কষ্টার্জিত জয়ে বিশ্বকাপ শুরু ফিঞ্চবাহিনী
প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২১, ১৯:৫৩ | আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:২৩
শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকাকে অল্পতেই থামিয়ে দিয়ে আসল কাজটা সেরে রেখেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। কিন্তু পরে অজি ব্যাটারদের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছেন প্রোটিয়া বোলাররাও।
ফলে রোমাঞ্চকর লড়াই গড়ায় শেষ ওভার পর্যন্ত। তবে শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ফিঞ্চবাহিনী। আবুধাবির আবু জায়েদ স্টেডিয়ামে শনিবার সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে শুরুতে ব্যাটিং করে ৯ উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে মাত্র ১১৮ রান তুলতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে ২ বল হাতে রেখেই লক্ষ্য পেরিয়ে যায় অজিরা।
স্বল্প পুঁজি নিয়েও শুরু থেকেই অজি ব্যাটারদের চাপে রাখেন প্রোটিয়া বোলাররা। রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ। নরকিয়ার বলে কাগিসো রাবাদার হাতে ক্যাচ তুলে দেন অজি অধিনায়ক (০)। ফর্মের সঙ্গে লড়াইরত আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারও (১৪) বিদায় নেন দ্রুতই। দারুণ ফর্মে থাকা মিচেল মার্শকেও (১১) টিকতে দেননি কেশভ মহারাজ।
৩৮ রানে ৩ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়া ঘুরে দাঁড়ায় স্টিভেন স্মিথ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ব্যাটে। দুজনে মিলে যোগ করেন ৪২ রান। তবে ২ রানের ব্যবধানে স্মিথ (৩৫) ও ম্যাক্সওয়েল (১৮) বিদায় নেন। নরকিয়ার বলে মার্করামের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন স্মিথ। এরপর টি-টোয়েন্টি বর্তমান শীর্ষ বোলার তাবরেজ শামসির বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ম্যাক্সওয়েল বোল্ড হয়ে ফেরেন।
অজিরা ৮১ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর বল ও রানের ব্যবধান বাড়তেই থাকে। ১৭তম ওভারে ম্যাথু ওয়েডের দুই বাউন্ডারিসহ আসে ১১ রান। শেষ ৩ ওভারে তাদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৫ রান। প্রিটোরিয়াসের করা ১৮তম ওভারে আসে মাত্র ৭ রান। ১৯তম ওভারে নরকিয়ার বলে এক বাউন্ডারিসহ ১০ রান নেন স্টোইনিস ও ওয়েড। ফলে শেষ ওভারে দরকার ছিল মাত্র ৮ রান। প্রিটোরিয়াসের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে ডাবল ও বাউন্ডারি হাঁকিয়ে লক্ষ্যটা হাতের মুঠোয় নিয়ে আসেন স্টোইনিস। এরপর এক বল বিরতি দিয়ে হাঁকান জয়সূচক বাউন্ডারি। স্টোইনিস অপরাজিত থাকেন ১৬ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলে। ওয়েড করেছেন ১০ বলে ১৫* রান।
এর আগে টসে হেরে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারে পার্ট-টাইম স্পিনার গ্ল্যান ম্যাক্সওয়েলের বলে বিভ্রান্ত হয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা (১২)। পরের ওভারে জশ হ্যাজেলউডের বলে উইকেটরক্ষক ম্যাথু ওয়েডের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনে নামা র্যাসি ভ্যান ডার ডুসান (২)।
দ্রুত ২ উইকেট হারানোর পর রানের গতিও থমকে যায় প্রোটিয়াদের। এরপর হ্যাজেলউড নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে তুলে কুইন্টন ডি কককে (৭)। অবশ্য ভাগ্যকেও কিছুটা দোষ দিতে পারেন প্রোটিয়া বাঁহাতি ব্যাটার। কারণ স্ট্যাম্প ছেড়ে অফ-সাইডে এগিয়ে গিয়ে স্কুপ খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বল তার হাই প্যাডে লেগে উপরে উঠে যায় এবং ঘুরে গিয়ে তার স্ট্যাম্প ভেঙে দেয়। ওই ওভারে আর কোনো রানও আসেনি।
টপ অর্ডারের প্রথম ৩ উইকেট হারানোর পর এইডেন মার্করাম ও হেনরিক ক্লাসেনের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু তাদের প্রতিরোধ ভাঙেন প্যাট কামিন্স। অষ্টম ওভারে অজি ফাস্ট বোলারের বলে অফ-স্ট্যাম্পের বাইরের বল ঘুরিয়ে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে থাকা স্টিভেন স্মিথের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ক্লাসেন (১৩)।
ক্লাসেন বিদায় নেওয়ার পর ডেভিড মিলারকে নিয়ে ইনিংস মেরামতে মনোযোগ দেন মার্করাম। তবে হার্ড-হিটার মিলার ১৮ বল খেলে কোনো বাউন্ডারি ছাড়াই ১৬ রান করে বিদায় নেন। এরপর কার্যত দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস একাই টানেন মার্করাম। তাকে সঙ্গ দিতে ব্যর্থ হন ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস (১), কেশভ মহারাজ (০)।
দলকে ৯৮ রানে রেখে স্টার্কের বলে ম্যাক্সওয়েলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন মার্করাম। তবে ড্রেসিং রুমে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৬ বলে ৪০ রানের ইনিংস। ইনিংসটি তিনি ৩টি চার ও ১ ছক্কায় সাজিয়েছেন। মূলত মার্করামের বিদায়ের পর প্রোটিয়াদের সব প্রতিরোধ ভেঙে যায়। শেষদিকে কাগিসো রাবাদার অপরাজিত ২০ রানের ইনিংসে মুখ রক্ষার মতো সংগ্রহ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
বল হাতে ২টি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন হ্যাজেলউড, স্টার্ক ও জাম্পা। এছাড়া ১টি করে উইকেট গেছে মাক্সওয়েল ও কামিন্সের ঝুলিতে।
ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন অজি পেসার জশ হ্যাজেলউড।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত