কৃষক লীগের নেতা হত্যা
জামিনে এসেই হত্যা মামলার আসামিরা মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকি
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২২, ১৯:২৫ | আপডেট : ৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩৮
মাদারীপুরের কালকিনিতে কৃষক লীগ নেতা মানিক সরদার হত্যা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য জামিনে মুক্তি আসামিরা বাদী ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার বিকেলে মামলার বাদী নিহতের স্ত্রী সীমা খানম এ অভিযোগ করেন।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি কালকিনি উপজেলা কৃষক লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মানিক সরদারকে (৪০) ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে আলীনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ওরফে মিলন সরদারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দুদিন পরে হাফিজুরকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নামে কালকিনি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী সীমা খানম।
নিহতের স্ত্রী সীমা খানম বলেন, ‘আমার স্বামী (মানিক সরদার) হত্যার এক মাস পার হয়ে গেলেও মামলায় পুলিশের অগ্রগতি নেই। পুলিশ শুরুতে তৎপর থাকলেও এখন তারাও চুপ। আসামিরা মামলার হওয়ার কয়েকদিন পলাতক ছিল। গত দুই সপ্তাহ ধরে তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। উচ্চ আদালত থেকে তারা জামিন নিয়ে এখন এলাকায় আমাকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে। মাঝে মধ্যেই ফোন করে মামলা তুলে নিতে বলছে। মিমাংশার কথা বলছে। তাদের কথা না শুনলে পরিবারসহ আমাকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।’
সীমা খানম আরও বলেন, ‘আমরা খুব অসহায় অবস্থায় আছি। বিচার পাবো কিনা জানি না। তবে জীবন চালাতে খুব হিমশিম খাচ্ছি। আমার শাশুড়ি তার ছেলেকে হারিয়ে এখন পুরোপুরি পাগল। শ^শুর বয়স্ক মানুষ। ঘরে আমি আমার ছোট ছোট দুজন ছেলে মেয়ে নিয়ে থাকি। প্রতিটি দিন আমাদের ভয়ে ভয়ে থাকতে হচ্ছে।’
হাতাশা কথা জানিয়ে মামলার বাদী বলেন, ‘মামলার যে অবস্থায় আছে, তাতে আসামিরা ভয়ের বদলে সাহস পাচ্ছে। এই অবস্থায় আমরা কোথায় যাবো? কার কাছে বিচার চাইবো? আমাদের বিচার হবে না। আমাদের লোক নাই, টাকাও নাই। সব বিচার এখন আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিয়েছি।’
পুলিশ মামলার গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করে সীমা খানম বলেন, ‘পুলিশের কাছে গেলে তারা বলে মামলা ডিবি পুলিশ তদন্ত করছে। ডিবির কাছে গেলাম তারাও কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না। শুধু বলে, বিচার হবে। অথচ, মামলার এক মাস হয়ে গেল, সবাই সান্ত্বনা ছাড়া আর কিছুই দিচ্ছে না। আমরা যে কি অসহায় অবস্থায় আছি, তা কাউকে বলে বুঝাতে পারবো না।’
আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পরাজয় ও জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে খুন হন কৃষক লীগ নেতা মানিক সরদার। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের পরেই ওই এলাকায় সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমানের বসতঘর ও ইটেরভাটায় আগুন ধরিয়ে দেন স্থানীয়রা।
জানতে চাইলে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসতিয়াক আসফাক বলেন, ‘আরও দুই সপ্তাহ আগেই মানিক হত্যা মামলাটি জেলার গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করছে। তবে আসামিরা যে বাদীকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে তা আমাদের কাছে কেউ জানায়নি। বাদী পুলিশের কাছে অভিযোগ দিলেই হুমকিদাতাকে খুঁজে বের করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, আসামিরা সবাই উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের জন্য জামিন নিয়েছেন। তাই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না।’
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত