জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্তা ব্যক্তিদের উন্নয়ন জরুরি

  হাসান তামিম

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২১, ০৯:৪৪ |  আপডেট  : ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২২:৩৭

বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন হয়েছে তা সকলের নিকট  দৃশ্যমান। তবে  বাংলাদেশে কিছু জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনে কতটুকু উন্নয়ন হয়েছে? যারা দলকানা কিংবা হাইব্রিড তারাই শুধুমাত্র বলবে সকল ক্ষেত্রেই উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশ ভারতকে ছাড়িয়ে ইউরোপ আমেরিকা সিংগাপুর হয়ে গিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে দৃশ্যমান উন্নয়ন দিয়ে সামগ্রিক উন্নয়ন কোনভাবেই বলা যায় না। 

বাংলাদেশের প্রশাসনে উন্নয়নের ছোয়া এখনো লাগেনি। আর যারা জনসেবার জন্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন তাদেরকে কিসের ভিত্তিতে মনোনয়ন প্রদান করা হয়। কোনরকম যাচাই বাচাই ছাড়াই , দুর্নীতিবাজ এবং সন্ত্রাসীদের জনপ্রতিনিধিদের মনোনয়ন দেওয়া হয়।

 সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের বড় দুই দলেই মনোনয়ন বানিজ্য বিদ্যমান ।এই মনোনয়ন বানিজ্যে সন্ত্রাসী চাদাবাজ ভুমিদস্যুরা হয়ে যান জনপ্রতিনিধি । উনারা কখনোই জনসেবা করবে না বরং নিজ এলাকায় সস্ত্রাসী রাজত্ব কায়েম করবে। 

বর্তমানে পাপুল কিংবা আউয়ালের নামে এসেছে। খবর নিলে দেখা যাবে আরো অনেক জনপ্রতিনিধি আছেন যারা প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতিবাজ চাদাবাজ।

 ভালো জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি ও আছেন তবে তাদের আর্ত চিতকার বাতাসে মিলিয়ে যায়। এরকম অবস্থা গোটা উপমহাদেশ জুড়েই। জনগন ও এ জন্য কীছুটা হলেও দায়ী। তারা গড্ডালিকা প্রবাহের রাজনীতিকে আঁকড়ে ধরে রাখতে পছন্দ করেন। এ জন্য সচেতন ভোটার দরকার। দরকার না ভোটের।                

সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে, পেশাদার রাজনীতিবিদরা এখন জনপ্রতিনিধি হতে পারেন না। যারা সন্ত্রাসী দুর্নীতিবাজ কিংবা হাইব্রিড রাজনীতিবিদ তারাই হয়ে যান জনপ্রতিনিধি। এর ফলে দৃশ্যমান দুই একটি উন্নয়ন ছাড়া কোন ধরনের উন্নয়ন হয় না। এই উন্নয়নের কথা বলে গলা ফাটিয়ে হালাল করার অপচেষ্টা চলছে। এদের বিরুদ্ধাচারণ করলেই হয়তবা জীবন দিতে হবে না হয় জেলে যেতে হবে। 

জনগনের টাকায় বেতনভুক্ত কর্মচারী হচ্ছেন সরকারি আমলা। অনেকের কথাটা নিয়ে আপত্তি থাকতে পারে কিন্ত সরকারি আমলাদের বেতন হয় দেশের সকল নাগরিকের পকেট থেকে অর্থ নিয়ে । সৎ আমলারা ভালো কিছু করার সুযোগ কম ।কারন খারাপের ভীড়ে সৎ এবং যোগ্য আমলারা কখনই টিকতে পারে না। 

 আমলারা দুর্নীতি করেন,  জনগনের টাকা চুরি করেন, বিদেশে বিশাল বড় অট্রালিকা ক্রয় করেন। জনগনের টাকা চুরি করে একেকজন আমলা কোটিপতি হচ্ছেন। 

বর্তমানের পরিস্থিতি হচ্ছে চোরের মার বড় গলা অর্থাৎ আমলারা চুরি করলে সেটি সমস্যা নেই কিন্ত আমলাদের দুর্নীতি প্রকাশ করলেই সমস্যা। উলটো জেল জরিমানা দিয়ে দিবে দুর্নীতিবাজ আমলারা।

 

অসৎ আমলাদের বাচাতে এগিয়ে আসেন রাজনীতিবিদরা।  সাম্প্রতিক   সময়ে এমন ঘটনা সবাই দেখেছে। মূল আসামিকে শুধুমাত্র বদলি করা হলো কিন্ত যিনি আসামির দুর্নীতি ফাস করলেন তাকে জেলে থাকতে হয়েছে। শুধু কি তাই শর্তসাপেক্ষে জামিন নিতে হয়েছে। 

একবার ভাবেন তো, চোরকে চুরি করতে বাধা দিয়ে উলটো জেলে যেতে হয়। এইসব শিক্ষিত আমলাদের সততার শিক্ষা না দিলে তারা কখনোই জনকল্যানে কাজ করবে না বরং নিজের কল্যানে জনগনের টাকা চুরি করে বিদেশে বাড়ি গাড়ি করবেন। 

এই অসৎ আমলাদের দোষ দিয়েও কি হবে? কারন আমলাদের উপরে যারা বসে আছেন তারাই তাদেরকে উৎসাহিত করেন দুর্নীতি করার জন্য। 

সারাদিন উন্নয়নের গলা ফাটিয়ে কোন সুফল আসবে না। ভেতরে যে অসংগতি আছে সেগুলো বের করতে হবে। দলকানা দুর্নীতিবাজ হাইব্রিডমুক্ত জনপ্রতিনিধি দেখতে চাই। সৎ আমলাদের কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। প্রকৃত রাজনীতিবিদদের জনসেবা করার সু্যোগ দিতে হবে। দুর্নীতিবাজ সন্ত্রাসী এবং জনগনের অর্থ আত্মসাৎকারীর দিয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।
 
লেখক-সাংবাদিক ভিয়েনা অস্ট্রিয়া 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত