চিকিৎসা ব্যবস্থার খারাপ দিকও মূল্যায়ন করতে হবে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:৪৩ |  আপডেট  : ১৭ মে ২০২৪, ১৫:৩১

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেছেন, দেশের স্বাস্থ্যখাতে যেমন কিছু ভালো দিক আছে, তেমনি কিছু কালো দিকও আছে। গত তিন/চার বছর আগে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং গত কিছুদিন আগেও যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মানইজ্জত অনেক নিচে নামিয়ে দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থার ভালো দিক আছে, সবসময় আমরা সেগুলোর মূল্যায়ন করি। তেমনি কিছু খারাপ দিকও আছে, সেই দিকটাও আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে। সেই অনুযায়ী আমাদেরকে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা আজ যেই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এসেছি, সেটিও কিছুদিন আগে নানা বিষয়ে সমালোচিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ২৭তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের চিকিৎসকরা তাদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন, সেটি তারা করতেই পারেন, এটা তাদের অধিকার। কিন্তু আমি উপলব্ধি করেছি এবং দেখেছি যে, কিছু চিকিৎসক দুপুর ১২টার আগেই তাদের প্রাইভেট চেম্বারে চলে যান। কিছুদিন আগেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন চিকিৎসক অফিস চলাকালে প্রাইভেট চেম্বারে গিয়ে অপারেশন করেছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই রোগীটি মারা যান। আমার কাছে যখন খবরটি এসেছে, আমি তখন লজ্জায় মাথা ওঠাতে পারছিলাম না। এই বিষয়গুলো আমাদেরকে কঠোরভাবে দেখতে হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অফিস টাইমে যে হাসপাতালের বাইরে যাবে, সে যেই হোক না কেন, আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। ভুল চিকিৎসা বলতে কিছু নেই, ভুল চিকিৎসা বলার অধিকার আমাদের কারও নাই। আমরা কথায় কথায় দেখি ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে চিকিৎসকদের ওপর আক্রমণ হয়।

বিএমএ সভাপতি বলেন, 'আমি শুনেছি এবং নিজেও দেখেছি... একজন চিকিৎসক রাত ২-৩টা পর্যন্ত চেম্বার করেন। এর পরদিন তিনি কীভাবে আবার সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দিতে আসেন! সেটি আমার বুঝে আসে না। আমি মনে করি এভাবে ভালো কিছু হতে পারে না।' আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা কথা বলেছি। তবে, নতুন মন্ত্রী এসেই উদ্যোগ নিয়েছেন। আশা করছি খুব শিগগিরই স্বাস্থ্যমন্ত্রী এটি দেখবেন এবং আমাদের পরামর্শ নিয়ে আইনটি পাসের ব্যবস্থা করবেন।

তিনি বলেন, করোনায় ১৩০ জন চিকিৎসক শহীদ হয়েছেন, এটা আমাদের জন্য গর্বের ব্যাপার। করোনায় আমাদের চিকিৎসকরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে কাজ করেছেন। আমাদের চিকিৎসক সমাজ যেভাবে কাজ করেছেন, সেই কারণে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা কম ছিল। এটি নিয়ে আমরা গর্ব করি। এই গর্বের জায়গাগুলো কিছু মানুষের জন্য নষ্ট হতে পারে না।

'চিকিৎসকরা গবেষণা করবেন, কিন্তু তাদের তো অসংখ্য সমস্যা আছে। চিকিৎসককে ২০-৩০ হাজার টাকায় চাকরি করে তার পরিবার ও বাবা-মায়ের জন্য ভাবতে হয়। এভাবে গবেষণা হয় না। চিকিৎসকদের সেই ব্যবস্থা করে দিন। মানসম্মত গবেষণা অবশ্যই আসবে' বলে মন্তব্য করেন তিনি।

উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের উদ্দেশ্যে আমি বলি, ভুল চিকিৎসা বলার অধিকার একমাত্র আছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি)। কোনও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যদি সেখানে কমপ্লেইন করা হয়, তারা যাচাই-বাছাই করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা এবং অবহেলাজনিত কারণে বিএমডিসি তাদেরকে শাস্তির আওতায় এনেছে। সুতরাং হুট করে আমরা ভুল চিকিৎসা বলে দেবো, সেটি কিন্তু হয় না।

 

সা/ই

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত