কঠোর নিরাপত্তায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু 

  গ্রামনগর বার্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২২, ১০:৩৫ |  আপডেট  : ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫০

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শনিবার (২৩ এপ্রিল) থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ঈদযাত্রা শেষে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ১ মে থেকে।ভোর থেকেই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাউন্টারের দাঁড়িয়েছেন হাজারো টিকিট প্রত্যাশী।

অন্যদিকে কালোবাজারে টিকিট বিক্রি রোধে র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীসহ আনসার সদস্যরা। মোট ২৬টি কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হচ্ছে যার মধ্যে একটি নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য।

শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে কথা হয় সোহাগ নামে এক টিকিট প্রত্যাশীর সঙ্গে। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর টিকিট পেয়েছেন সোহাগ।  তিনি বলেন, সেহরি খেয়েই আমি কাউন্টারে এসেছে। আমার আগে বেশ কয়েকজন এসেছিল। আমরা সবাই বিভিন্ন কাউন্টারে দাঁড়িয়ে পড়ি। অবশেষে হাতে সাড়ে ৮টায় হাতে টিকিট পেলাম। ভালো লাগছে খুব, ঈদে আব্বু-আম্মুর ও পরিবারের সঙ্গে দেখা হবে।

কথা হয় শাখাওয়াত হোসেন নামে এক টিকিট প্রত্যাশীর সঙ্গে। তিনি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। প্রতিবারের মতো এবারও পরিবারের সঙ্গে গ্রামের বাড়ি খুলনায় ঈদ করবেন। আগামী ২৭ এপ্রিল ঢাকা থেকে খুলনার একটি প্রথম শ্রেণির টিকিট নিতে চান তিনি। শাখাওয়াত বলেন, ভেবেছিলাম ঈদ যাত্রার প্রথম দিন ২৭ এপ্রিলের টিকিট ভালোভাবেই পেয়ে যাবো। কিন্তু আমার মতো আরও অনেকেই ভোরে এসে কাউন্টারে অপেক্ষা করছেন।

একই অনুভূতি আবু সালে নামে অপর একজনের। তিনিও সেহরি খেয়ে খিলগাঁও থেকে কমলাপুর চলে এসেছেন টিকিট নিতে। লাইনে তৃতীয় নম্বর ছিলেন তিনি। সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের দুইটি টিকিট পেয়েছেন। তিনি বলেন, টিকিট হাতে পাওয়ার পর সব ক্লান্তি দূর হয়েছে।

এদিন ভোর থেকে ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রার আগাম টিকিট পেতে যারা এসেছেন তাদের বড় অংশই শিক্ষার্থী। সবাই দীর্ঘ লাইন ধরে অপেক্ষা করছেন। অপেক্ষারত মানুষের বেশির ভাগই সেহরি করেই চলে এসেছেন কাউন্টারে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, ক্যাম্পাস আগেই ছুটি দিয়েছে তবে একটা পার্টটাইম জব করায় দেরিতে বাড়ি ফিরছি। আজ টিকিট প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন হলেও টিকিট পাবো বলে আশা করছি। আমি সেহরি খেয়েই চলে এসেছি, ঘুমিয়ে গেলে হয়তো আর পাবো না এজন্যই। কষ্ট যা হবার আজ হোক যাত্রা যেন ভালো হয়।

অগ্রিম টিকিট বিক্রি বিষয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, ঈদযাত্রায় অগ্রিম টিকিট বিক্রির যাবতীয় প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করেছি। আমাদের কাউন্টারের পাশাপাশি অনলাইনে ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি হচ্ছে। সকাল ৮টা টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। যতক্ষণ টিকিট থাকবে যাত্রীরা টিকিট পাবেন। যাত্রীরা যেন নির্বিঘ্নে টিকিট পেতে পারেন, এ চেষ্টা থাকবে আমাদের পক্ষ থেকে।

জানা গেছে, ঈদের সম্ভাব্য দিন আগামী ৩ মে ধরে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে আজ শনিবার। সে হিসেবে ২৩ এপ্রিল দেওয়া হবে ২৮ এপ্রিলের টিকিট, ২৪ এপ্রিল দেওয়া হবে ২৯ এপ্রিলের টিকিট, ২৫ এপ্রিল দেওয়া হবে ৩০ এপ্রিলের টিকিট, ২৬ ও ২৭ এপ্রিল দেওয়া হবে ১ মে'র টিকিট। আর ৩ মে ঈদ হলে ২৮ এপ্রিল বিক্রি করা হবে ২ মে’র ট্রেনের টিকিট।

এবারের ঈদযাত্রা সুবিধার্থে ৬ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাত্রীর চাপ কমানোর লক্ষ্যে ঢাকা শহরের ৫টি কেন্দ্র টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। স্থানগুলো হলো- কমলাপুর, ঢাকা বিমানবন্দর, তেজগাঁও, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ও ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন)। ঈদের পর ফিরতি যাত্রা শুরু হবে আগামী ৫ মে থেকে। আগামী ৫ মে'র টিকিট বিক্রি হবে ১ মে।  

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত