জামালপুরে গর্ভবতী স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড

  ছাইদুর রহমান,জামালপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:২৫ |  আপডেট  : ৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:০৯

জামালপুরে যৌতুকের জন্য গর্ভবতী স্ত্রী তাহমিনা জান্নাতকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্বামী উজ্জল মাহমুদকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই আদালতের বিচারক মো: রফিকুল ইসলাম এই আদেশ দেন। 

বাদীপক্ষের আইনজীবী ফজলুল হক ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জামালপুর সদরের মেষ্টা ইউনিয়নের দেউলিয়াবাড়ি পূর্বপাড়া এলাকার মো: মজনু মিয়ার ছেলে উজ্জল মাহমুদের সাথে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার জোড়খালী এলাকার মো: ইব্রাহিম খলিলের মেয়ে তাহমিনা জান্নাতের বিয়ে হয়। 

বিয়ের পর থেকেই উজ্জল মাহমুদ যৌতুকের জন্য তার স্ত্রী তাহমিনা জান্নাতকে নির্যাতন করে আসছিলো। বিয়ের দু’মাসের মধ্যে তাহমিনা জান্নাত গর্ভবতী হয়ে পড়লে যৌতুকের টাকা না এনে দিলে গর্ভপাত করানোর হুমকি দেয় উজ্জলসহ তার পরিবার। 

গত ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিল রাতে উজ্জল মাহমুদ ও তার পরিবার ৫ লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য তাহমিনা জান্নাতকে আবারো চাপ দেয়, এতে অপরগতা প্রকাশ করলে গর্ভবতী তাহমিনার উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়।

এ সময় তাহমিনার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাহমিনাকে মুমুর্ষূ অবস্থায় উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

ঘটনার পরদিন ১৯ এপ্রিল নিহত তাহমিনা জান্নাতের বাবা মো: ইব্রাহিক খলিল বাদী হয়ে উজ্জল মাহমুদসহ তার পরিবারের ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে জামালপুর সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। 

জামালপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতের বিচারক মো: রফিকুল ইসলাম ১৩ জন আসামির মধ্যে নিহতের স্বামী উজ্জল মাহমুদকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন। বাকিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১২ আসামীর সবাইকে খালাস প্রদান করেন বিচারক।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট ফজলুল হক ও আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হাসান পলাশ। এই রায় ও আদেশে রাস্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত