জিম ক্যারির রাতের ঘুম হারাম করতে পারে শ্রী দেবী

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৩, ১৬:০১ |  আপডেট  : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫০

রেডিফ বলে, "শ্রী এই (মি. ইন্ডিয়া) চলচ্চিত্রে সম্পূর্ণ কৃতিত্ব লাভের অধিকারী", অন্যদিকে দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া শ্রীদেবীর চার্লি চ্যাপলিনকে অনুকরণের অংশটুকুকে "তার অভিনীত সবচেয়ে প্রফুল্ল কাজ" বলে উল্লেখ করে। রেডিফ তাদের 'সুপার সিক্স কৌতুক অভিনেত্রী' তালিকায় শ্রীদেবীর নাম অন্তর্ভুক্ত করে লিখে, "তার গতিশীল মুখাভঙ্গী জিম ক্যারির রাতের ঘুম হারাম করতে পারে" এবং "তার সবচেয়ে বড় দিক হল ক্যামেরার সামনেও সম্পূর্ণ একাকীত্বের মত করে অভিনয় করার দক্ষতা।

এই চলচ্চিত্রের "হাওয়া হাওয়াই" গানের নৃত্যটিকে দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া "শ্রীদেবীর অন্যতম স্মরণীয় নৃত্য" বলে উল্লেখ করে। এছাড়া "কাটে নহী কাট তে" গানেও তাকে দেখা যায়, ফিল্মফেয়ার এই গানে শ্রীদেবীকে "নীল শাড়িতে সত্যিকারের দেবীর মত লাগছিল" বলে উল্লেখ করে। রেডিফ তাদের 'সেরা ২৫ শাড়ি দৃশ্য' তালিকায় এই গানটিকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং শ্রীদেবীর "মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে রেখেও নিজেকে যৌন আবেদনময়ী দেখানোর সামর্থ্যের" প্রশংসা করে। বক্স অফিস ইন্ডিয়া অনুসারে মিস্টার ইন্ডিয়া ছবির সফলতা শ্রীদেবীকে তার সমসাময়িক জয়া প্রদা ও মীনাক্ষী শেষাদ্রির উপর কর্তৃত্ব স্থাপন করছিলেন।

১৯৮৬ সালে শ্রীদেবীকে সর্প বিষয়ক কাল্পনিক চলচ্চিত্র নাগিনায় অভিনয় করতে দেখা যায়। এতে তিনি "ইচ্ছাধারী নাগিন" চরিত্রে অভিনয় করেন, যে সাপ থেকে নারীতে পরিণত হতে পারে। এটি ছিল সে বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র এবং বক্স অফিস ইন্ডিয়া তাকে "অবিসংবাদিত এক নম্বর" বলে অভিহিত করে। ইয়াহু! ছবিটিকে অন্যতম সেরা সর্প বিষয়ক কাল্পনিক চলচ্চিত্র বলে উল্লেখ করে। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার "শীর্ষ ১০ সর্প বিষয়ক হিন্দি চলচ্চিত্র" তালিকায় নাগিনা ছবিটি অন্তর্ভুক্ত হয়। শ্রীদেবীর "মেঁ তেরি দুশমন" গানের নৃত্য বলিউডের অন্যতম সেরা সর্প নৃত্য বলে উল্লেখ করে দেশি হিট্‌স লিখে, "এটি শ্রীদেবীর অন্যতম সেরা প্রতীকী নৃত্য যা এখনো ভক্তদের গায়ের লোম দাঁড় করিয়ে দেয়" এবং আইডিভা লিখে, "এটি চলচ্চিত্র কিংবদন্তীর একটি উদাহরণ।

১৯৭৯ সালে সোলভা সাওয়ান চলচ্চিত্র দিয়ে শ্রীদেবীর হিন্দি চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে অভিষেক হয়, এই চলচ্চিত্রটি ছিলো শ্রীদেবীর নিজেরই অভিনয় করা ১৯৭৭ সালের তামিল চলচ্চিত্র ১৬ ভায়াথিনিলে এর পুনঃনির্মাণ। চার বছর পর তিনি জিতেন্দ্রর বিপরীতে হিম্মতওয়ালা চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হন। চলচ্চিত্রটি ১৯৮৩ সালে মুক্তি পায় এবং সে বছরের অন্যতম সেরা ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্র হয়ে ওঠে। হিম্মতওয়ালা চলচ্চিত্রের "ন্যায়নোঁ মেঁ সাপনা" গানটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই চলচ্চিত্রের সাফল্যের ফলে শ্রীদেবী বলিউডে প্রতিষ্ঠিত শিল্পীর মর্যাদা লাভ করেন এবং তার বিখ্যাত "থান্ডার থাইস" উপনাম অর্জন করেন।

শ্রীদেবী কাপুর (জন্মনাম শ্রী আম্মা ইয়াঙ্গের আয়্যাপান) একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী যিনি তামিল, তেলুগু, হিন্দি, মালয়ালম এবং কিছু সংখ্যক কন্নড় চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রে প্রথম নারী সুপারস্টার বিবেচিত হন। তিনি একাধিক পুরস্কার অর্জন করেছেন, তন্মধ্যে রয়েছে একটি করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার, তামিলনাড়ু রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার, নন্দী পুরস্কার, তিনটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, একটি ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কার ও তিনটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণ। পাঁচ দশকের অভিনয় জীবনে তিনি সংগ্রামী নারী চরিত্রে অভিনয়ের জন্য পরিচিত এবং তিনি স্ল্যাপস্টিক হাস্যরস থেকে শুরু করে মহাকাব্যিক নাট্যধর্মীসহ বিভিন্ন ধারার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। শ্রীদেবী ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকের ভারতের বিনোদন শিল্পের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক প্রাপ্ত নারী ছিলেন এবং তাকে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ও সবচেয়ে প্রভাবশালী অভিনেত্রী হিসেবে গণ্য করা হয়।

বিনোদন শিল্পে তার অবদানের জন্য ২০১৩ সালে ভারত সরকার তাকে দেশটির চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত করে। এছাড়া তিনি তামিল নাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশ ও কেরালা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সম্মানসূচক পুরস্কার লাভ করেন। ভারতীয় চলচ্চিত্রের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ২০১৩ সালে সিএনএন-আইবিএনের এক জরিপে তিনি '১০০ বছরে ভারতের সেরা অভিনেত্রী' হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন চলচ্চিত্র প্রযোজক বনি কাপুরের স্ত্রী।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত