ক্ষমতার অপব্যবহার
কাউনিয়া উপজেলা ইউএইচএন্ডএফপিও স্বাচিপ সদস্য ডাঃ লিজা ১১৫ কার্যদিবসে ৫৮দিন ছুটিতে
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:২৭ | আপডেট : ৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৬:০৭
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ সাদিকাতুল তাহিরিণ লিজা এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির লিখিত অভিযেগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হলেও তা আজও আলোর মুখ দেখেনি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দাপুটে এই কর্মকর্তা নানা অনিয়ম ও দুনীতি করলেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যাবস্থা গ্রহন করেনি। বর্তমানে তিনি রংপুর সিভিল সার্জন অফিসে ন্যাস্ত করা থাকলেও সরকারী গাড়িটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জমা না দিয়ে বীরদর্পে ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহার ও হাসপাতালে প্রত্যেকটা বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে বুধবার কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জানাগেছে গত ২৯/০৮/২৪ ইং বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ) ডাঃ এবিএম আবু হানিফ স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যেমে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্ত ডাঃ সাদিকাতুল তাহিরিণ লিজা কে পরবর্তী নিদেশ না দেয়া পর্যন্ত সাময়িক ভাবে সিভিল সার্জন অফিস রংপুরে দায়িত্ব পালনের জন্য ন্যাস্ত করা হয়। কিন্তু ওই পত্রে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা হিসেবে কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। ১২দিন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তার দায়িত্ব কেউ পালন করেনি। কেন এই গুরুত্ব পূর্ন পদ ১২দিন ফাকা রাখা হলো তা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠে। এরপর ১১/০৯/২০২৪ ইং সিভিল সার্জন রংপুর ডাঃ মোঃ মোস্তফা জামান চৌধুরী স্বাক্ষরিত পত্রে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর সরবচেয়ে জুনিয়র ডাক্তার আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ মেহেদী হাসান কে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের জন্য বলা হয়। পূর্নাঙ্গ দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএইচএন্ডএফপিও না থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আর্থিকসহ বিভিন্ন সমস্যা তৈরী হচ্ছে। জানাগেছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ সাদিকাতুল তাহিরিণ লিজা ৫আগষ্ট ২০২৩ যোগদান করার পর থেকে নানা অনিয়ম অব্যবস্থাপনা শুরু হয়। তার ব্যবহারে অতিষ্ট হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৫জন সিনিয়র ডাক্তার এবং স্থানীয় এক ব্যাক্তি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় পরিচালক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করে। সেই অভিযোগের লোক দেখান তদন্ত কমিটি করা হলেও সেই তদন্তের রিপোর্ট আলোর মুখ দেখেনি। ডাঃ তাহেরিণ লিজা (কোর্ড-১৩৩০৬৯) আওয়ামী লীগ সমর্থীত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) রংপুর জেলা কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হওয়ায়, সেই ক্ষমতার দাপটে তিনি যা খুশি তাই করেছেন। একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায় মার্চ ২০২৩ থেকে জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত ৫মাসে ১১৫ কার্য দিবসের মধ্যে তিনি ছুটি নিয়েছেন ৫৮দিন, উপস্থিত ছিলেন ৪৭দিন। কর্তৃপক্ষ এরকম একজন গুরুত্বপূর্ন কর্মকর্তাকে ৫মাসে ৫৮দিন কিভাবে ছুটি দিলেন সেটি এখন বড় প্রশ্ন। সরকারী চাকুরি বিধিতে এটা কিভাবে সম্ভব সেই প্রশ্ন অনেকের। তিনি রংপুরে সিভিল সার্জন অফিসে সংযুক্তিতে থাকলেও সরকারি গাড়িটি অফিসে জমা নাদিয়ে নিজের ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। রংপুর থেকেই হাসপাতালে প্রত্যেকটা বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেন। আওয়ামী দলী ক্ষমতার দাপটে অথবা কর্তপক্ষকে মেনেজ করে তিনি এ কাজ করে চলেছেন বলে অনেকের ধারনা। রংপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মোস্তফা জামান চৌধুরী, জানান কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ সাদিকাতুল তাহিরিণ ও প্রধান সহকারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়ম ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে অসাদাচরণের অভিযোগের বিষয়টির তদন্ত হয়েছে যা বিভাগীয় পরিচালক স্যারের কাছে জমা হয়েছে। ছুটি গ্রহন, সরকারী গাড়ি ও অনান্য বিষয় গুলো আমার জানা নেই, জেনে আপনাকে জানাব। মুঠো ফোনে ০১৭১১০৭৭৭২৯ এই সম্বরে বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ) ডাঃ এবিএম আবু হানিফ কে ফোন করলে তিনি ফোন নিসিভ করেননি। কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে ছিল, হাসপাতালে নিম্নমানের সার্জিকেল সামগ্রী ক্রয়, কনসালটেন্টদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অফিসে অনিয়মিত আসা-যাওয়া, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা ধরনের অব্যবস্থাপনা, আলট্রাসনোগ্রামের টাকা আত্মসাতের চেষ্টা, উপস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ না করে সরকারি অর্থ আত্মাসাত, কর্মস্থলে না এসে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে ভুয়া ভাউচারে তেলের বিল উত্তোলন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কথা বলে ডাক্তারদের ব্লাকমেইল করাসহ ইত্যাদি। জানা গেছে ডাঃ সাদিকাতুল তাহিরিণ ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট কাউনিয়া উপজেলা ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পরথেকেই জনসাধারন স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ইউএইচএন্ডএফপিও পদটিতে পূর্নাঙ্গ কাউকে দায়িত্ব না দেয়ায় স্বাস্থ্য সেবার মান সহ সকল ধরনের অর্থনৈতিক বিষয়গুলো সমস্যা হচ্ছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত