এলএসডি উদ্ধারের ঘটনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থী রিমান্ডে
প্রকাশ: ৩০ মে ২০২১, ১৪:৪৩ | আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৫
রাজধানী থেকে এলএসডি (লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইথ্যালামাইড) নামক মাদক উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত ভার্চ্যুয়াল শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুর রহমান।
তিন শিক্ষার্থী হলেন সাদমান সাকিব ওরফে রুপল (২৫), অসহাব ওয়াদুদ ওরফে তূর্য (২২) ও আদিব আশরাফ (২৩)। তাঁরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসনে (বিবিএ) পড়েন।
এলএসডি বেচাকেনায় জড়িত অভিযোগে গত বুধবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি ও লালমাটিয়া থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। তাঁদের হেফাজত থেকে ২০০ ব্লট এলএসডি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তিনজনের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে ডিবি।
আদালত সূত্র বলছে, এলএসডি উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার তিনজনকে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। ভার্চ্যুয়াল শুনানি নিয়ে আদালত প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।
ডিবি বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র হাফিজুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে তারা এলএসডি মাদকের সন্ধান পায়।
ডিবি জানায়, নেদারল্যান্ডস থেকে এলএসডি মাদক আমদানি করা হয়। অনলাইনে আর্থিক লেনদেনের আন্তর্জাতিক মাধ্যম পেপ্যালের মাধ্যমে টাকার লেনদেন হয়। তিনজনের কাছ থেকে যে এলএসডি জব্দ করা হয়েছে, তার প্রতিটি তাঁরা তিন হাজার টাকা মূল্যে বিক্রি করছিলেন।
ডিবি সূত্র জানায়, ১৫ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাফিজুরকে কার্জন হল এলাকায় তাঁর তিন বন্ধু এলএসডি সেবন করান। এর প্রতিক্রিয়া শুরু হলে তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে যান। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এক ডাব বিক্রেতার ভ্যানে রাখা দা নিয়ে তিনি নিজের গলায় আঘাত করেন। তিনি পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর আট দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে তাঁর লাশ অজ্ঞাতনামা হিসেবে পড়ে ছিল। পরে তাঁর ভাই লাশ শনাক্ত করেন।
হাফিজুরের আত্মহত্যার বিষয়ে ডিবির রমনা বিভাগ ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তকালে ডিবি হাফিজুরের কয়েকজন বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ও গোয়েন্দা তথ্যে এলএসডির তথ্য জানতে পারে। তাঁদের তথ্যের ভিত্তিতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ফার্মাসিউটিক্যাল এনসাইক্লোপিডিয়া ড্রাগস ডটকম থেকে জানা যায়, লাইসার্জিক অ্যাসিড থেকে তৈরি করা হয় এলএসডি। এই অ্যাসিড বিভিন্ন দানাদার শস্যে থাকা এরগোট ছত্রাকে পাওয়া যায়। ১৯৩৮ সালে বিভিন্ন উপাদানের মিশ্রণে প্রথম এলএসডি তৈরি হয়। এটি এতই শক্তিশালী যে এর ডোজগুলো সাধারণত মাইক্রোগ্রাম হিসেবে নেওয়া হয়। এটি মনের ওপর প্রভাব ফেলে। কখনো কখনো এর প্রভাবে ভীতিকর অনুভূতি তৈরি হয়।
এলএসডি নানাভাবে বাজারজাত করা হয়। যেমন ব্লটার পেপার বা নকশা করা বিশেষ কাগজে এলএসডি মেশানো হয়। এভাবেই এলএসডি বেশি সহজলভ্য। এ ছাড়া ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল আকারে এবং তরল বা কিউব আকারেও পাওয়া যায়।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত