গ্রাহক শুন্যের কোঠায়, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
একজন স্টাফ দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে কাউনিয়া বিটিসিএল অফিস
প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৫৬ | আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৪
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। রংপুরের কাউনিয়ায় প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক সংখ্যা কমে প্রায় শুন্যের কোঠায়। দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থায় বিটিসিএল অফিস। বিভিন্ন সমস্যা ও জনবল সংকটে জর্জরিত অফিসটিতে সেবা থেকে বি ত গ্রাহকরা। উপজেলা বিটিসিএল অফিস সূত্রে জানা যায়, এ·চেঞ্জটি ১৯৮৪ সালে স্থাপিত হয়ে ২০০৬ সালে এ উপজেলায় বিটিসিএলকে ডিজিটালে রূপান্তরিত করা হয়।
কাউনিয়ায় ৫০০টি টেলিফোন সংযোগের সক্ষমতা সম্পন্ন এ·চেঞ্জটি প্রথমে ২৭৫টি লাইন সংযোগ দেয়া হয়। পরে বকেয়া বিল ও গ্রাহকের অনীহার কারণে বর্তমান সংযোগ আছে ৬২টি। জনবল সংকট ও ক্যাবল গুলো ¶তিগ্রস্ত হওয়ায় বর্তমানে সরকারি ২২টি ও বেসরকারি ৪টি টেলিফোন এবং ৪টি ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। ৩৬টি বিচ্ছিন্ন ও অব্যবহিত অবস্থায় পড়ে আছে অনেক দিন ধরে। যায়গায় যায়গায় খুটিঁ পরে আছে দীর্ঘদিন থেকে। সংযোগ নেই কিন্তু নিয়মিত বিল আসে বাকি গুলোর।
কয়েকজন গ্রাহক জানান, দীর্ঘদিন থেকে তাদের টেলিফোন লাইন অচল। বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারেটর বন্ধ থাকায় ফোন চলে না। টেলিফোন ব্যবহার না হলেও মিনিমাম বিল ঠিকই গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। সেবা না পাওয়ায় সরকারী অফিস গুলোতেও এখন আর টেলিফোন ব্যবহার হয় না। সরেজমিনে কাউনিয়া টেলিফোন একচেঞ্জ অফিসে গিয়ে দেখা গেছে কোন জনবল নেই। একজন লাইনম্যান দিয়ে চলছে অফিস, ভবনটিতে এখন পুরাতন ভবনের মতো পড়ে আছে। অনেকেই সেবা বি ত হয়ে রাগ করে টিএন্ডটি ফোন হস্তান্তর করে দিয়েছে। এক সময়ে টিএন্ডটির টেলিফোন পাওয়া ছিল সোনার হরিণ। টেলিফোন সংযোগ পেতে মাসের পর মাস ঘুরে নানা ভাবে তদবির করতে হতো। তদবির করে ডিমান্ড নোট পেয়ে টাকা জমা দিলেও কাজ হতো না। অনুমোদন পেলে লাইনম্যাানকে বকশিস ও কোন কোন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তারের টাকাও নিজেকেই দিতে হতো। ব্রিটিশ ভারতে ১৮৫৩ সালে ডাক ও তার বিভাগের আওতায় ‘টেলিগ্রাফ’ শাখা চালু হয়। পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালে ‘পাকিস্তান টেলিগ্রাফ অ্যান্ড টেলিফোন বিভাগ’ নামে আলাদা সরকারি বিভাগ হিসেবে পুনর্গঠিত হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘বাংলাদেশ টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন বিভাগ’ হয়। ১৯৭৫ সালে অধ্যাদেশ বলে এটি ‘টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন বোর্ড’ নামে একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। ১৯৭৯ সালে আরেক অধ্যাদেশে এটি ‘বাংলাদেশ টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন বোর্ড’ (বিটিটিবি) নামে সরকারি বোর্ডে রূপান্তারিত হয়। ২০০৮ সালের ১ জুলাই বিটিটিবিকে বিটিসিএলে রূপান্তর করা হয়। নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিদুল হক জানান, মোবাইল আসায় এখন আর ফোন ব্যবহার করা হয় না। এছারা টেলিফোনের সেবাও ভাল পাওয়া যায় না। এ ব্যাপারে রংপুর বিভাগীয় বিবিটিসিএলের দায়িত্বে থাকা কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক মোঃ রুহুল আমিন বলেন, আগে একটি এ·চেঞ্জ এ ১জন অফিস সহায়ক ও ১জন লাইনম্যানছিল। পরে বিটিটিবি’র পোস্ট বাতিল করায় এখন জনবল সংকটের করনে ১টি এ·চেঞ্জ এ একজন করে জুনিয়র লাইনম্যান কাজ করে। কোন যায়গায় একজনও নেই। আমাদের দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা ৫জি বাস্তবায়নের কাজ চলমান রয়েছে। কাজ হয়েগেলে জনবল সংকট ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট (অটিক্যাল ফাইবার) সাভাবিক হবে।
কাউনিয়ার বিটিসিএল এর ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বিকল টেলিফোন সংযোগ সচল করতে ও বিচ্ছিন্ন সংযোগ মেরামতের কাজ খুব তারাতারি শুরু হবে বলে আশা করছি। কাউনিয়ায় একমাত্র একচেঞ্জ অফিস ভবনটিতে রাজস্ব বৃদ্ধি করতে হলে সেবার মান বৃদ্ধির দাবী গ্রহকদের।
ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত