ছায়াসঙ্গী 

  সাহিত্য ও সংস্কৃতি ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:২০ |  আপডেট  : ১৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৪

তপন কুমার দেবনাথ
.......................

সমস্ত আনন্দগুলো বিষাদের রঙে ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে।
ভুলে যায় তার নিজস্ব ঠিকানা।
তুমি শীস দিয়ে তাকে ডেকে ফেরালে কক্ষপথে। 
বহুদিন পর বুক পকেটে থাকা ভাঙা আয়নায় 
আর একবার নিজেকে দেখে মনে হলো ভাগ্যবান।  
তুমি নিপুণ দক্ষতায় সময়ের সুঁইএ গেঁথে ফেলো অদৃষ্টের সাহসী সুতো।
তারপর সৌন্দর্যের মালা গেঁথে যাও অবলীলায়। 
কি সুন্দর গোলাপ ফোঁটাও হাতের তুড়িতেই।
আমি মোহাবিষ্ট চেয়ে থাকি সারা দিনমান। 
সমস্ত ভুল পথগুলো অলি গলি পেরিয়ে তোমার দরজায় গিয়ে কড়া নাড়ে। 
কপট সুরের ঝঙ্কারে মোহাচ্ছন্ন করে  চতুর্দিক।
তরঙ্গে ছড়িয়ে দেয় প্রলোভনের মায়াবী আবেশ।
তুমি সাবলীল ভঙ্গিতে দরজা খুলে প্রতিটি ভুলের মাথায় হাত বুলিয়ে দাও।।
ভুল পথগুলো লজ্জায় মুখ লুকায়। 
তুমি নেই বলেই জরাগ্রস্থ হয়ে পড়ে আমার আশা।
ভবিষ্যতের বুকের মধ্যে ঘনিয়ে আসে গাঢ় অন্ধকার।
কবে কোন সবুজ অরণ্যে পাশাপাশি হেঁটেছিলাম 
অথবা বসেছিলাম একখণ্ড রোদ গায়ে মেখে।
সেসব কথা এখন শুধুই স্মৃতি।
জমা রেখেছি মনের গোপন সিন্দুকে।
আমার গাঢ় অন্ধকারে ওই এক চিলতে আদুরে রোদ 
এখনো তাড়িয়ে দেয় জাগতিক হাহাকার।

বুকের মধ্যে ভালোবাসা থাকলে আর কিছু জাগতে পারে না।
রাগ ক্ষোভ অভিমান লোভ-লালসা চাপা পড়ে যায় সহসাই।
আমার চৈতন্যের আশ্রমে পরজন্মের বিশুদ্ধ ভাবনা
পাল্টে যেতে থাকে ধীরে ধীরে।
তোমার আঙ্গুলের ছোয়া মানেই নতুন সৃষ্টির প্রতিধ্বনিতে জন্মান্তর হবে এক্ষুনি।
বহু বছর একা একা হাঁটার পর যখন মনে হয় কেউ নেই কিচ্ছু নেই,
তখন রাত্রির ভুল পথে ছড়ানো যন্ত্রণা থেকে 
বেরিয়ে আসতে থাকি ভোরের প্রত্যাশায়। 
তুমি শিশির বিন্দুর মতো কোমল ছোঁয়ায় মুছে দাও যাবতীয়  কষ্ট।
সকল বিচ্ছিন্ন প্রেমের পর যে কবিতা যে  গান ফিরে আসে কাছে 
আমি তার আশ্রয়ে নিজেকে লুকোই।
তোমার অশরীরী মায়াবী মুখ কিংবা বিমুর্ত অস্তিত্ব 
আমার ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকে নিরন্তর।
আমি দেশান্তরী মেঘ তুমি আমার দিগন্তের শেষ সীমা।
তোমাকে অতিক্রম করে আর কোথায় বা যেতে পারি বলো।

 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত