বাম্পার ফলনের আশা

কাউনিয়ায় তিস্তার নদীর জেগে উঠা চরে ভুট্টা চাষ বেড়েছে  

  সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৬ এপ্রিল ২০২২, ১৭:৩৭ |  আপডেট  : ১১ মে ২০২৪, ০০:৩৫

অল্প খরচ আর অধিক ফলন এবং বেশী লাভের আশায় রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা নদীর জেগে উঠা চরসহ চরা ল বেষ্ঠিত গ্রাম গুলোতে ব্যাপক ভুট্টা চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে গতবছরের তুলনায় প্রায় ২৫ হেক্টর বেশী জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। ভুট্রার বাম্পার ফলনের আশা করছে চাষিরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে তিস্তা নদী বেষ্ঠিত যে সব চরে কোন ফসল হতো না সে সব চরের জমিতে এখন ভুট্টার চাষে সবুজের সমারোহ। চরের যেদিকেই তাকান যায় দিগন্ত মাঠ জুরে ভুট্রা চাষে সবুজে সবুজে ছেয়ে গেছে। মানুষের খাদ্যের পাশাপাশি মাছ, হাঁস-মুরগী ও গো-খাদ্য হিসেবে ভুট্টার ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় এর চাহিদাও বেড়েছে অনেক বেশি। ভুট্টা গাছের পাতা সুষম গো-খাদ্য এবং কান্ড জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়, ফলে একদিকে যেমন কৃষক তার গবাদি পশু পালন ও জ্বালানি চাহিদা মেটাতে পারে অপরদিকে বাজারে ভুট্রার ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষক এ ফসলে আগ্রহী হয়ে উঠছে। উপজেলার গোপিডাঙ্গা, প্রাননাথচর, নাজিরদহ চর, আরাজি হরিশ্বর, চর বিশ্বনাথ, চর আজম খাঁ, চর গনাই, চরগদাই, চর চতুরাসহ ২৯টি চরে দিগন্ত মাঠ জুড়ে ভুট্টা চাষ হয়েছে। ধান ও অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশী লাভ হওয়ায় কম খরচে অধিক মুনাফার আশায় বিকল্প ফসল হিসেবে ভুট্টা চাষে ঝুঁকছে উপজেলার কৃষকরা। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান,চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী জমিতে ভুট্রা চাষ হয়েছে। 

টেপামধুপুর ইউনিয়নের কৃষক শফিকুল জানান, ভুট্টা চাষে জমিতে পানি সেচ কম লাগে এবং ফলনও অন্য ফসলের তুলনায় বেশী হয়। প্রাননাথ চর গ্রামের ভুট্টা চাষি শাহ আলম জানান তিনি ৫ দোন জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। ফলন মোটামুটি ভাল এসেছে, সেই সাথে ভাল দাম পাওয়ার আশা প্রকাশ করছেন। একই গ্রামের কৃষক শাহ জামাল জানান তিনি এবার প্রায়  দোন জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। তার খরচ হয়েছে দোন প্রতি প্রায় ৮ হাজার টাকা। সে দোনে ৩৫ থেকে ৩৭ মন ভুট্রার ফলন আশা করছেন। বর্তমানে  ভুট্রার বাজার মূল্য ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা। তিনি আরও জানান ভুট্টার পাতা গো-খাদ্য ও গাছ রান্নায় জ্বালানীর কাজে ব্যবহার হয়। ভুট্টা চাষী ছানোর ও ফুল মিয়া জানান ভুট্টা চাষে সামান্য সমস্যা রয়েছে তা হলো মাড়াই ও বাজারজাত করন। এ ছাড়াও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও ব্যাংক ঋনের অভাব। কৃষকরা সহজ শর্তে কিস্তিতে মারাই মেশিন, কৃষি ঋণ, চাষাবাদে আধুনিক প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষন, উন্নত মানের বীজ সরবরাহ, সংরক্ষনাগার ও বিপনন ব্যাবস্থা চালুর দাবী জানান। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানাজ পারভীন জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় চাষের লক্ষ্যমাত্র ছিল ৭২৫ অর্জন হয়েছে ৭৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র হেক্টর প্রতি ৭.২৫ মেঃটঃ ধরা হয়েছে। অবহাওয়া ভাল থাকায় ফলন ভাল হবে আশা করছেন। এছাড়া কৃষকদের প্রশিক্ষন দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত