উত্তর গাজায় ভারী যুদ্ধ শেষ, দক্ষিণেও শেষ হবে শিগগির : ইসরায়েল
প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৪৩ | আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪১
গাজা উপত্যকার উত্তরাংশে ইসরায়েলি স্থল বাহিনীর অভিযানের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে শেষ হয়েছে এবং দক্ষিণেও শিগগিরই তা শেষ হবে। সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালেন্ত।
বিবৃতিতে ইয়োভ গ্যালেন্ত বলেন, ‘তিন মাস আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান, শিন বেটের (অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনী) প্রধান, কয়েকজন জেষ্ঠ্য সেনা কর্মকর্তা এবং আমি গাজায় অভিযান বিষয়ক একটি পরিকল্পনা (যুদ্ধকালীন) মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করেছিলাম। সে সময় আমরা বলেছিলাম, তিন মাসের মধ্যে অভিযানের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় শেষ হবে।’ ‘আমরা সেই লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জন করতে পারিনি, তবে উত্তর গাজায় অভিযানের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় বা ভারী যুদ্ধ শেষ হয়েছে। দক্ষিণ গাজা বা খান ইউনিসেও শিগগিরই তা শেষ হবে। দুই এলাকায় যুদ্ধের এই পর্ব শেষ হওয়ার পর পরবর্তী পর্বে প্রবেশ করব আমরা।’
অভিযানের ‘গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে— ব্যাখ্যা করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘উত্তর গাজায় হামাসের যত সামরিক স্থাপনা ছিল— সব মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন সেখানে হামাসের গুপ্ত আস্তানাগুলো এখন ধ্বংস করা হচ্ছে।’ বিবৃতিতে ইয়োভ গ্যালেন্ত বলেন, হামাসের সমরাস্ত্র তৈরির কারখানাগুলো ছিল গাজার মধ্যাঞ্চলে। সেগুলো বর্তমানে ধ্বংস করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ইয়াহিয়া সিনওয়ারসহ হামাসের শীর্ষ নেতৃত্বের যে অংশটি গাজায় বসবাস করত— তারা বর্তমানে দক্ষিণ গাজায় আত্মগোপনে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গাজার মধ্যাঞ্চলে হামাসের সামরিক কারখানাগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। এসব কারখানায় রকেট, আইইডি, বিস্ফোরক ও অন্যান্য সমরাস্ত্র প্রস্তুত করা হতো। দক্ষিণ গাজায় আরও কিছুদিন নিবিড় ও ভারী অভিযান চলবে। কারণ সাপের সবগুলো মাথা, অর্থাৎ হামাসের শীর্ষ নেতারা সেখানেই আত্মগোপন করে আছে।’
১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এতজন মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরায়েল। অভূতপূর্ব সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও। ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার বোমাবর্ষণে গত ১০০ দিনে গাজায় নিহত হয়েছেন ২৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার এবং ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণে ধসে যাওয়া বিভিন্ন ভবনের ধ্বংস্তূপের নীচে এখন ও চাপা পড়ে আছেন অন্তত কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি।গাজা উপত্যকার প্রায় সব হাসপাতাল ধ্বংস হয়ে গেছে। উপত্যকায় বসবাসরত ২০ লাখ ফিলিস্তিনির অধিকাংশই ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণ থেকে বাঁচতে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে শরণার্থী শিবির এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে উঠেছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূলের আগ পর্যন্ত সেখানে অভিযান চলবে। সোমবারের বিবৃতিতে গ্যালেন্ত প্রধানমন্ত্রীর এই অবস্থানকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘আমি আবারও বলতে চাই যে এই যুদ্ধের গাজা থেকে থেকে আর কোনো হামলার হুমকি আসবে না। সামরিক শক্তি হিসেবে হামাস আর গাজা উপত্যকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে না এবং ইসরায়েলের নাগরিকদের রক্ষার জন্য যা যা করা দরকার, সেসব করার ক্ষমতা আইডিএফকে দেওয়া হবে। এটা হয়তো লম্বা সময় নেবে, কিন্তু এই যুদ্ধ শেষে একটি ফলাফলই আসবে, আর তা হলো ইসরায়েলের সম্পূর্ণ বিজয়।’
সূত্র : টাইমস অব ইসরায়েল
সা/ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত