অধিক লাভের আশা কৃষকের

কাউনিয়ায় আলু রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ৫ হাজার ৫৫ হেক্টর

  সারওয়ার আলম মুকুল  

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:০৮ |  আপডেট  : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:৩৫

রংপুরের কাউনিয়ায় আমন ধান কাটা শেষে এখন সেই জমিতে আলু রোপণ নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করেছেন কৃষকেরা। চলছে আলু রোপণের মৌসুম। সাদা সোনা রোপনের পর অধিক লাভের স্বপ্নে বিভোর কৃষক। কৃষক ও কৃষিশ্রমিকেরা দিনভর জমিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠের পর মাঠ শুধু আলু রোপণের ধুম। এখন রোপণ হলে ৯০ দিন পর আলু তোলা হবে। 

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে ছরাঞাচলের আগাম আলুর তোলা শুরু হয়েছে। ফলে বাজারে আলূর দাম কমতে শুরু করেছে। ২দশক ধরে আলু চাষের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আছে কাউনিয়ার তিস্তার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা। দ্বিগুণ লাভের আশায় মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রান্তিক ও মাঝারি এবং বড় আলু চাষিরা। হিমাগার থেকে বীজ সংগ্রহ, জমি প্রস্তুত, সার প্রয়োগসহ বিভিন্ন কাজে দিনভর ব্যস্ত রাখছেন নিজেদের। আমন ধান কাটা ও মাড়াই শেষ করে সেই জমি এবং তিস্তার জেগে উঠা চরে আলু রোপনের ধুম পড়েছে। আলু রোপণকে ঘিরে তিস্তার চরাঞ্চলসহ মাঠজুড়ে কৃষকের মাঝে প্রণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। মাঠে কেউবা জমি তৈরি, আগাছা পরিষ্কার ও বীজ সংগ্রহ নিয়ে নিজেদের মতো ব্যস্ত সময় পার করছেন। উৎসবমুখর পরিবেশে ভাগ্য পরিবর্তনে আলু রোপনে ফসলের মাঠে কৃষখদের প্রাণচঞ্চলে মুখর হয়ে উঠেছে। গত কয়েক বছর ধরে আলুতে বেশ লাভবান হচ্ছে কৃষক। যা অন্য কোন ফসলে এত লাভের মুখ দেখতে পায় না। তাই এ ফসলকে ভাগ্য বদলের ফসলও বলা হচ্ছে। ঢুসমারা, তালুকশাহাবাজ, গনাই, হয়বত খাঁ, আজম খাঁ, বিশ্বনাথ, প্রাননাথচর, নাজিরদহসহ বিভিন্ন গ্রামের আলু চাষীরা জানান, গত বছর আলুর ভালো দাম পাওয়ায় এবারো গ্র্যান্ডউলা, ডায়মন্ড, ক্যারেজ, কার্ডিনাল, লড়া, কুপড়ি ও দেশী জাতের পাখারী, ঝাউ, ইন্দুর পানি, শিল বিলাতি আলু রোপন করছেন আবার কেউবা করবেন। তালুকশাহাবাজ গ্রামে আগাম আলু রোপন কারী কৃষক সোহরাব হোসী মুদী জানান, আগাম আলুতে ভাল ফলন হয়েছে এবং দামও ভাল পেয়েছেন, তিনি আগাম আলু তুলে আবার আলু রোপন করছেন। একই কথা জানালেন মকবুল ও আসাদুজ্জামান তোতা। বর্তমানে আলুর বাজার বেশী থাকায় অনেক চাষিই আলু চাষে আগ্রহী হয়েছে। 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি বছর আলু রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৫৫ হেক্টর। ইতোমধ্যে অর্জন হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৭৫৫ হেক্টর। গত বছর আলু চাষ করে কৃষকরা দোন প্রতি (২৫ শতক) ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা লাভের মুখ দেখায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আলু চাষ হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তারিন আকতার জানান উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া আলু চাষের জন্য খুবই উপোযাগী। প্রতি বছর এ এলাকার কৃষক আলু চাষ করে দ্বিগুণ লাভ করে থাকেন। কৃষি অফিস থেকে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। এখানকার উৎপাদিত আলু দেশের বিভিন্ন জেলায় রফতানি করা হয়। গত বছরের চেয়ে এবার বেশি জমিতে আলু চাষ হবে। অনুকূল আবহাওয়া ও বাজারদর ভালো পেলে কৃষকরা লাভবান হবে বলে আশা করছেন তিনি। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত