টানা অনাবৃষ্টির কারণে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে মারাত্মক ধস

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২ মে ২০২৩, ১১:২০ |  আপডেট  : ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:২৬

কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র [ফাইল ছবি]

২৪২ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সোমবার [১ মে] বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট। উৎপাদন কমেছে ২১৭ মেগাওয়াট। টানা অনাবৃষ্টির কারণে কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে মারাত্মক ধস নেমেছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী ১০ থেকে ১২ দিন বৃষ্টি না হলে বন্ধ হয়ে যাবে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সবকটি ইউনিট।

কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আবদুজ্জাহের বলেন, ‘কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পাঁচটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৪২ মেগাওয়াট। সোমবার চালু থাকা একটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ২৫ মেগাওয়াট। আজ রুলকার্ভ অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা ছিল ৭৫.১৪ এমএসএল [মেইন সি লেভেল]। অথচ এ সময়ে পানির উচ্চতা থাকার কথা ছিল ৮২ এমএসএল।’

তিনি বলেন, ‘টানা অনাবৃষ্টির কারণে পানির স্তর কমে গেছে। তবে কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটে যান্ত্রিক কোনও ত্রুটি নেই। বর্তমানে যে পরিমাণ পানি কাপ্তাই হৃদে আছে তা দিয়ে আরও ১০-১২ দিন একটি ইউনিট চালু রাখা যাবে। পানির স্তর ৭০ এমএসএলে নেমে এলে বন্ধ হয়ে যাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সবকটি ইউনিট। তাই আমরা এখন বৃষ্টির জন্য আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি। বৃষ্টি হলেই এ সমস্যা কাটবে।’

কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র জানায়, কোনও প্রকার জ্বালানি ছাড়াই শুধুমাত্র কাপ্তাই হৃদের পানি ব্যবহার করে দেশের সবচেয়ে কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ইউনিটে খরচ পড়ে মাত্র ৩৫ পয়সা। পাঁচটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা ২৪২ মেগাওয়াট। এর মধ্যে এক নম্বর ইউনিটে ৪৬, দুই নম্বর ইউনিটে ৪৬, তিন নম্বর ইউনিটে ৫০, চার নম্বর ইউনিটে ৫০ ও পাঁচ নম্বর ইউনিটে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা রয়েছে

এদিকে, কাপ্তাই হ্রদ থেকে পর্যাপ্ত পানি না ছাড়ার কারণে জোয়ারের সময় কর্ণফুলী হয়ে হালদা নদীতে ঢুকছে সাগরের লোনা পানি। এসব লোনা পানি পরিশোধনের পরও লবণযুক্ত পানি পাইপলাইন দিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম নগরের ওয়াসার গ্রাহকের কাছে। পানিতে অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে ওয়াসার পানি মুখে নেওয়া যাচ্ছে না। এ সমস্যা সমাধানে ক্ষোভে ফুঁসছেন নগরবাসী।

চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পানি ছাড়া হচ্ছে না কর্ণফুলী নদীতে। এতে নদীর উজানে মিঠা পানির প্রবাহ কমে গেছে। কর্ণফুলী হয়ে হালদা নদীতে ঢুকছে সাগরের লোনা পানি। পানি পরিশোধনের পরও থেকে যাচ্ছে অতিরিক্ত লবণ।’

উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর ওপর বাঁধ দেওয়া হয়। এ বাঁধের ফলে ২৫৬ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে বিশাল জলাধার সৃষ্টি হয়। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ মানবসৃষ্ট হ্রদ।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত