পুষ্টি চাহিদা পুরন অর্থনৈতিক উন্নয়নে অনন্য ভূমিকা রাখছেন চরের কৃষক

কাউনিয়ায় চরে মিষ্টি কুমড়া চাষে বাজিমাত

  সারওয়ার আলম মুকুল  

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৪, ১৭:৪৭ |  আপডেট  : ১৭ জুন ২০২৪, ১৩:৫৭

তিস্তার চরের বালু এখন সাদা সোনায় পরিনত হয়েছে। চরের জমিতে স্বপ্ন বোঁনেন কৃষক। কাউনিয়া উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের পাশ দিয়ে প্রবাহমান খর¯্রতা তিস্তার বুকে জেগে উঠেছে বালু ও দোআঁশ মাটিতে মিষ্টি কুমড়া সহ নানান জাতের চাষাবাদ করছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। চলতি মৌসুমে তিস্তার জেগে ওঠা চরে মিষ্টি কুমড়া চাষে বাজিমাত করেছেন চাষিরা। সরেজমিনে উপজেলার তালুকশাহবাজ, চর ঢুসমারা, চরগনাই সহ বিভিন্ন চর ঘুরে দেখাগেছে প্রতিটি চরেই মিষ্টি কুমড়াসহ চলছে বিভিন্ন রবি ফসলের চাষ। ধু-ধু বালু চরে যেখানে কোন কিছুই ফলানো সম্ভব ছিল না সেই চরে কুমড়া চাষ করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। শুরুতে মিষ্টি কুমড়া গাছের সবুজের বিস্তার পুরোচর সবুজ চাদরে ঢেকে যায় বর্তমানে তা সোনালী রূপ ধারন করেছে। শুধু তাই নয় পুরো চরেই যাতে নিরাপদ মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন করা যায় সে জন্য দেয়া হয়েছে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ও ইয়োলো স্টিক ট্রাপ। পুরো চরেই বিভিন্ন ফসলের সবুজ আর সোনালীর হাতছানি। কাক ডাকা ভোর থেকে সন্ধা পর্যন্ত চরে কাজ করছে কৃষক- কৃষানী। তাদের স্বপ্ন পূরণে তিস্তা চরের পলিযুক্ত বালু মাটি যেন সাদা সোনায় পরিনত হয়েছে। নদীতে পানি কমে যাওয়ায় পর থেকে ও নদী ভিত্তিক জীবিকা নির্বাহকারীরা চরাঞ্চলের পলিযুক্ত বালু মাটিতে চাষাবাদ করে অর্থনৈতিক আলোর মুখ দেখছে। বর্তমানে তিস্তা পারের বাসিন্দারা কুমড়া চাষ করে তাদের প্রাণে নতুন করে স্পন্দন ফিরে পেয়েছে। কুমড়া চাষের পাশাপাশি চাষ হচ্ছে বাদাম, আলু, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, কাউনসহ নানান জাতের রবি ফসল। তালুকশাহবাজ চরের কৃষক স্বাধীন, ইলিয়াস আলী, মনু, মন্ত, হাসিনা জানান, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় চরে মিষ্টি কুমড়ার ভাল ফলন হয়েছে, দামও পাচ্ছি ভাল। কাউনিয়ায় উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় রফতানি হচ্ছে। এই তিস্তা চরে আবাদ করে আমাদের নদীপারের মানুষের সংসার চলে। চাষাবাদের জন্য তেমন কোন জমি নাই, প্রতিবছর নদীতে চর জাগলে চাষাবাদ করি। চাষি স্বাধীন জানান তার ২৫ শতক জমিতে ১২ থেকে ১৫টন পর্যন্ত কুমড়া ফলেছে, বাজারে ১৫টাকা থেকে শুরু করে বর্তমানে ২৫টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। আগামীতের যেন আমাদের সরকারী ভাবে উন্নতমানের বীজ প্রদান ও উন্নত সেচ ব্যবস্থা করে দিলে এই চরে দ্বিগুন ফসল হবে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শাহনাজ পারভীন জানান, সরকারী সহায়তায় উপজেলায় চরাঞ্চলের প্রায় ৬০ একর জমিতে কুমড়া চাষ করা হলেও চাষীদের নিজের চেষ্টায় সাথী ফসল সহ কুমড়া চাষ হয়েছে অনেক বেশী। চরের ২০০জন চাষিকে কুমড়া চাষে কৃষি প্রনোদনা দেয়া হয়েছে। কৃষি বিভাগ ও উপজেলা পরিষদ থেকে কৃষকদের চরে যাতায়াতের জন্য ফ্রি নৌকা এবং চরের ফসলে সেচ দেয়ার জন্য সোলার চালিত ৩টি পাম্প ও প্রায় ১৫০০ ফিট সেচ পাইপ প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া স্বল্প সময়ের মধ্যে চরের চাষীদের বড় ধরণের কৃষি প্রণোদনাও দেয়া হবে। তিনি আরও জানান কৃষি বিভাগ চরের চাষিদের সাথে রয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চরের চাষিরা বেশী লাভবান হচ্ছে। 
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত