কাউনিয়ায় মানস নদীতে বীজতলা দিয়ে সবুজের সমারোহ

  সারওয়ার আলম মুকুল

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪৫ |  আপডেট  : ১৬ মে ২০২৪, ১৯:১০

কাউনিয়ায় ৬টি ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে বয়ে চলা আকা বাঁকা মানাস নদীতে চলতি মৌসুমে ইরি বোরো বীজতলার সবুজের সমারোহ। যতদুর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজের গালিচা। তীব্রশীত আর কুয়াশা ভেদ করে মানাস নদীর পাশ দিয়ে হেটে গেলে সবুজ গালিচা দেখে চোখ জুরিয়ে যায়।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখাগেছে উপজেলায় আমন ধান কাটাই-মাড়াই শেষ হতেই তীব্র শীত আর শৈত্য প্রবাহকে উপেক্ষা করে বোরো চাষাবাদের প্রস্তুতি হিসেবে বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। স্থানীয় কৃষকরা তাদের আপন মহিমায় মনের মাধুরি মিশিয়ে ইরি বোরো ধান চাষের জন্য প্রায় মানাস নদী জুরেই ধানের বীজতলা তৈরী করেছে। কিন্তু রংপুরের কাউনিয়ার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। পৌষের শেষের তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হতে শুরু করেছে বিভিন্ন এলাকার ইরি-বোরোর বীজতলা। তীব্র শীতে বীজতলা নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা। কিছু এলাকায় বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে হলুদ বিবর্ণ হয়ে পড়ছে। ফলে চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কোন কোন বীজতলায় আবার চারা বের হলেও তা হলুদ ও লালচে বর্ণ ধারণ করছে। তবে বীজতলার যত্নে কৃষকরা কোন কার্পণ্য করছেন না। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বীজতলার নিবিড় পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিবছর চারা বীজ সংকট দেখাদেয়, সেই সংকট মোকাবেলায় কৃষকরা এবার মানাস নদীতে পানি না থাকায় চাহিদার চেয়ে বেশী বীজতলা তৈরী করেছে।

কৃষকরা আশা করছেন প্রাকৃতিক বড় কোন দুর্যোগ না আসলে চলতি মৌসুমে ধানের চারার কোন সংকট হবে না। টেপামধুপুর লালমসজিদ এলাকার কৃষক ইসমাইল বাবু ও মোঃ আমিন জানান, মানসে এবার খুব সহজেই বীজতলা তৈরী করা গেছে। নদীতে পানি না থাকায় এবং কাদা থাকায় তেমন কোন খরচ ছারাই বীজতলা তৈরী করা গেছে। কৃষি বিভাগ সূত্রে জনাগেছে উপজেলায় ৭ হাজার ৫৯৭ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ৩৮০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে হাইব্রীড ১১০ হেক্টর এবং উপশি ২৫৫ হেক্টর জমিেিত বীজতলা তৈরী হয়েছে, বাকি গুলো এখনও চলমান। উপজেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ৫৭০০ চাষির মাঝে কৃষি বিভাগ থেকে বিনামূল্যে উফশি ও হাইব্রীড জাতের ২০৭০০ কেজি বীজ ও ৬২০০ কেজি ডিএবি ও এমওপি রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানাজ পারভীন বলেন, চলতি ইরি-বোরো চাষ মৌসুমে উপজেলার প্রতিটি এলাকায় বীজতলা তৈরি এবং বোরো আবাদের জমি তৈরি কাজ চলছে। বীজতলার চারাগাছ যাতে সুস্থ ও সবল হয় সেজন্য কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শসহ সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। 

প্রত্যেক এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা প্রত্যক্ষভাবে এ বিষয়ে কাজ করছেন। অতিরিক্ত কুয়াশায় বীজতলা যেন নষ্ট না হয় সেজন্য পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে বলা হচ্ছে চাষিদের। 

 

সান

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত