কাউনিয়ায় সুপারির বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা

  সারওয়ার আলম মুকুল

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:৫৬ |  আপডেট  : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:৪৬

উত্তরের জনপদ রংপুরের কাউনিয়ায় এ বছর সুপারির বাম্পার ফলন হলেও বর্তমানে বাজারদর কম থাকায় হতাশ কৃষক, গৃহস্থ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এ উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সুপারির ফলন ভালো হয়। 

সরেজমিনে উপজেলার প্রধান প্রধান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, হাট-বাজারে চলছে মজা সুপারি কেনা-বেচার ধুম। এসব বাজার থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সুপারি কিনে পাইকারি ও আড়ৎদারদের কাছে বিক্রি করছেন। এ ছাড়া এ মৌসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা এসে তাদের চাহিদামতো স্থানীয় পাইকারদের কাছ থেকে কিনে বিভিন্ন জেলায় পাঠায়। কিন্তু এ বছর গত এক সপ্তাহ থেকেই সুপারি কম দামে বিক্রি করছেন চাষি, গৃহস্থ ও ব্যবসায়ীরা। বাজারে এ বছর এক পোন (৮০টি) সুপারি ১৫০ টাকা, মানভেদে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছরের চেয়ে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কম। নিজপাড়া গ্রামের কৃষক প্রহলাদ চন্দ্র বলেন, বর্তমান বাজারে সুপারির দাম খুবই কম। এ বছরের তুলনায় গত বছর দাম ভালো ছিল। মজা সুপারি গত এক সপ্তাহ থেকেই কম দামে বিক্রি হচ্ছে। বাস স্টান্ড বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জুল হোসেন বলেন, এ বছর সুপারির ভালো ফলন হলেও গত বছরের তুলনায় বাজারে দাম কম। অপর ব্যবসায়ী হোসেন আলী জানান, বিভিন্ন গৃহস্থ বাড়ি থেকে মজা সুপারি কিনে তিনি ঢাকায় পাঠাচ্ছেন। তবে গত বছরের তুলনায় এবছর সুপারির দাম খুবই কম। ব্যবসায়ী শহিদ জানান, উৎপাদন অনুযায়ী বাজারে চাহিদা কম থাকায় এবছর সুপারির দাম কম। এ বছর সুপারির বাম্পার ফলন হলেও বাজারে দাম কম থাকায় হতাশ বিক্রেতারা। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বাদল চন্দ্র রায় জানান, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে সুপারিগাছে ফুল আসে। সেই ফুল থেকে সুপারি হয়। যা ভাদ্র, আশ্বিন ও কার্তিক মাসে পুরোপুরি পেকে যায়। ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি থেকেই বাজারে সুপারি আসতে শুরু করে। মূলত আশ্বিন ও কার্তিক মাসেই সুপারির ভরা মৌসুম। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইয়েদুল ইসলাম জানান, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এই সুপারি কিনে ৬০ শতাংশ পানিভর্তি পাত্রে ভিজিয়ে রাখেন যা মজা সুপারি পরিচিত। ৬০ শতাংশ সুপারি দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয় এবং বাকি গুলো স্থানীয় চাহিদা মিটায়। এ বছর কাঁচা ও মজা সুপারির দাম কম হওয়ায় হতাশ কৃষক, গৃহস্থ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বাড়ীর উঠান, আনাচে-কানাচে, জমির আইলে সুপারীর বাগান রয়েছে ২১০ হেক্টর জমিতে। এ জমি থেকে প্রতি বছর সুপারি উৎপাদন হয় প্রায় ৮হাজার মেট্রিক টন। সংখ্যায় যার পরিমান ১২ কোটি পোন সুপারী। তবে এবছর চাষিরা সুপারির ভাল দাম পাচ্ছে না। তাম ভাল পেলে কৃষি অর্তনীতিতে কাউনিয়ার সুপারি অবদান রাখতে পারতো। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত