডেঙ্গু রোগীর অপর্যাপ্ত তথ্য সরবরাহ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মন্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাপস বলেন, ‘সিটি করপোরেশন তার দায়িত্ব সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল এবং মাঠ পর্যায়ে তা যথাযথভাবেই পরিপালন করছে। আপনারা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে দেখুন। অনেক দেশেই আমাদের চেয়ে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি, কিন্তু মৃত্যুর হার অনেক কম। আমরা প্রতিরোধ পযার্য়ে কাজ করি। কিন্তু ডেঙ্গু রোগীর সঠিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।’

যথাযথ ও নিয়মমাফিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার পরও কারও যদি অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু হয়, তাহলে জনগণ সেটা বিবেচনা করেন। সেবা পেয়েছেন বলে উপলব্ধি করেন। কিন্তু গাফিলতি, অবহেলা কিংবা সঠিকভাবে চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে যদি কোনও রোগীর মৃত্যু হয়— তাহলে জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এছাড়া হাসপাতালের বহির্বিভাগে যেসব রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়, তাদের তথ্য আমাদেরকে দেওয়া হয় না। যদিও সেসব রোগী ও ডেঙ্গু রোগের সম্ভাব্য উৎসস্থল এবং তথ্যের অভাবে তারা আমাদের কার্যক্রমের বাইরে থেকে যান। সেই জায়গাতে আমরা মনে করি, দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ আরও দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

অনুষ্ঠানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, যেকোনও রোগের ক্ষেত্রে আমরা যদি তা প্রতিরোধ করতে পারি, তাহলে এতে খরচ কম হয়, দুর্ভোগ কম হয়। ডেঙ্গু রোগেও সেটা প্রযোজ্য। এটি মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ। আর ভাইরাসের কোনও ওষুধ নেই। কাজেই আমি সবাইকে অনুরোধ করবো, যেন ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে আমরা সজাগ থাকি। সিটি করপোরেশন কমন স্পেসগুলো পরিষ্কার করবে এবং সেখানে যেন পানি না জমে, সে ব্যবস্থা করবে। কিন্তু আমাদের বাড়ি, আঙ্গিনা ও চারপাশ আমাদেরকেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তাই, ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে নিজ স্বার্থেই আমাদেরকে সচেতন হতে হবে।’

অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

 

সান

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত