ইসরায়েলকে সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব বাতিল হল যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টে

  আন্তর্জাতিক অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:০৯ |  আপডেট  : ১৭ মে ২০২৪, ১৮:২০

১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিশ্বের একমাত্র এই ইহুদি রাষ্ট্রটির সবচেয়ে বিশ্বস্ত মিত্রর ভূমিকা পালন করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের পক্ষে কোনো বিল প্রতিনিধি পরিষদে বাতিল হয়েছে— এমন কোনো ঘটনা নিকট ইতিহাসে নেই। কিন্তু ইসরায়েলকে ১ হাজার ৭৬০ কোটি ডলার আর্থিক সহায়তা প্রদান সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব বাতিল হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস)। মঙ্গলবার ঘটেছে এই বিরল ঘটনা।

এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবারের অধিবেশনে নিম্নকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল রিপাবলিক পার্টি এ সংক্রান্ত একটি বিল উত্থাপনের পর প্রতিনিধি পরিষদের ২৫০ জন সদস্য সেটি বিপেক্ষ ভোট দেন এবং পক্ষে ভোট দেন ১৮০ জন সদস্য। পক্ষে-বিপক্ষে ভোট দেওয়া এমপিদের মধ্যে ডেমোক্রেটিক-রিপাবলিক উভয় দলের প্রতিনিধি রয়েছেন।

ভোটের পর প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন বলেছেন, এখন এই বিল আনার সঠিক সময় নয়। ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা এবং প্রতিনিধি পরিষদের এমপি রোজা ডিলাউরো এক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, এই মুহুর্তে শুধু ইসরায়েলকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হলে তা যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মিত্র-অংশীদারদের কাছে দেশটির নেতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরবে বলে মনে করেন তিনি।

তিনি রয়টার্সকে বলেন,  ‘এটা ঠিক যে আমাদের একজন গুরুত্বপূর্ণ মিত্র নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম করছে, কিন্তু এও সত্য যে আমাদের অন্যান্য মিত্র-অংশীদার এবং শত্রুরা এই মুহূর্তে আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে’ ।

তবে রিপাবলিকান পার্টির এমপি কেন ক্যালভার্ট বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিন বাহিনীর সবচেয়ে নিকটতম মিত্রদের মধ্যে ইসরায়েল অন্যতম এবং আমরা মনে করি, তাদের প্রয়োজনের সময় আমাদের পাশে থাকা উচিত।’

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন মানুষকে হত্যার পাশাপাশি ২৪০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে ধরেও নিয়ে যায়। অভূতপূর্ব সেই হামলার পর সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। চার মাস ধরে চলমান সেই অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ২৭ হাজারেরও বেশি মানুষ, আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৬৮ হাজার। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর গোলায় বাড়িঘর হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন আরও লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, ও মিসরের নিরলস চেষ্টায় গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ দিনের অস্থায়ী বিরতি চুক্তি হয়েছিল হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে। সেই ৭ দিনে নিজেদের কব্জায় থাকায় জিম্মিদের মধ্যে ১০৮ জনকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। পাল্টায় ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দেড়শ’রও বেশি মানুষকে মুক্তি দিয়েছিল ইসরায়েলও। হামাসের কব্জায় এখনও ১৩২ জন জিম্মি রয়েছে। তাদের ফিরে পেতে ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু করেছেন জিম্মিদের স্বজনরা। ইসরায়েলের সাধারণ জনগণের একাংশও যোগ দিয়েছেন আন্দোলন কর্মসূচীতে।

 

সূত্র : রয়টার্স

সা/ই

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত