ছাগল পালন করে সফলতার স্বপ্ন দেখে টেপামধুপুরের তহিরন

  সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৫ জুন ২০২২, ১৬:০৭ |  আপডেট  : ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৭

তিস্তা নদী ভাঙ্গনে ফসলি জমি বাড়ি ঘর সব হারিয়ে চরম অভাব আর দারিদ্রতা দমিয়ে রাখতে পারেনি কাউনিয়ার টেপামধুপুর ইউনিয়নের চরগনাই গ্রামের তহিরন বেগম কে। পরিশ্রম দিয়ে দারিদ্রতাকে জয় করার স্বপ্ন দেখছেন তহিরন। 

সরেজমিনে গিয়ে তহিরনের সাথে কথা বলে জানাগেছে, তিস্তা নদী ফসলি জমি বাড়ি ঘর সব ভেঙ্গে নিয়ে গেলে স্বামী সন্তান নিয়ে চরম হতাশায় পরেন তিনি। দিনমজুর স্বামীকে সাহস যুগিয়ে বলেন তাকে একটি ছাগল কিনে দিতে। এলাকার একজনের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার করে একটি ছাগল কিনেন তিনি। বুক ভরা আশা নিয়ে ছাগলটিকে পরম মমতায় লালন পালন করেন। মাত্র ৬ মাস পর ছাগলের ৩টি বাচ্চা হয়। সেই ছাগল পালন করে অল্প সময়েই জীবনের রং বদলে দিয়ে সাফল্যের মুখ দেখার স্বপ্ন তার। একটি ছাগল থেকে হয়েছেন কয়েকটি ছাগলের মালিক। ইতো মধ্যে ২টি ছাগল বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করেছেন এবং অনার্স পড়ুয়া ছেলেকে আর্থিক যোগান দিচ্ছেন। এখন তার ৬টি ছাগল ও ১টি গরু আছে। একটি ছাগলের ৩টি বাচ্চা হয়েছে। তিনি আর পেছনে ফিরে তাকাতে চান না। সরকারী সুবিধা পেলে এবং নদীর জমি জাগলে নিজ জমিতে তিনি বড় আকারে ছাগলের খামার করতে চান। এখন তিনি আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন। তিনি এখন এলাকার অনেকের কাছে একটি উদাহরণ। তার এই সফলতা দেখে খুশী গ্রামবাসীরা। তিনি ৪ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, ১ছেলে অনার্সে পড়ে। তার স্বপ্ন সত্যি হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে। নিজে লেখা পড়া জানেন না তাই ছেলেকে মানুষ করা তার আর একটি স্বপ্ন। তার স্বামী আঃ কাফি যা আয় করেন তাদিয়ে সংসার চালান আর ছাগল পালনের টাকা সন্তানের লেখাপড়ার খরচ যোগান দেন। 

টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, অন্যের কাছে হাত না পেতে তহিরনের মতো গ্রামের সকল শিক্ষিত যুবক যুবতি যদি ছাগল-গরু, হাঁস-মুরগি পালন করে তবে তারা যেমন স্বাবলম্বী হবে অন্য দিকে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দেশ উপকৃত হবে। তহিরন একটি দৃষ্টান্ত। তহিরন বলেন, একসময় আমি ভাত দেখিনি চোখে, খেয়ে না খেয়ে দিন কেটেছে। স্বামী অন্যের জমিতে মজুরী খেটে ও কর্জ করে একটি ছাগল কিনেছিলাম। সেই ছাগল থেকেই আমার আজ কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এখন আমি সবাইকে নিয়ে ভালো আছি। প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সিি তা রহমান জানান, তহিরনের বিষয়ে শুনেছি, তাকে আমরা প্রশিক্ষণ ও ভ্যাকসিন দিয়ে সহযোগিতা করবো। গ্রামের অনেক মায়েরা এখন ছাগল পালনে আগ্রহী হচ্ছেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত