গজারিয়ার ডিস ব্যবসায়ী সোহেল হত্যার দায়ে ৮ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৩, ১৩:৫১ | আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৩:৩০
মুন্সীগঞ্জ গজারিয়া উপজেলা টেংগারচর গ্রামের ডিস ব্যবসায়ী সোহেল প্রধানকে হত্যা দায়ে সাত ভাইসহ আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মাসুদ করিম।রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবুর রহমান জানান, রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ জাহার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং তা অনাদায়ে তাদের আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-কামাল মোল্লা, জামাল মোল্লা, বিল্লাল মোল্লা, হারুন মোল্লা, মহসিন মোল্লা, আমির হোসেন, জাকির হোসেন ও জাবেদ হোসেন। দণ্ডপ্রাপ্ত প্রথম সাতজন আপন ভাই। রায়ে মামলার অপর আসামি ফারুক, রুবেল, জাকির হোসেন, ইমাম হোসেন, মোশারফ হোসেন মোহন, বিল্লাল খান, আনিছুর রহমান, আলী আকবর, নূরুজ্জামান, ওয়ায়েছ কুরুনী, রানা মোল্লা ও আ. গাফ্ফারকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আমির হোসেন, জাকির হোসেন ও জাবেদ হোসেন পলাতক রয়েছেন। অপর ছয় আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। রায়ের পর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
মামলা থেকে জানা গেছে, সোহেল প্রধান (২৬) মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন টেংগারচর গ্রামের ডিস লাইনের সংযোগ দেওয়ার কাজ করতেন। তার সহকারী ছিলেন একই গ্রামের জাবেদ হোসেন। আসামিরা গ্রাম্য দলাদলির রেশ ধরে পূর্ব শত্রুতার জেরে সোহেলকে খুন করার উদ্দেশ্যে ঢাকার মিরপুর-১ নম্বর গোল চত্বর থেকে ২০১৭ সালের ৫ মে রাত ৯টার দিকে অপহরণ করে। একটি সাদা গাড়িতে করে তাকে টেংগারচর কামাল মোল্লার বাড়ির সামনে গাড়ি থেকে টানাহেঁচড়া করে ভুট্টা ক্ষেতের ভেতর ও পাশের খালি জমিতে নিয়ে মারাত্মক জখম করে। সোহেল মরে গেছে ভেবে টেংগারচর থেকে আসামিরা সোহেলকে সিএনজিতে করে মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিল পথিমধ্যে টহল পুলিশের গাড়ির আওয়াজ পেয়ে তড়িঘড়ি করে সোহেলকে জামালদি ব্র্যাক অফিসের পাশে ফেলে আসামিরা দ্রুত পালিয়ে যায়। টহল পুলিশ সোহেলকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে গজারিয়া (ভবেরচর) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়া যায়। পরে পুলিশ তার পরিবারকে খবর দেয়। পরিবারের লোকজন হাসপাতালে আসলে তাদের কাছে ঘটনা বলে সোহেল।
সেখানকার ডাক্তারের পরামর্শে সোহেলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। সেখানে নেওয়ার পথে আসামিদের নাম বলে সোহেল। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সোহেল। এ ঘটনায় তার মা সুফিয়া বেগম ৭ মে গজারিয়া থানায় মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। পরে ২০১৮ সালের ১৬ অক্টোবর আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সাব-ইন্সপেক্টর সৈয়দ গোলাম সারোয়ার। ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত চার্জশিটভূক্ত ২৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত